ফয়সল আহমদ রুহেল : অধ্যক্ষ ইদ্রিস আলী ‘বীরপ্রতিক’। আদর্শ শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি ও বর্ষিয়ান রাজনীবিদ। শিক্ষকতা মহান পেশায় নিজেকে সম্মান ও শ্রদ্ধার বেদিতে আসীন করতে শিক্ষকতা পেশায় নাম লেখান। তেমনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে নিজের বীরত্ব গাথা ইতিহাস তৈরী করেন। যুদ্ধকালে বিভিন্ন অপারেশনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে “বীর প্রতীক” খেতাব অর্জন করেন। এক সময় তিনি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। তিনি দোয়ারাবাজার উপজেলার বড়খাল বহুমুখী স্কুল ও কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
জন্মস্থান : বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মো. ইদ্রিস আলী বীর প্রতীক ১৯৫২ সালের ৫ মে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গনকিরপার (ঢোলনা) গ্রামের এক মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আলহাজ্ব মো. ইসমাইল ও মাতা মোছা. জমিরা খাতুন। মো. ইদ্রিস আলী ৪ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে সবার বড়।
বংশ পরিচয় : বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মো. ইদ্রিস আলী বীর প্রতীক এর মাতা মোছা. জমিরা খাতুন (কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া গ্রামের মৃত রুস্তম আলীর কন্যা), পিতা. আলহাজ্ব মো. ইসমাইল (কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাগইগ্রাম বড়বাড়ির মৃত মো. কামুগাজীর তরুণ জ্যেষ্ঠ পুত্র ভাগ্যান্বেষণে অবিভক্ত ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই শহরে পাড়ি জমান, বসতি স্থাপন করেন, পিতামাতা ভাইবোন সকলকে নিয়ে আসেন, ১৯৪৭ এ দেশ ভাগের পর ১৯৪৮ সনে পুরো একান্নবর্তী বড় এই পরিবারের জীবিত সকলকে নিয়ে খোয়াই থেকে বিনিময়ের মাধ্যমে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে এসে বসতি স্থাপন)।
শিক্ষা জীবন :প্রাথমিক শিক্ষা – মো. ইদ্রিস আলী প্রথম শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত – গাদিশাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডাকঘর ও ইউনিয়ন – গাজীপুর, উপজেলা – চুনারুঘাট, জেলা – হবিগঞ্জ। ১৯৫৯ সনের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পিতামাতার সঙ্গে বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়ন ও ডাকঘরের অন্তর্গত বড়খাল গ্রামে বসতি স্থাপন। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণি – জাহাঙ্গীরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডাকঘর ও ইউনিয়ন – বাংলাবাজার, উপজেলা – দোয়ারাবাজার, জেলা – সুনামগঞ্জ।
মাধ্যমিক শিক্ষা – ছাতক, সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৪ সনের জুনিয়র বৃত্তি প্রাপ্ত এবং ১৯৬৭ সনে এসএসসি পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৫ সনে “ফার্স্ট এইড” প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত।
(গ) উচ্চ শিক্ষা – ১৯৬৭-৬৮ সনে সিলেট সরকারি কমার্শিয়াল ইন্সটিটিউটে অধ্যয়নের পর ১৯৬৮-৬৯ সনে সিলেট মদন মোহন কলেজে ভর্তি হয়ে ১৯৭০ সনে দ্বিতীয় বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৯৭৩ সনে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ১৯৭৮ সনে উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণিতে গবেষণা সহ বি এড ডিগ্রি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ময়মনসিংহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ১৯৯৩ সনে প্রথম শ্রেণিতে (একাদশতম) এম এ ইন – এডুকেশন ডিগ্রি (গবেষণা সহ) অর্জন। পরবর্তীতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ঢাকা কলেজ থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসাবে ১৯৯৫ সনে ইংরেজি বিষয়ে এম এ প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় কৃতকার্য হন।
