মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার নতুনবস্তি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আট নারী শিক্ষককে একযোগে উপজেলা শিক্ষা অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। সোমবার উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে এই আদেশ দেয়া হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির হাতে শিক্ষকরা লাঞ্ছিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেয়া হয়েছে। আর এই আদেশের ফলে বিদ্যালয়টি শিক্ষকশূন্য হয়ে পড়েছে। অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সায়েম মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকশূন্য ও প্রতিষ্ঠানের অচলাবস্থার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভয়ে শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারছেন না। তাই এখানেই তারা হাজিরা দিয়েছেন। স্কুলের শিক্ষকরা সবাই নারী। তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এজন্য সবাইকে একযোগে উপজেলা শিক্ষা অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।’ তিনি জানান, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির হাতে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে সব শিক্ষক একযোগে সোমবার স্কুলে না গিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে হাজির হন। এরপর তারা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সেলিম মিয়ার বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেন। কয়েকজন শিক্ষক জানান, সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই সেলিম মিয়া শিক্ষকদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার শুরু করেন। কথায় কথায় ধমক দেন। প্রধান শিক্ষক শাহানা আক্তার বলেন, গত অর্থবছরে রাজস্ব বিভাগ থেকে স্কুল মেরামত বাবদ প্রায় এক লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। ব্যক্তিগত এবং স্কুল ফান্ডের স্লিপ মানি থেকে তিনি স্কুল মেরামত করে বিল ভাউচার দেয়ার পর গত ২০ জুন চেক পান। সভাপতি জোর করে চেকে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নিয়ে টাকা তোলেন। কিন্তু সেই টাকা এ পর্যন্ত ফেরত দেননি। টাকা চাইলে সভাপতি বলেন, তাকে কোনো টাকা দেয়া হবে না। তবে স্কুলের সভাপতি সেলিম মিয়া এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন ভুয়া হিসাব দেখিয়ে টাকা পয়সা আত্মসাৎ করেন। হিসাব চাওয়ার কারণেই তিনি মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।
জানতে চাইলে মানিকগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আলেয়া ফেরদৌসি শিখা বলেন, ওই স্কুলের শিক্ষকরা সবাই নারী। তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এজন্য সবাইকে একযোগে উপজেলা শিক্ষা অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষকদের সঙ্গে সভাপতির দুর্ব্যবহারের যে অভিযোগ এসেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn