উপাচার্য নিয়োগের পরও জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় প্রায় দুই বছর ধরে থমকে আছে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম। তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের কার্যালয়ে এক বৈঠকে জেলার ছয় এমপি জমির বিষয়ে প্রাথমিক ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। তারা ১৭ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে প্রস্তাবিত সুনামগঞ্জ সদর ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার মধ্যবর্তী আহসান মারা সেতুর পূর্ব দিকের উত্তর-দক্ষিণ পাশের জমি দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, ড. জয়া সেন গুপ্তা, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, বিরোধীদলীয় হুইপ পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি শামীমা শাহরিয়ার, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আবু নঈম শেখ ও রেজিস্ট্রার শহীদুল আলম উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আবু নঈম শেখ বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সুনামগঞ্জের ছয় এমপি জমির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। ১৭ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অধিগ্রহণের প্রস্তাব পাঠানো হবে।
পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি নির্বাচন নিয়ে বিল পাস হয়। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল জমি যেন সদর উপজেলার কাছাকাছি হয়। উপাচার্য ছাড়া বহুদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কাজ হয়নি। এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসক জমি দেখেছেন, সভায় তিনি সেই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। আমরা সবাই একসঙ্গে জমি দেখব। আশা করছি, ঐক্যবদ্ধভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ এগিয়ে নিতে পারব। মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, ‘দেখার হাওর’ পাড়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। আমরা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজসহ সুনামগঞ্জবাসীর কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন এগিয়ে নেব। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেখার হাওর পাড়ে অপেক্ষাকৃত উঁচু সরকারি জমি আছে, দুই উপজেলার মধ্যবর্তী স্থানে জেলা প্রশাসক জমির প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা সবাই মোটামুটি প্রস্তাবে একমত হয়েছি। এখন সরেজমিন দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর ওপর আমাদের আস্থা আছে। অতীতকে পেছনে ফেলে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর জাতীয় সংসদে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস হয়। তবে আইন পাসের সময়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়।
সংসদে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি নির্ধারণ নিয়ে আপত্তি জানান। এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান ‘দেখার হাওর’ লিখে আইন পাস হয়। কিন্তু বিশাল দেখার হাওরের কোথায় বিশবিদ্যালয় হবে, সেটি উল্লেখ না করায় এই জটিলতা রয়েই যায়। এরই মধ্যে গত ১৫ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য নিয়োগ পান অধ্যাপক মো. আবু নঈম শেখ। তিনি গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) গণিত বিভাগের প্রধান ছিলেন।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১৮৯ বার