সবুজের সমারোহে সেজেছে প্রাকৃতিক সৌন্দের্যের অপরুপ লীলাভূমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। আপনাকে কেউ যদি প্রশ্ন করে সবুজের সমারোহ কি, দেখতে কেমন? নিশ্চয় আপনি এক বাক্যে বলবেন এই যে, চারিদিকে ছায়াবীথি, সবুজ গাছের অরণ্য, সারি সারি গাছে নতুন সবুজ পাতার নৃত্য, গাছে গাছে সবুজ পাতার বিচরণ এসবকে ঘিরে সবুজের সমারোহ। নানা বৈচিত্র্যময় পাখির কলকাকলি আর নৃত্য, যেদিকে তাকানো যায় শুধু সবুজে ঘেরা অরণ্য, ক্যাম্পাসবাসীর নিরসলস ছুটে চলা, রাস্তার দু-ধারে কাঠবিড়াল, শেয়াল, গুইসাপ, ঝিঝিপোঁকার ডাক, বেজির মনমাতানো খেলা এগুলোর সমন্বয়ে জাহাঙ্গীরনগরের স্বর্গ রাজ্য।

সবুজের সমারোহ দেখার তো আর শেষ নেই। চিরসবুজ বাংলাদেশের বুকে রয়েছে দেখার মতো অনেক দৃষ্টিনন্দন জায়গা। যেখানে গেলে আপনি পাবেন প্রকৃতির আলতো ছোঁয়া। যে ছোঁয়া আপনাকে করে তুলবে পুলকিত, উল্লাসিত। বাংলাদেশের বুকে এমনি একটি দৃষ্টিনন্দন জায়গা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সবুজ সমারোহের পরশে হাজারো মানুষের মন জয় করে নিয়েছে তার অবিরাম সৌন্দর্যের বরতা দিয়ে।নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের লীলাভূমি, ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় সাতশ (৬৯৭.৫৬) একর জায়গার উপর স্থাপিত দেশের সবুজে ক্যাম্পাসের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। সেই যাত্রা শুরু করার পর ৪৬ বছরে পা দিয়ে আজ দুরন্ত গতিতে ছুটে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

শিক্ষা ক্ষেত্রে এসেছে অভাবনীয় সাফল্য। কি গবেষক, গবেষণা বিজ্ঞানাগার, কি বিজ্ঞানী, কি ইঞ্জিনিয়ার, প্রকৌশলী সব কিছু রয়েছে এখানে। এতকিছু সাফল্যের মাঝে লুকিয়ে আছে আরও একটি অবাক করার মতো বিষয়, আর তা হলো এর সবুজে ঘেরা অরণ্যে।
শহরের ইট পাথরের দেয়াল থেকে অদূরে অবস্থান এই সবুজের লীলাভূমির। পড়ালেখা, কর্মজীবন থেকে একটু হাফ ছেড়ে বাঁচতে প্রতিদিন এখানে ভ্রমণে আসে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। তাদেরকে কোমল পরস বুলিয়ে মায়া মমতায় আপন করে নেয় এই সুন্দর ক্যাম্পাস। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যদি পরিচয় জানতে চান তবে একে পরিচয় করে দিতে হবে ‘সবুজের লীলাভূমি’ হিসেবে। প্রায় পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে সবুজ গাছপালা নেই। দেশের অন্যতম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আবাস বলা হয় এটিকে। বাংলাদেশের এমন কোনো গাছ নেই যা এখানে পাবেন না। রয়েছে বিদেশী অনেক সবুজ গাছও। প্রধান গেট ডেইরি গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতেই চোখে পড়বে নানা রকম আম, কাঁঠাল, বকুল, মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া, ক্যাশপিয়া, শাল, বরই, কদম, ইত্যাদি সবুজ গাছ। যতই ভিতরে আসবেন ততই দেখতে পাবেন কি অপরুপ আকরে সেজেছে এর প্রকৃতি। আপনার হৃদয় এক পলকে কেড়ে নেবে।

তারপর চোখে পড়বে ফুলের সমারোহ। শত শত রকমের দেশি ও বিদেশী ফুলে আছন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্গণ। রাস্তা হাটতে দুধারে দেখবেন ফুল আর ফুল, ফুটে আছে গাঁদা, গোলাপ, জবা, বকুল, হাসনাহেনা, বেলি ঠিক তেমনই নজর কাড়বে জলাশয়ে সদ্য ফোঁটা শাপলা ও লাল, নীল পদ্ম। চলার পথে চোখে পড়বে প্রতিটি আবাসিক হল, অনুষদের পাশে রয়েছে ফুলের বাগান। সারাবছর সেই বাগানে কোনো না কোনো ফুল ফুটে থাকে। বাহারি রকমের ফুলের সুবাস আপনার খারাপ মনকে এক নিমিষে ভাল করে দিতে পারে। বোটানিক্যাল গার্ডেনে পাবেন বিদেশী বহু রকম ফুল ও ঔষুধী গাছের দেখা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn