শাবির ছাত্রলীগের অপহৃত দুই নেতা-কর্মী উদ্ধার, আটক ২
বার্তা ডেক্স: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের অপহৃত দুই নেতা-কর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা হলেন শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সজিবুর রহমান ও কর্মী তারেক হালিমী মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. অকিল উদ্দিন আহম্মদ করে জানান, অপহৃতদের উদ্ধারের পাশাপাশি দুই অপহরণকারীকে আটক করা হয়েছে। ওসি অকিল উদ্দিন বলেন, সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র নিখোঁজের ঘটনায় একটি জিডি করা হয়। এর প্রেক্ষিতে আমরা তাদেরকে উদ্ধার করি। তবে এ বিষয়টি কোতোয়ালি থানার আওতাধীন হওয়ায় তাদেরকে ওই থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিকে আজ বিকেলে সজিবুর রহমান বাদী হয়ে অপহরণকারী অভ্র কুমার দাস ও মুন্না কোরায়েশির বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন বলে নিশ্চিত করেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার। সোমবার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ইমরান আহমেদ শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা-কর্মী নিখোঁজের ঘটনায় জালালাবাদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
শাবিপ্রবি ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে সজীব ও তারেক বাসায় যায়। কিছুক্ষণ পর বাসায় রুমে ঢুকে পিস্তল দিয়ে ভয় দেখিয়ে তাদের সিএনজিতে করে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে অপহরণকারীদের একজন সজীবকে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম তারেক ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান খানের বিরুদ্ধে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। এছাড়া ভয় দেখিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে তাদের বিরুদ্ধাচরণ করতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে সজীবকে অপহরণকারীরা দক্ষিণ সুরমার খোজারখলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কাছে নিয়ে যায়। তারা সজীবের ফোন, মানিব্যাগ রেখে টিকিট কেটে নরসিংদীর বাসে তুলে দেয়। সিলেট না ছাড়লে তার প্রাণনাশের আশঙ্কা আছে বলে হুমকি প্রদান করে বলেও জানা যায়। পরে সজীব সুরমা বাইপাসের কাছে বাস থেকে নেমে সিএনজি ড্রাইভারের মাধ্যমে থানায় ফোন দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে সজীবের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পুলিশ জানতে পারে তারেক হালিমী অপহরণকারীদের কাছে জিম্মি রয়েছে। খোঁজখবর নিয়ে রাতেই তারেক হালিমীকে উদ্ধার করে পুলিশ। শাবি ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রুহুল আমিন বলেন, আমরা ঘটনাটি জানার পর প্রশাসনের শরণাপন্ন হয়েছি। সজীব নিজেই মুক্ত হয়ে যোগাযোগ করেছে। আর তারেক হালিমীকে পুলিশ উদ্ধার করেছে। আমি মনে করি এ ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করছে এবং যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে তাদের সবাইকে চিহ্নিত করে তাদের মূল উৎপাটন করা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আবু হেনা পহিল বলেন, এ ঘটনায় আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আশা করি অপহরণকারী ও এর সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে তাদেরকে আইনের আওতায় নেয়া হবে। উল্লেখ্য, উদ্ধারকৃত সজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খানের অনুসারী এবং তারেক হালিমী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রুহুল আমিনের অনুসারী।