সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর ও সদরের একাংশ) আসনে উপনির্বাচনে বেসরকারি ফলাফলে বিজয়ী হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তানভীর শাকিল জয়। ভোট গণনা শেষে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ১৭১টি কেন্দ্রের সবগুলোর ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তানভীর শাকিল পেয়েছেন ১ লাখ ৮৮ হাজার ৩২৫ ভোট। অন্যদিকে, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী সেলিম রেজা পেয়েছেন ৪৬৮ ভোট। এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ করা হয়। তবে ভোট গ্রহণ শেষে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেন বিএনপির প্রার্থী সেলিম রেজা। এ সময় তিনি পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান।
সকালে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকালের দিকে ভোটকেন্দ্রে ভোটার ছিল কম। সকাল আটটায় উপজেলার কাজীপুর পৌরসভার বেড়ীপোটল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত হয়েছেন। কিন্তু ভোটারদের উপস্থিতি তখনো তেমন ছিল না। এই কেন্দ্রে পুরুষ ও নারী ভোটারদের চারটি বুথে ৩০ জনের মতো ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রথম ১৫ মিনিটে ছয়জন নারী ও চারজন পুরুষ ভোটার ভোট দিয়েছেন। সকাল পৌনে নয়টার দিকে এই কেন্দ্রে ভোট দেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী তানভীর শাকিল। তিনি প্রয়াত আওয়ামী লীগের নেতা মোহাম্মদ নাসিমের ছেলে এবং জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এম মনসুর আলীর নাতি। ভোট প্রদান শেষে তিনি বলেন, ‘কাজীপুর এলাকা আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়ে এ এলাকার মানুষের প্রতি যে আস্থা বজায় রেখেছেন, আজকের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিপুল বিজয় দিয়ে এলাকার মানুষ তার প্রতিদান দেবে।’
কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, শুরুতে বিষয়টি বুঝতে ভোটারদের একটু সময় লেগেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। বেলা পৌনে ১১টার দিকে মাইজবাড়ি ইউনিয়নের ছালাভরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় নারী ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি। এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নাজিম কামরান বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় অর্ধেক ভোট প্রদান করা হয়েছে। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ৫১৫ জন। বিএনপির প্রার্থী সেলিম রেজা বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চালিতাডাঙ্গা বিবিএন উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন। ভোট প্রদান শেষে তিনি বলেন, ‘আমি সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে পারলেও বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঠিকমতো ভোট দিতে পারছেন না। ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। তবু শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকব।’ কয়েক জায়গায় এজেন্ট গেলেও তাঁদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বেলা একটার দিকে সোনামুখী ইউনিয়নের সোনামুখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে কোনো ভোটার নেই। তবে বুথে ১-২ জন করে ভোটার ভোট দিচ্ছেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুদ বলেন, এখন দুপুরের খাবারের সময় অনেকেই খাওয়াদাওয়া শেষে আবার আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভোট গ্রহণ শেষে সিরাজগঞ্জ শহরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থী সেলিম রেজা ভোট প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘অনেক কেন্দ্রে আমার এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কয়েকটি কেন্দ্রে এজেন্ট গেলেও তাঁদের বের করে দেওয়া হয়েছে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা এই ভোট দেখেছি। কিন্তু জনগণ ভোট প্রয়োগ করতে পারেনি।’ এ সম্পর্কে বিকেল পাঁচটায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপনির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় ৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৬৯ বার