সিলেটে পাথর কোয়ারিতে থামছে না মৃত্যুর মিছিল
চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরফিন টিলা কেটে পাথর উত্তোলনের সময় ভূমি ধসে পাঁঁচ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। একই টিলা থেকে পাথর তুলতে গিয়ে চলতি বছরে প্রাণহানী ঘটে আরও ৬ জনের। এছাড়া গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি, জাফলং, কানাইঘাটের লোভাছড়া কোয়ারিতে চলতি বছরে আরও ২৪ জনের প্রাণহানী ঘটে। অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের ফলে সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র প্রকৃতিকন্যা খ্যাত জাফলং এখন বিরাণভূমি। জাফলংকে ইতোমধ্যে ‘পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু থেমে নেই পাথর উত্তোলনের নামে পরিবেশ ধ্বংসের তান্ডবলীলা। এনিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবাদীরা আন্দোলন করে আসছেন। কিন্তু কোনভাবেই রক্ষা করা যাচ্ছে না জাফলংকে। পরিবেশ ধবংসের জন্য পরিবেশবাদীরা দায়ি করছেন এর নেপথ্যে থাকা রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কীম বলেন, পরিবেশ ধ্বংস করে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের নেপথ্যে রয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা। ফলে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিতে চায় না। মাঝে মধ্যে দু’একটি অভিযান চালানো হলেও তা ফলপ্রসু হচ্ছে না। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে অল্পদিনে কোটিপতি হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় রাজনৈতিক নেতারাও কোয়ারিগুলোতে প্রভাব খাটাচ্ছেন।
কোয়ারিগুলোতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ না হওয়ার কথা স্বীকার করে সিলেটের পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, জেলা ও পুলিশ প্রশাসন মিলে কোয়ারিগুলোতে অভিযান চালায়। কিন্তু অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছে না। জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া পরিবেশ বিধবংসী এই কর্মকান্ড বন্ধ করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রশাসনের উদ্যোগে নানা কর্মকান্ড হাতে নেয়া হয়েছে। এই উদ্যোগ সফল হলে পাথর কোয়ারিগুলোর পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে।