সিলেটে মা-ছেলে হত্যা: মূল পরিকল্পনায় তানিয়া আটক
অভিযুক্ত তানিয়াকে (২০) গ্রেফতারের পর নারী ও মাদক সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পিবিআই’র তদন্তকারী দল। সোমবার (৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে সিলেট পিবিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পিবিআই’র বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম মল্লিক। তিনি আরও বলেন, ‘তানিয়ার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত আছে। যাদের নাম এরইমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেসব ব্যক্তিকে নিয়েও পিবিআইর তদন্ত চলছে। তবে যাদের নিয়ে তদন্ত চলছে তারা কেউই সিলেটের নয়। এরা সবাই পালিয়ে গেছে। ঘটনার শুরু থেকে যেহেতু তানিয়ার নাম উঠে এসেছে, এ কারণে তাকে গ্রেফতার করা জরুরি ছিল। পিবিআই তানিয়াকে গ্রেফতার করার জন্য নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। গ্রেফতার এড়াতে তানিয়া অনেকটা কৌশলী হয়ে যাওয়ায় তাকে দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘তানিয়ার সঙ্গে নিহত রোকেয়া বেগমের গভীর সম্পর্ক ছিল। তানিয়া প্রায়ই রোকেয়ার বাসায় থাকতো। হত্যাকাণ্ডের পর তানিয়া মোবাইল ফোন বন্ধ করে তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার ঘোষকান্দির তিতাসে চলে যায়। পুলিশ তানিয়াকে খুঁজে না পেয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় রবিবার (৮ এপ্রিল) রাতে তানিয়ার দ্বিতীয় স্বামী ইউসুফ মামুনকে (২২) সিলেটের বন্দরবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তানিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দুজনকে পিবিআইর হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি আইজিপির নির্দেশে ছায়া তদন্ত শুরু করেছে পিবিআই।
গ্রেফতার তানিয়া আক্তার (২০) কুমিল্লার ঘোষকান্দি তিতাস গ্রামের বেলাল হোসেনের মেয়ে। তার স্বামী ইউসুফ মামুন (২২) সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা গ্রামের সারজান খানের ছেলে। মামুন মহানগরের তালতলায় একটি ট্রাভেলসে চাকরি করে। পিবিআই বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, তানিয়ার পরিকল্পনা অনুযায়ী রোকেয়া বেগম ও তার ছেলে রবিউল ইসলাম রোকনকে হত্যা করা হয়। তানিয়ার দ্বিতীয় স্বামী মামুনের কাছ থেকে পিবিআই প্রায় অর্ধশতাধিক সিমকার্ড উদ্ধার করেছে। ঘটনার পর থেকেই মামুনও তার সিম কার্ড বন্ধ করে রাখে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ৩০ মার্চ মধ্যরাত থেকে ৩১ মার্চ ভোরের মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রসঙ্গত, সিলেট মহানগরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের খারপাড়ায় মিতালি ১৫/জে নম্বরের তিনতলা বাড়ির নিচতলায় দুই সন্তানকে নিয়ে থাকতেন পার্লার ব্যবসায়ী রোকেয়া বেগম। গত ১ এপ্রিল সকালে বাসার ভেতরে থাকা রোকেয়া বেগমের পাঁচ বছরের মেয়ে রাইসার কান্না শুনে এবং পচা গন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে রোকেয়া বেগম ও তার ছেলে রবিউল ইসলাম রোকনের লাশ উদ্ধার করে