কর্মজীবন : মো. ইদ্রিস আলী ১৯৭০ সনে এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের পর স্বগ্রামে দানবীর হাজী মফিজ আলী সাহেবের (ততকালীন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান) দানকৃত ভূমিতে এলাকাবাসীর দান ও চাঁদা সংগ্রহ করে বড়খাল জুনিয়র হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা এবং দুইজন সাথী সহ অবৈতনিক শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবনের শুরু করেন। ১৯৭৩ সনে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর বড়খাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভ, ১৯৭৩-৭৪ সন থেকে এমপিও প্রাপ্তি, ১৯৭৪ থেকে হাইস্কুলে উন্নীতকরণ, ১৯৭৫ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ চালু এবং ১৯৮২ থেকে বাণিজ্য বিভাগ চালু করে বড়খাল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নীতকরণ। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সনে কলেজ শাখা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ লাভ ও ১৯৯৯ সনে কলেজ শাখার এমপিও প্রাপ্তি।
কৃতিত্ব : মো. ইদ্রিস আলী ১৯৯৭ সনে জাতীয় পর্যায়ে “শ্রেষ্ঠ শিক্ষক” হিসাবে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত হন। ১৯৮২ সনে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষকগণের ইংরেজি বিষয়ের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন। ইউ কে বাংলাদেশ এডুকেশন ট্রাষ্ট (UKBET) ও বৃটিশ কাউন্সিলের যৌথ ব্যবস্থাপনায় ইংরেজি বিষয়ের সুপার টিচার প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও বিভাগ ব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি বিষয় শিক্ষকগণের ওয়ার্কশপে যোগদান করেন। ২০০৬ সনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এফ এস এস এ পি প্রকল্পের ইংরেজি বিষয়ের প্রশিক্ষক হিসাবে মোবাইল ট্রেনিং রিসোর্স টিম লিডারের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০-১১ সনে সিলেট সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ইংরেজি বিষয়ের প্রশিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন। ৪২ বছর ২ মাস ১০ দিন শিক্ষকতার পর ২০১২ সনের ০৪ মে তারিখে অধ্যক্ষের পদ থেকে অবসর গ্রহণ। বড়খাল বহুমুখী স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এযাবৎ ৮ জন বি সি এস ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন, এছাড়াও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে একজন, সিলেট এইডেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক, সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, এমনি বহু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অনেকেই সাফল্যের সাথে পালন করে চলেছেন। শিক্ষকতা পেশায় থাকাকালীন সময়ে এস এস সি পরীক্ষার কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ইংরেজি ১ম পত্রের পরীক্ষক, সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ইংরেজি ১ম পত্রের প্রধান পরীক্ষক ও দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের ইংরেজি ১ম পত্রের প্রশ্নপত্র মডারেটর হিসাবে দায়িত্ব পালন। ১৯৯২ ও ১৯৯৪ সনে শিক্ষক আন্দোলন কালে সিলেট বিভাগের সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দীর্ঘদিন যাবত কার্য সম্পাদন।
রাজনীতি : মো. ইদ্রিস আলী ১৯৭০ খ্রীস্টাব্দের আওয়ামী লীগ মনোনীত জাতীয় পরিষদ সদস্য পদপ্রার্থী বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্থ সহচর এডভোকেট আবদুল হক এম এন এ এবং প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য পদপ্রার্থী জনাব সামসু মিয়া চৌধুরীর নির্বাচনে একনিষ্ঠ কর্মী হিসাবে কাজ করেন। ১৯৯৭ সনে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কমিটি কর্তৃক উপজেলা শাখার আহবায়ক নিযুক্ত করা হয়। ২০০০ সনে মাননীয় সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়কের দায়িত্ব প্রদান করেন। ২০০৬ সনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সুনামগঞ্জ জেলা শাখা কর্তৃক তৃতীয় বার আহবায়ক হিসাবে মনোনীত করা হয়। ২০২১সনে সুনামগঞ্জ জেলা কমিটি উপজেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক হিসাবে আবারও দায়িত্ব প্রদান করেন। অদ্যাবধি আহবায়কের দায়িত্ব পালনরত। প্রিয় দলের সতীর্থ নেতাকর্মীগণসহ এলাকাবাসী ২০১৪ সনে দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটাধিক্যে নির্বাচিত করেন। ২০১৫ সনে সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনোনীত।
মুক্তিযুদ্ধ : ১৯৭১ সনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রকণ্ঠের আহবানে সাড়া দিয়ে মেহেরপুরের আম্রকাননে গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় এম এন এ এডভোকেট আবদুল হক সাহেবের নির্দেশনায় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের জোয়াই হিলে স্থাপিত “ইকো ওয়ান” ট্রেনিং সেন্টারে প্রথম ব্যাচে প্রশিক্ষণ নিয়ে ৫ নং সেক্টরের সেলা (ছাতক) সাব-সেক্টরে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ এবং কোম্পানি কমান্ডার (ইদ্রিস কোম্পানি) হিসেবে নেতৃত্ব দান। যুদ্ধকালে গেরিলা তৎপরতা, গ্যাস পাইপলাইন ডেমোলেশন, গুরুত্বপূর্ণ ছাতক অপারেশন সহ বিভিন্ন অপারেশনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে “বীর প্রতীক” খেতাব অর্জন। একাত্তরের ১৯ ডিসেম্বর সিলেট থেকে ছাতক আসার সময় টুকের বাজারের কাছাকাছি স্থানে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় এম এন এ হক সাহেব শাহাদাৎ বরণ করেন এবং তাঁর সাথী হিসাবে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ২ মাস চিকিৎসার পর বাড়ি ফেরা। স্বগ্রামে নবপ্রতিষ্ঠিত সেই স্কুলে অবৈতনিক শিক্ষকতায় আবারও যোগদান। পাঁচ পয়েন্ট ধারী বীর মুক্তিযোদ্ধার বি সি এস ক্যাডারভুক্তির সুবর্ণ সুযোগের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে এলাকায় শিক্ষার আলো বিতরণের মহান দায়িত্ব পালন।
অন্যান্য : মো. ইদ্রিস আলী বাংলাদেশ স্কাউটস এর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে শিক্ষকতার শেষ দিন পর্যন্ত উপজেলা স্কাউটস কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন। এলাকায় বিভিন্ন শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনায় আজীবন শ্রমদান করে চলেছেন। বাংলাদেশ খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব পদে নির্বাচিত। বাংলাদেশ ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন ( BELTA ), সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ ও সিলেটস্থ দোয়ারাবাজার সমিতির আজীবন সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালনরত আছেন। সুনামগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন হেলাল শিক্ষা ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসাবে ভূমিকা রাখছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সাব-সেক্টর কমান্ডার লে. কর্ণেল (অব.) আবু সৈয়দ হেলাল উদ্দিন পি এস সি মহোদয়ের অর্থায়নে পরিচালিত “হেলাল ভাতা” অসহায় মুক্তিযোদ্ধাগণকে বিতরণের দায়িত্ব শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পালন। বড়খাল বহুমুখী স্কুল ও কলেজের গভর্নিং বডি এবং দোয়ারাবাজার ডিগ্রি কলেজের এড হক কমিটির সভাপতি ছিলেন। দোয়ারাবাজার উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগ ও পদন্নোতি কমিটির সদস্য ছিলেন।
অর্জন : মো. ইদ্রিস আলী ১৯৭৩ সনে বীর প্রতীক খেতাব প্রাপ্তি, ১৯৯৭ সনে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে স্বর্ণপদক লাভ ও ২০১৫ সনে সিলেট বিভাগের শ্রেষ্ঠ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্বীকৃতি।
বিদেশ ভ্রমণ : মো. ইদ্রিস আলী ২০০৭ সনে ভারতের চেন্নাইতে আন্তর্জাতিক ইংরেজি শিক্ষক সম্মেলনে যোগদান, ২০১০ সনে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সিলং শহরে আন্তর্জাতিক শিক্ষা সম্মেলনে যোগদান, ২০১২ সনে সৌদি আরবে পবিত্র হজব্রত পালনের জন্য সস্ত্রীক মক্কা, মদিনা ও জেদ্দা ভ্রমণ, ২০১৭ সনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসাবে সরকারি সফরে নেদারল্যান্ডস, লুক্সেমবার্গ ও বেলজিয়াম ( ফ্রান্সের প্যারিসে একদিন সহ ) ভ্রমণ, ২০১৮ সনে মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব মুহিবুর রহমান মানিক মহোদয়ের সফরসঙ্গী হিসাবে মালয়েশিয়া ভ্রমণ করেন।
পারিবারিক জীবন : বর্তমানে জীবিত চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জ্যেষ্ঠ। দ্বিতীয় ভাই ইয়াকুব আলী পল্লী চিকিৎসক, তৃতীয় ভাই ইসহাক আলী অবসরপ্রাপ্ত বিজ্ঞান শিক্ষক, ছোট ভাই মো. ইলিয়াস অবসর প্রাপ্ত বি সি এস (কৃষি) কর্মকর্তা, বোন খোদেজা বেগম প্রা/বি প্রধান শিক্ষক, ছোট বোন ফিরোজা বেগম গৃহিণী। স্ত্রী আলহাজ্ব উম্মে কুলসুম গৃহিণী, জ্যেষ্ঠ পুত্র আবুল কাশেম প্রা/বি প্রধান শিক্ষক, দ্বিতীয় পুত্র আবুল হাসনাত সি কৃ বি ডেপুটি রেজিস্ট্রার, তৃতীয় পুত্র আবুল হোসেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপজেলা লাইব্রেরিয়ান, চতুর্থ পুত্র হুমায়ুন আহমেদ সি কৃ বি মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট।
অনুভূতি : বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ”। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বাংলাদেশের নির্যাতিত মানুষকে সাহায্য করেছেন। আমরা বিশ্বখ্যাত পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে দুর্দিনের মিত্র ভারতের সহযোগিতায় পরাস্ত করে বিতাড়িত করেছি। পাকিস্তান ২৪ বছরে সুরমা নদীর ওপর একটিও ব্রিজ নির্মাণ করে নাই – অথচ স্বাধীন বাংলাদেশ এপর্যন্ত শুধু সুরমা নদীর ওপরই নতুন আটটি ব্রিজ নির্মাণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা দেশের টাকায় বিশ্বের প্রবল খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর বিশাল ব্যয়সাধ্য সেতু নির্মাণে সক্ষম হয়েছি, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ চালু করেছি, স্বপ্নের মেট্রোরেল চালিয়েছি, অগণিত রাস্তাঘাট – ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ করে গাড়ি যোগে গ্রামের বাড়ি যেতে পারছি, অসংখ্য স্কুল – কলেজ – মাদ্রাসা স্থাপন ও সুবিশাল দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ করে সরকারি বেতন – ভাতার মাধ্যমে জ্ঞানের আলো বিতরণ করছি, কোটি প্রবাসীর মাধ্যমে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা আনছি, গার্মেন্টস সেক্টরের মাধ্যমে রপ্তানি আয় বাড়িয়েছি, ভূমিহীন – গৃহহীনগণ ভূমি ও গৃহ পেয়েছেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বয়স্ক – বিধবা – প্রতিবন্ধীগণ ভাতা পাচ্ছেন, এমনকি মহাশূন্যে পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে সক্ষম হয়েছি। এসবের কোনো কিছুই সম্ভব হতো না স্বাধীনতা অর্জিত না হলে।
পরামর্শ : আলহামদুলিল্লাহ। আমি আল্লাহ তায়ালার নিকট আত্মসমর্পণকারী বান্দা হিসাবে চির সন্তুষ্ট জীবন যাপন করে চলেছি। সর্বক্ষেত্রে ধৈর্যধারণের মাধ্যমে কাজ করে সুফল পেয়েছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে এগিয়ে আসতে এবং দিনের পর দিন কিছু কিছু করে পরকালের সামানা যোগাড় করে শেষ যাত্রার আসল প্রস্তুতি গ্রহণ করতে আমি সকলকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
২০২২ সালে অবসরপ্রাপ্ত গুণী শিক্ষকদের নিয়ে কাজ করা হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বনামধন্য শিক্ষক সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার কৃতি সন্তান জনাব টি, আলী স্যারের নামে প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাজ্য ভিত্তিক চ্যারেটি সংস্থা টি,আলী স্যার ফাউন্ডেশন সুনামগঞ্জ জেলার প্রত্যেক উপজেলায় অবসরপ্রাপ্ত দুইজন আদর্শ শিক্ষককে সম্মাননা পদকে মনোনয়নে জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় দোয়ারাবাজার উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত আদর্শ শিক্ষকের সম্মাননার স্বীকৃতি হিসেবে টি, আলী স্যার ফাউন্ডেশন সম্মাননা পদকের মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।
সুনামগঞ্জ জেলার ১২ উপজেলার ২৪ জন মনোনয়নপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জীবনী ধারাবাহিকভাবে লিখছেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি টি, আলী স্যারের পুত্র বৃটেনের জনপ্রিয় চ্যানেল এস টেলিভিশনের সাংবাদিক ফয়সল আহমদ (রুহেল)।
উল্লেখ্য, ২৪ জন মনোনয়নপ্রাপ্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে থেকে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা ৫ জনকে আর্থিক সহযোগিতা এবং জেলার আদর্শ শিক্ষকের স্বীকৃতি হিসেবে ৫ জন শিক্ষককে টি আলী স্যার ফাউন্ডেশন সম্মাননা পদকে ভুষিত করবে সংস্থাটি। শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ইদ্রিস আলী ‘বীরপ্রতিক’ দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে জ্ঞানের বিকাশ ঘটান, মনুষ্যত্বকে ফুটিয়ে তুলেন। তিনি ছিলেন জাতি গঠন করার কারিগর। শিক্ষার্থীর জন্য মডেল। শিক্ষকতা পেশাকে মহান ব্রত হিসেবে গ্রহণ করে এবং তা আন্তরিকতার সঙ্গে অনেকটা নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দেন তাঁর মেধা-মননে। বর্তমানে তিনি অবসর জীবন যাপন করছেন। আমরা এই বীরের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ূ কামনা করি।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৭৭৪ বার