মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে এক আসামীর জামিন নেয়ার অপরাধে সিলেট আদালতের দুই আইনজীবিসহ ৬জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। সিলেট চীফ মেট্রোপলিটন আদালতে মামলাটি দায়ের করেন সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক মো.মামুনুর রহমান ছিদ্দিকী। এ মামলায় আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক উম্মে সরাবন তহুরা মামলাটি আমলে নিয়ে বুধবার (১৭ মে) (কোতোয়ালি থানার সিআর মামলা নং-৬৬২/১৭) দুই আইনজীবিসহ ৬জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

গ্রেফতারী পরোয়ানা ভুক্ত দুই আইনজীবি হলেন, সিলেট জেলা আইনজীবি সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আসামীপক্ষের নিযুক্ত আইনজীবি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আকমল খাঁন, সিলেট জেলা আইনজীবি সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন। এছাড়াও মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ভুক্ত অপর আসামীরা হলেন, সিলেট ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার সৈয়দপুর গ্রামের আশিকুর রহমান চৌধুরীর ছেলে আহমেদ জামান চৌদুরী ফরহাদ, যিনি বর্তমানে নগরীর হাউজিং এস্টেটের ৪নং রোডের ২৮/বি নং বাসায় বসবাস করে আসছেন, আসামীর স্থানীয় জামিনদার নগরীর আখালিয়া নোয়াপাড়া ৩০/৩ বাসার মৃত ছোরাব আলীর ছেলে ছাদিক মিয়া, সুনামগঞ্জ ছাতকের কালারুকা ইউনিয়নের কাজী মাওলানা আব্দুশ শাকুর এবং অজ্ঞাত এক নারী।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সিলেট মহানগরীর শাহপরাণ থানায় দায়ের করা একটি মামলা (জিআর মামলা নং-৩২/১৬) ‘র আসামী আহমেদ জামান চৌধুরী গত ২ মে তার আইনজীবি মোহাম্মদ আকমল খাঁন এর মাধ্যমে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এ আত্মসমর্পনপূর্বক জামিনের আবেদন করেন। এসময় আসামীপক্ষের আইনজীবি মামলার বাদীর সাথে বিবাহ হয়েছে এবং আপোষে বিবাহ নিষ্পত্তি হয়েছে বলে বিবাহের বিভিন্ন কাগজপত্রের সত্যায়িত কপি দাখিল করেন। এ সময় মামলার বাদী ফাহমিদা হক সাজিয়ে অজ্ঞাত এক মহিলাকে আদালতে উপস্থাপন করে তাদের মধ্যে পারিবারিক আপোষ হয়েছে বলে আদালতে কথিত ফাহমিদা হকের পক্ষে তথ্য উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন। এমনকি ওই আসামী জামিনে যেতে আপত্তি নেই মর্মে আদালতে আবেদন দাখিল করা হয়।

উল্লেখ্য, সিলেট ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার সৈয়দপুর গ্রামের আশিকুর রহমান চৌধুরীর ছেলে আহমেদ জামান চৌধুরী ফরহাদ এর বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ২০১৬ সালে ২০ ফেব্রুয়ারি সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানায় মামলা নং-১৫ দায়ের করেন। আদালত সূত্র আরো জানায়, প্রতারণার মাধ্যমে আসামীর জামিন নেয়ার পর গত ১৬ মে মামলার বাদী শাহপরাণ থানার হাতিমবাগ ২৩/এ বাসার বাসিন্দা ফাহমিদা হক তার আইনজীবি আকবর হোসেনের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র দাখিল করে আদালতকে অবহিত করেন যে, ২ মে মামলার আসামী আহমেদ জামান চৌধুরী ফরহাদের স্ত্রী সেজে যে ফাহমিদা হক আদালতে উপস্থিত হয়েছেন তিনি মামলার বাদী ফাহমিদা হক নন। এ অভিযোগের উপর ভিত্তি করেই সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ মামলাটি দায়ের করেন ও এই দুই আইনজীবিসহ ৬জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আকমল খাঁন তার মোবাইল ফোনে করা কল ধরেননি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn