নিদাহাস ট্রফি শেষে শ্রীলঙ্কা থেকেই চলে গিয়েছিলেন দেশে। ফিরে এসে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ফাঁকে আলাদা করে কাজ করেছেন পেসারদের নিয়ে। কেমন চলছে দিনকাল, কেমন কাটল লঙ্কা মিশন আর সামনের পরিকল্পনা কী—কাল মিরপুরে কোর্টনি ওয়ালশের সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রশ্নই এল ঘুরেফিরে। প্রথমবার কোচের দায়িত্ব এল হঠাৎ করেই, সেটা দারুণ উপভোগ করেছেন বলে জানালেন ওয়ালশ। খারাপ সময় কেটে আলোর কিরণ হয়ে এসেছে নিদাহাস ট্রফি। তবু একটা চোরা যন্ত্রণার বসবাসও আছে সেখানে, ‘আমি খুশি হব, যদি দায়িত্বটা অব্যাহত রাখতে পারি। আমার অভিজ্ঞতাটা দারুণ। ভাগ্যবান মনে করেছি নিজেকে। ছেলেরাও ভালো খেলেছে। সবাই হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। সব সময় এ রকম ঘটে না। আমরা এক শ ভাগ দিয়েছিলাম। শরীরী ভাষায়, আবেগে আমরা দেখেছি, কতটা মরিয়া ছিল তারা এটা জিততে। গর্ব হতো ট্রফিটা জিততে পারলে। খুশি হয়েছি ক্রিকেটারদের প্রত্যয়ে।’

ওয়ালশ শুধু প্রত্যয়ী বাংলাদেশকেই দেখেছেন, কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেট দেখেছে মাঠ-ডাগআউটে বাংলাদেশের যুদ্ধংদেহী মনোভাব। আলোচনা-সমালোচনাও হয়েছে বিস্তর। ওয়ালশের তো আরও বেশি চোখে লাগার কথা। এমন বিধ্বংসী ফাস্ট বোলার, অথচ মাঠে ছিলেন ভদ্রতার প্রতিমূর্তি। মাঠে বা মাঠের বাইরে কখনো কেউ তাঁকে মেজাজ হারাতে দেখেনি। প্রেমাদাসার ডাগআউটে দাঁড়িয়ে সে সময় কী ভাবছিলেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচ? এত দিন পর নুরুল-সাকিবদের রুদ্ররূপকে এখনই বা কেমন মনে হচ্ছে ক্যারিবীয় কিংবদন্তির? ওয়ালশ প্রকৃত চিত্রটাই তুলে ধরলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে এমন অনেক কিছুই ঘটতে পারে। আম্পায়ারদের ভুল তো ছিলই। যা ঘটেছিল, সম্ভবত দর্শকেরা ভুল বুঝেছিল। আমরা ভেবেছিলাম, ফ্রিহিট পাব, কারণ এটা নো বল ছিল। আমি ওদের সঙ্গে ম্যাচের পরেও কথা বলেছি। তবে এটা হতে পারে। এতে বোঝা যায়, খেলাটার প্রতি কতটা প্যাশন তাদের। তবে সবকিছুরই নিয়মনীতি আছে, আপনি এটার বাইরে যেতে পারেন না।’

অতীত থেকে বর্তমানে ফিরে আসেন ওয়ালশ। নতুন প্রধান কোচের জন্য বিসিবির খোঁজ এখনো চলছে। কবে পাওয়া যাবে, সেটিও অনিশ্চিত! এমনও হতে পারে, নিজের দেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজে এবার তিনি ফিরতে পারেন ‘শত্রুর দ্রোণাচার্য’ হয়ে। সেই সফরে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেয়ে খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে শক্ত হওয়াটাকেই বেশি জরুরি মনে হচ্ছে ওয়ালশের কাছে, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরটা কঠিন হবে। ওরা ভালো খেলছে না। তবে ঘরে ওরা ভয়ংকর। এটা খুবই চ্যালেঞ্জিং একটা সফর হবে। আমরাও দেশের বাইরে টেস্টে ভালো করিনি। আশা করি, দুটি ভালো দলের খেলা অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।’

ওয়ালশ বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ হয়ে এসেছিলেন ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। দেড় বছর পেরিয়ে দুই বছর ছুঁতে চলল তাঁর সময়কাল। এই সময়ে পেস বোলিংয়ে আহামরি যে খুব উন্নতি হয়েছে, এমন নয়। সেটা মানছেন ওয়ালশ নিজেও। সেটির কারণটাও বললেন একসময় টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক, ‘আমি পেস বোলারদের কাছ থেকে ধারাবাহিকতা দেখিনি। এটাই দেখতে চেয়েছি সব সময়। অজুহাত দেব না। তবে আমার মনে হয়, খেলা কম হচ্ছে। দুই বছর ধরে এখানে আছি। শুধু মোস্তাফিজকে দেখলাম ধারাবাহিক। পেসারদের সুযোগ না দিলে উন্নতি করবে কীভাবে? দুই বছরে একটা টেস্ট খেললে আপনি কখনো উন্নতি করবেন না। এটাই বাস্তবতা।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn