সুনামগঞ্জে ভাড়া চাওয়ায় মাঝি খুন, ১২ দিন পর মিললো লাশ
শহীদনুর আহমেদ :: নৌকা ভাড়া চাওয়ার কারণে মাঝিকে হত্যার পর হাত-পা বেঁধে হাওরে ফেলে দেয় সন্ত্রাসীরা। হত্যাকারীদের জবানবন্দি অনুযায়ী নৌকার মাঝি সুজন সরকারের লাশ হত্যার ১২ দিন পর হাওর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুজন সরকার মধ্যনগর থানার সদর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের মৃত আশুতোষ সরকারের ছেলে। পুলিশ জানায়, গত ১১ জুন নিখোঁজ হন ডিঙ্গি নৌকার মাঝি সুজন সরকার। নিখোঁজের পরদিন তার মা সাবিত্রী সরকার মধ্যনগর থানায় একটি জিডি করেন। পুলিশ এই নিখোঁজের রহস্য উদঘাটনে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য নেয়। মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ জানাতে পারে ১১ জুন সকালে একাধিকবার একটি মোবাইল নাম্বারে সাথে যোগাযোগ হয় সুজনের । দিনের বাকি সময় একই নেটওয়ার্কের অধীনে ছিল সুজন ও জনৈক ব্যক্তির অবস্থান। এই সূত্র ধরেই পুলিশ ঢাকার উত্তর বাড্ডা থেকে ধর্মপাশা উপজেলার চামারচানী ইউনিয়নের লালচানের ছেলে কাজল (২৫) ও লিটন মিয়ার ছেলে তানভীরকে (২৩) এবং সদর ইউনিয়নের আব্দুল হেকিমের ছেলে মোশারফ হোসেন(৩০) গ্রেফতার করে । গ্রেফতারকৃত তিন যুবক সুজনকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। পুলিশকে দেয়া জবানবন্দিতে তারা জানায়, ১১ জুন সকালে ঢাকা থেকে আসা কয়েকজন বন্ধুসহ এই তিন যুবক ২ হাজার টাকায় সুজনের ডিঙ্গি নৌকা ভাড়া করে মধ্যনগর থেকে ছেড়ে আসা নৌকায় হাওরের বিভিন্নস্থানে সারাদিন ঘুরে এই যুবকরা। রাত ৮টার দিকে নৌকার মাঝি সুজন ভাড়া চাইলে যুবকদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে সুজন ক্ষোভ প্রকাশ করলে যুবকরা সুজনের হাত-পা বেঁধে টগার হাওর নামকস্থানে পানিতে পেলে দেয়। নৌকায় রাত কাটিয়ে সকালে মোহনগঞ্জ-কাদশাগঞ্জ হয়ে ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরে তারা।
গ্রেফতারকৃত তিন যুবকদের তথ্য অনুযায়ি হত্যার ১২ দিন পর শনিবার (২২ জুন) দুপুরে টগার হাওরে সুজন সরকারের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে মধ্যনগর থানা পুলিশ। রবিবার (২৩ জুন) ময়নাতদন্ত শেষে সুজনের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এ ব্যাপারে মধ্যনগর থানার ওসি সেলিম নেওয়াজ বলেন, সুজন সরকার খুন হওয়ার কোন ক্লু ছিল না। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে রহস্য উদঘাটন করে ঢাকার উত্তর বাড্ডা থেকে তিন যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ি হাওর থেকে সুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সুজন হত্যার দায় স্বীকার করায় তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর তৈরি করা করা হয়েছে।