স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজ ছাত্রীর পাত্রের বাড়ীতে অনশন!
মো. আলম কেষ-
সুনামগঞ্জ আদালতের আইনজীবী সহকারির বাড়িতে শনিবার রাত থেকে স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে অনশন করেছেন এক কলেজ ছাত্রী! তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উওর ইউনিয়নের জয়নাল আবেদীন জুয়েলের চারাগাঁও মাইজহাঁটির পৈতৃক বাড়িতে গত রাত শনিবার সাড়ে ৯টা থেকে অবস্থান নিয়ে অনশন করছেন সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে স্নাতকে পড়ুয়া কাকঁলী আক্তার রত্না নামের এক ছাত্রী।’ এদিকে দ্বিতীয় বিয়ের পিঁড়িতে বসার আর মাত্র একদিন বাকী থাকতে প্রেমিকা স্ত্রীর দাবি নিয়ে অনশনে অনঢ় থাকায় এযেন প্রেমিক জয়নাল ওরফে জুয়েলের বাড়া ভাতে ছাঁই ঢেলে দেওয়ার মত ঘটনাই ঘটিয়েছে সাবেক প্রেমিকা কাঁকলী। ’রাতভর থানা পুলিশকে দিয়ে জেল হাজতে ঢুকানোর হুমকি-ধামকী সহ নানা রকম মানসিক চাঁপ প্রয়োগ করলেও জুয়েলের বাড়ি থেকে রবিবার সকালে এ রিপোর্ট লিখা পর্য্যন্ত কাকলী তার সিদ্ধান্তে অনঢ় রয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার কলাগাঁও বাজারের পল্লী চিকিৎসক চারাগাঁও মাইজহাঁটি গ্রামের বরজু ওরফে বশির ডাক্তারের ছেলে জয়নাল আবেদীন জুয়েলের সাথে পাশ্ববর্তী শ্রীপুর কুঁড়ের পাড়া গ্রামের প্রাক্তন ইউপি সদস্য শাহনুর মিয়ার তৃতীয় কন্যা কাঁকলী আক্তার রত্না সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে লেখাপড়ার সুবাধে গত কয়েকবছর ধরে গোপনে মন দেয়া নেয়ার পর’ ২০১৫ সালে উভয়ের সম্মতিতে বিয়েও হয়। বিয়ের পর জেলা শহরে ভাড়াটিয়া বাসায় প্রায়ই স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে জুয়েল -কাঁকলী অবাধেই মেলামেশা করে আসছিলো।’
অপরদিকে জুয়েল ১০ জুলাই সোমবার পাশ্ববর্তী বিশ্বম্ভরপুরের শাহপুরে ফের দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাচ্ছে জানতে পেরে স্ত্রী স্বীকৃতি পেতে শনিবার রাতেই কাঁকলী জুয়েলের পিতৃলয়ে এসে উপস্থিত হয়ে অনশন বসে। ’ এ ঘটনাটি এলাকায় চাওর হতে শুরু করলে উৎসুক এলাকাবাসীও রাতে এমনকি রবিবার সকাল থেকে ভীড় জমান ওই পল্লী চিকিৎসকের বাড়িতে।’ সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী কাঁকলী আক্তার রত্না শনিবার মধ্যরাতে গণমাধ্যকর্মীদের সহায়তা চেয়ে মোবাইল ফোনে জানায়, আমি রাতে জুয়েলের বাড়িতে আসার পর জুয়েল তার বড় ভাই যাবের আহমদ জাবেদ ছাত্রলীগের বড় নেতা পরিচয় তুলে ধরে আমাকে পুলিশে ধরিয়ে দিবে বলে হুমকি ধামকী গালমন্দ করে কয়েকবার মারতেও আসে পরে সে থানায় গিয়ে তার ভাই জাভেদের প্রভাব খাঁটিয়ে রাতে দফায় দফায় আমি ও আমার অবিভাবকদের থানা পুলিশকে দিয়ে চাপ দিচ্ছে তাদের বাড়ি থেকে চলে যাবার জন্য, আর তা না করলে আমাকে নাকি রবিবার সকাল হলেই গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হবে।’ কাঁকলী আরো জানায়, জুয়েল প্রথমে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ২০১৪ আমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার পর এলাকার কয়েকজনকে স্বাক্ষী রেখে সুনামগঞ্জে ২০১৫ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারী ২ লাখ টাকা মোহরানায় বিয়ে করে আমার সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে, এখন সেই বিয়ে এবং প্রেমকে সে অস্বীকার করছে।
এ ব্যাপারে বওব্য জানতে আইনজীবী সহকারি দাবিদার জয়নাল আবেদীন জুয়েলের মোবাইল ফোনে(০১৭১৪-৯৯২৪৩০) যোগোযোগ করা হলে সে বলে, দেখেন তো ভাই আমি কী মশকিলে পড়লাম, আর মাত্র একদিন পর সোমবার বিশ্বম্ভরপুরের শাহপুরে আমার বিয়ের দিনক্ষণ ঠিকঠাক করা হয়ে গেছে এখন দেখি রাতে হঠাৎ করে এক মেয়ে আমাদের বাড়িতে এসে আমার নিকট স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবি করছে।’ কাঁকলীর সাথে প্রেম ও বিয়ের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জুয়েল তা অস্বীকার করে বলে, আমি তাকে চিনিই না। এরপর দূরে মোটর সাইকেলে লং ড্রাইভে আছি পরে কথা হবে বলেই জুয়েল তার মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন করে দেয়। উপজেলার কলাগাঁও মাইজহাটির বুরুজ ওরফে বশির ডাক্তারের বক্তব্য জানতে তার ব্যক্তিগত মোবাইল( ০১৭১৬৮২৫৫০৩) ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বললেন , সোমবার আমার ছেলে জুয়েলের অন্যত্র বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলেছি কেনাকাটাও প্রায় শেষ, লোকজনকে দাওয়াত করেছি বরযাত্রী ও বৌভাতের অনুষ্ঠানে থাকার জন্য এখন হটাৎ করে রাতে কাঁকলী নামের এক মেয়ে আমার বাড়িতে এসে জুয়েলের নিকট স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবি করছে, এটি ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই না।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তাহিরপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার বললেন, জুয়েল নামের এক যুবক তার বাড়িতে জোর করে শনিবার রাতে কাঁকলী নামের অপর এক যুবতী উঠেছে বলে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।’ জুয়েলের বাড়ি ত্যাগ করতে কাঁকলী ও তার অবিভাবকদের থানা পুলিশের পক্ষ্য থেকে চাঁপ দেয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, বিয়ের ডকুমেন্ট কিংবা কাগজ-পত্র থাকলে তা থানায় নিয়ে আসার জন্য বলেছি কোন ধরণের চাঁপ দেইনি।