সিডিপির সুনামগঞ্জ সংলাপে হাওর বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের দাবি
একে কুদরত পাশা- গণতান্ত্রিক সুশাসনে জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের অংশগহণ লক্ষে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তায় হাওর অঞ্চলের জীবন-জীবিকা: সরকারি পরিষেবার ভ‚মিকা শীর্ষক একটি সংলাপ শনিবার সুনামগঞ্জের একটি স্থানীয় রেস্টুরেন্টের হলরুমে অনুষ্টিত হয়েছে। সিডিপির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, অতিথির বক্তব্য রাখেন নারী নেত্রী শিলা রায়। সংলাপে বিশেষ বক্তার বক্তব্যে সার-সংক্ষেপ উপস্থাপনা করেন সিডিপির ফেলো অধ্যাপক মেস্তাফিজুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিডিপির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। সংলাপে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্যানক্রেড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক তপন রুরাম, সূচনা বক্তব্য রাখেন অক্সফাম ইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টার ড. দীপঙ্কর দত্ত।
সুনামগঞ্জ সংলাপে জেলার বিভিন্ন উপজেলার এবং বিভিন্ন সেক্টরের দুই শতাধিক লোক অংশ নেন। সংলাপে বক্তারা দেশের সাতটি জেলা নিয়ে হাওর বিষয়ক মন্ত্রনালায় করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান। উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা জেলার বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন এবং সমস্যা সমাধানে তাদের মতমত ব্যক্ত করেন। উন্মুক্ত আলোচনায় হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনকেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু বলেন, সিডিপি টেকসই জীবিকা কাঠামোতে সুনামগঞ্জের অবস্থা বিপন্নতার প্রেক্ষিত অংশে যে তথ্য তুলে ধরেছে তা সঠিক নয়। ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে কোন বন্যা হয়নি, মনুষ্যসৃষ্টি দুর্যোগে জেলার কৃষকরা তাদের শত ভাগ ফসল হারিয়েছে। দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারদের দুর্নীতির কারণে সুনামগঞ্জের শতভাগ ফসল তলিয়ে গিয়েছিলো। এর পর থেকে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোল কৃষকদের পক্ষে বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছে।
মানবাধিকার কর্মী ফজলুল হক জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থার বাস্থব চিত্র তুলে ধরেন, জরুরী বিভাগের ডাক্তার চিকিৎসা না দিয়ে ওয়ার্ড বয় দিয়ে চিকিৎসা করার চিত্র তুলে ধরেন এবং সিভিল সার্জনের খুটির জোড় কোথায় তা জানতে চান। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, সাংবাদিক আল-হেলাল, দৈনিক সুনামগঞ্জের খবর সম্পাদক পঙ্কজ কান্তি দে, মাহতাব উদ্দিন তালুকদার, কুলেন্দু শেখর দাস তালুকদার, হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ মো. রবিউল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালেহীন চৌধুরী শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন জেলা প্রতিনিধি মাসুম হেলাল, দৈনিক জনকণ্ঠ প্রতিনিধি ইমরানুল হক চৌধুরী, কালেরকণ্ঠ জেলা প্রতিনিধি শামস শামীম সহ অর্ধ শতাধিক বক্তা আলোচনায় অংশ নন।
নেতৃবৃন্দরা বলেন হাওর অঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকা বলতে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করেই বাচঁতে হচ্ছে। প্রতিবছরই অকাল বন্যা,কড়া,ফসল রক্ষা বার্ধে অনিয়ম,সময় কালক্ষেপন করা হয়। বছরের অধিক সময় এই জেলা জলমগ্ন থাকায় কৃষি নির্ভরশীল মানুষজন অধিকাংশ সময় বেকার জীবন যাপন করেন। এখানে শিল্প কারখানা গড়ে না উঠায় বেকারত্বের সংখ্যা অনেক বেশী। নারীদের কর্মমুখী করে গড়ে তুলতে নেই কোন প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা। এখানে সুশাসনের অভাবে অবকাঠামো উন্নয়নের মূল অন্তরায় র্দূনীতি। এই র্দূনীতিকে কমিয়ে আনা গেলে হাওরবাসীর স্বপ্ন পূরণ হবে সংলাপে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নেতৃবৃন্দরা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, সুনামগঞ্জে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, এ জেলায় টুরিজমের অপার সম্ভাবনা আছে। ট্যাকের ঘাটে আমাদের তিনশ একর জমি রয়েছে এখান থেকে টুরিজম শুরু করা যেতে পারে। তিনি বক্তাদের অভিযোগেস প্রেক্ষিতে বলেন, চিকিৎসা সেবা দেখার জন্য সিভিল স্র্জন রয়েছেন আমি জেলার কমিউনিটি ক্লিনিকের বর্তমান অবস্থা জনতে চেয়েছিলাম এখনো সিভিল সার্জন আমাকে জানাচ্ছেন না। তিনি জেলার প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়ে বলেন, বিদ্যালয় পরিদর্শনে গেলে শিক্ষক পাওয়া যায় না, দফাদারকে ক্লাস নিতে দেখা যায়। যে বিদ্যালয়ে চার জন শিক্ষক আছেন তারা নিজেদের মধ্যে সিডিউল করে দুজন বিদ্যালযে আসেন, এটা হয়েছে শিক্ষকরা শহর মূখি হওয়ায়। শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের আশেপাশে না থেকে জেলা এবং উপজেলা সদর থেকে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করেন। এগুলো কমাতে হবে, জবনেছার অনুযায়ী সবাইকে চলতে হবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন সকলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বয্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।