সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ড ভূমিকম্পপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত
সুনামগঞ্জ :: সুনামগঞ্জ পৌরসভার ২, ৪ ও ৫নং ওয়ার্ডকে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ন্যাশনাল রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রাম। মঙ্গলবার সকাল সুনামগঞ্জ পৌরসভার আয়োজনে প্রকল্প অবহিতকরণ সভায় এই তথ্য জানান সংশ্লিষ্টরা। পৌরসভার অনুমোদন ছাড়া বিল্ডিং কোড না মেনে যত্রতত্র ভবন নির্মাণ, নিয়মনীতি না মেনে বহুতল ভবন নির্মাণ ও মাটির ধারণ ক্ষমতা পরীক্ষা না করে সনাতন পদ্ধতিতে বহুতল ভবন নির্মাণসহ একাধিক কারণে এই তিনটি ওয়ার্ডকে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের নতুন বহুতল ভবন ঝুঁকিমুক্ত নয় বলেও জানানো হয়। অচিরেই মাঠ পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করে জনসচেতনাতা বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সভায়। পৌর সভার প্যানেল মেয়র-২ সামছুজ্জামান স্বপন এর সভাপতিত্বে সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মোশাররফ হোসেন। বক্তব্য রাখেন ঢাকা ইউএনডিপি’র প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. কামাল হোসেন, কারিগরী সহায়তাকারী মেহেদী মোদাচ্ছের, ডিপার্টমেন্ট অব আরবান এন্ড রিজিওনাল লার্নিং বুয়েট-এর অধ্যাপক মোহাম্মদ শাকিল আক্তার, অধ্যাপক ইসরাত ইসলাম, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুনামগঞ্জ পৌরসভার এসডিও মো. নিজাম উদ্দিন। এসময় সুনামগঞ্জ পৌরসভার সচিব মাহমুদ আলম মামুন, কাউন্সিলর আহমেদ নুর, শেলী চৌহান ময়না, সৈয়দ ইয়াছিন নুর রশীদ, গোলাম সাবেরীন সাবু, জেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী ও পৌর এলাকার বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা সম্পর্কে ইউএনডিপি ঢাকার প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. কামাল হোসেন বলেন, ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে সুনামগঞ্জসহ দেশের ৪টি পৌরসভাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। পৌরসভার ২, ৪ ও ৫নং ওয়ার্ডকে অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা এই তিনটি ওয়ার্ডে কাজ করবো। ভূমিকম্প থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে হবে শহরের স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, মন্দির, মসজিদ এবং হাসপাতালকে। সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের নতুন ভবন ঝুঁকিমুক্ত নয়। তিনি বলেন ‘দুর্যোগ একা মোকাবেলা করা যায় না। দুর্যোগ মোকাবেলা করতে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করতে হবে। এ ব্যাপারে সচেতনতার বিকল্প নেই। সুনামগঞ্জের মাটির তলদেশ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমাদের বিশ্বাস বিল্ডিংকোড না মেনেই পৌরসভার অধিকাংশ বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে। কাজেই ঝুঁকিমুক্ত হতে হলে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে এবং বিল্ডিং কোড মেনেই বিল্ডিং নির্মাণ করতে হবে। ভারতের মেঘালয়ের পাশ্ববর্তী জেলা হচ্ছে সুনামগঞ্জ। ভূমিকম্পপ্রবণ সুনামগঞ্জ এলাকায় আমরা ১৬ মাস কাজ করব। আমরা সুনামগঞ্জবাসীর সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।’ অনুষ্ঠানে কম্পিউটার স্ক্রিনে ধারণকৃত বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত তুলে ধরেন ইউএনডিপির কারিগরী সহায়তাকারী মেহেদী মোদাচ্ছের।