সিলেট বিভাগে ৩৪,সারাদেশে করোনায় মারাগেছে আ’লীগের ৫২২জন নেতাকর্মী
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, আমরা করোনার রিপোর্ট আনছি। সংগৃহীত তথ্যে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত ৫৮টি জেলায় ৫২২ জন মারা গেছেন। আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, সারা বাংলাদেশে আমাদের কতজন মারা গেছেন, এটার তথ্য তুলে নিয়ে আসো। সে অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ চলছে। আরও কয়েকটি সাংগঠনিক জেলার তথ্য পাওয়া বাকি আছে। সেগুলোর তথ্য পেলে এই তালিকা পূর্ণাঙ্গ হবে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান বলেন, এ তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আমরা আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান রেখেছি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর থেকে গত ৫ জুলাই সব সাংগঠনিক জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিজ নিজ জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী দলীয় নেতাকর্মীদের বিস্তারিত তথ্য দিতে অনুরোধ করা হয়। দলের ডাটাবেজ টিম সারাদেশে সাংগঠনিক জেলাগুলোর সংশ্লিষ্ট নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসব তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চলাকালীন এ তথ্য সংগ্রহ চলমান থাকবে।
দলের দফতর সূত্র বলছে, ডাটাবেজ টিম গত ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সব সাংগঠনিক জেলায় যোগাযোগ করে এ পর্যন্ত ৫৮টি জেলায় আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এসব জেলায় ৫২২ জন নেতাকর্মীর মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য রয়েছেন চার জন। তারা হলেন— দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য বদর উদ্দিন আহমেদ কামরান এবং উপদেষ্ঠা পরিষদ সদস্য মকবুল হোসেন।
সারাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের জেলাওয়ারী নাম, পরিচয়, ঠিকানা, দলীয় ও মোবাইল নাম্বারসহ তালিকার একটি কপি সারাবাংলার হাতে এসেছে। তালিকা অনুযায়ী ঠাকুরগাঁওয়ে একজন, লালমনিরহাট তিন জন, কুড়িগ্রাম একজন, রাজশাহী মহানগরে তিন জন, বগুড়ায় আট জন, জয়পুরহাটে এক জন, নওগাঁতে দুই জন ও পাবনায় এক জন মারা গেছেন। সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জে একজন, সিলেটে আট জন, সিলেট মহানগরে তিন জন, মৌলভীবাজারে ১৩ জন ও সুনামগঞ্জে ৯ জন মারা গেছেন করোনা সংক্রমণে। খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় সাত জন, মেহেরপুরে ২২ জন, কুষ্টিয়ায় একজন, ঝিনাইদহে একজন, সাতক্ষীরায় আট জন ও বরগুনায় দুই জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী মারা গেছেন। আর বরিশাল বিভাগের মধ্যে ভোলায় একজন, পটুয়াখালীতে পাঁচ জন, বরিশালে একজন ও ঝাালকাঠীতে একজনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে।
করোনায় সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগের গাজীপুরে ১১ জন, মুন্সীগঞ্জে ২৪ জন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণে ১৭৩ জন, গোপালগঞ্জে ছয় জন, ঢাকা মহানগর উত্তরে ১৩ জন, ঢাকা জেলায় চার জন, শরীয়তপুরে তিন জন, রাজবাড়ীতে চার জন, নারায়ণগঞ্জে তিন জন, মাদারীপুরে সাত জন, টাঙ্গাইলে ১৬ জন, গাজীপুর মহানগরে পাঁচ জন মারা গেছেন। অন্যদিকে ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনায় তিন জন, শেরপুরে একজন ও ময়মনসিংহে চার জন মারা গেছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর মধ্যে চাঁদপুরে ১২ জন, কক্সবাজারে পাঁচ জন, বান্দরবানে দুই জন, ফেনীতে ৯ জন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলায় ৬৫ জন, কুমিল্লা উত্তর জেলায় চার জন, নোয়াখালীতে ১৪ জন, কুমিল্লা মহানগরে ৯ জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৯ জন মারা গেছেন করোনায়। আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের মধ্যে যুবলীগের ছয় জন ও বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের তিন জন নেতাকর্মী মারা গেছেন করোনার ছোবলে।