সাত বছরের মধ্যে পাঁচবার ফেল করা সেই ডাকসুর এজিএসের স্ট্যাটাস
সাত বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালইয়ে আইন বিভাগে স্নাতক পড়ছেন ডাকসুর এজিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। কিন্তু এখনও তৃতীয় বর্ষের সমাপনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি তিনি! গত ২৭ মে আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের সমাপনী পরীক্ষার প্রকাশিত ফলে ১২৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন অনুত্তীর্ণ হন। আর এ তিনজনের একজন হলেন সাদ্দাম হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের এমন অকৃতকার্যতার বিষয়টি মে মাসের শেষের দিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে অনেকেই হতবাক হন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য, মিমস ও নেতিবাচক মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে এসবকে ছাপিয়ে যে প্রশ্নটি করেন সচেতনরা – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের একটি আদেশ অনুযায়ী, আট বছরের বেশি কোনো শিক্ষার্থী ঢাবির নিয়মিত ছাত্র হিসেবে অধ্যায়ন করতে পারবে না। এই আট বছরের ভেতর ছয় বছরে স্নাতক ও দুই বছরের মধ্যে স্নাতকোত্তর করতে হবে। তাহলে সাদ্দাম হোসেন সাত বছরে স্নাতক পড়ছেন কীভাবে? এবার সে প্রশ্নের জবাব ও স্নাতকে এভাবে নিজের অকৃতকার্যতার বিষয়ে গত ৩ জুনে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, তার মান উন্নয়ন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ আছে।
তার সেই স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
‘আমার ‘একাডেমিক’ বিষয় নিয়ে যাবতীয় সমালোচনাকে আমি স্বাগত জানাই। এটি সত্য যে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে জনপরিসরে কথা বলতে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না, কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমি নিউজ, স্ট্যাটাস, মন্তব্যগুলো পড়েছি, মিমসগুলো দেখেছি। এটি অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই যে, মতামতগুলো প্রায় সম্পূর্ণই যৌক্তিক। একইসঙ্গে আমি বলতে চাই, আমার এই সীমাবদ্ধতার জন্য রাজনৈতিক ব্যস্ততার অজুহাত, একাডেমিক বিষয়কে গুরুত্বপূর্ণ না ভাবার আদিখ্যেতা বা অপরাপর কোন গ্রহণযোগ্য কারণ নেই, এ দায় একান্তই আমার। আমি নিঃসঙ্কোচে স্বীকার করি, শিক্ষার্থীদের জন্য এটি কোন ভাল উদাহরণ নয়। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে আমি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি এবং ছাত্ররাজনীতির কর্মীদের এই দায় আরও বেশি। আমার প্রচেষ্টা থাকবে নিজের ত্রুটিগুলো অতিক্রম করার। শুধু একাডেমিক নয়, আমার চলার পথের যাবতীয় বিচ্যুতিগুলো থেকে যতদূর সম্ভব নিজেকে ক্রমাগত ভালো করার। আমি সবসময় নিজের জীবনটা যাপন করতে চেয়েছি এবং তার অনেক কিছুই হয়তো সঠিক ছিল না, কিন্তু নিজেকে নিজের মুখোমুখি করার, নিজেকে সাধারণ মানুষের সামষ্টিক বিবেচনাবোধের আয়নার সামনে তুলে ধরার প্রতি অবিচল অনুরাগ ও নিষ্ঠা নিয়েই আমি বাকিটা পথ চলতে চাই। সকলের মঙ্গল হোক।’