বার্তা ডেক্সঃঃ‘রাস্তায় এখন ওকে দেখলে সবাই অভিনেতা নয়, অপরাধী হিসেবে দেখবে। ইন্ডাস্ট্রিতে ওর ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে দেয়া হলো। সবাই ওকে ঘৃণার চোখে দেখবে। ওর মানসিক অবস্থাও একদম ভালো নেই। ওকে সুস্থ করে তোলাটাই এখন আমার কাছে চ্যালেঞ্জ।’ অভিনেতা সৌগত বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে এভাবেই বললেন তার স্ত্রী নয়না পালিত। গত শনিবার দক্ষিণ কলকাতার একটি স্পা থেকে অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সৌগতকে। রোববার (১৮ অক্টোবর) আলিপুর কোর্টে জামিন পান এ অভিনেতা। জামিনে ছাড়া পেলেও তার মানসিক অবস্থার করুণ পরিস্থিতির কথা মিডিয়াতে তুলে ধরেন স্ত্রী নয়না। তিনি এবিপি আনন্দতে দাবি করেন তার স্বামীর সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সৌগতও জানান, তিনি ওই স্পা-তে প্রথমবারই যান। সেখানে ঢোকার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই তোলপাড় হয়ে যায় সবকিছু। তাকে গ্রেফতার করা হয় অকারণে।

তার স্ত্রী জানান সৌগত কোনো বাজে উদ্দেশ্যে ওই স্পা-তে যাননি। তিনি বলেন, ‘সামনেই পূজা। প্রত্যেকের মতোই আমি আর সৌগতও খুঁজছিলাম কোনো পার্লার বা স্পা-এ ভাল অফার চলছে কি না। আমরা তো দুজনেই অভিনয় করি, তাই নিজেদের পরিচর্যা করায় তো আমাদের নজর দিতেই হয়। সেরকমই দেশপ্রিয় পার্ক সংলগ্ন একটা স্পা থেকে ভাল অফার এসেছিল আমাদের কাছে। আমিই সৌগতকে বলেছিলাম, তুমি আগে খোঁজ নিয়ে এসো। আমার একটা স্ক্রিপ্ট রিডিং ওয়ার্কশপ ছিল শনিবার। আমাকে ড্রপ করে দিয়েই সৌগত সেখানে যায়।’ ‘আমি বিকেলে কাজের জায়গা থেকে বেরিয়ে দেখি, সৌগতর মেসেজ। তখন ও লিখেছিল, এখানে স্পা-এ রেড হচ্ছে। তুমি চিন্তা করো না আমায় ছেড়ে দেবে।’ ‘আমি তো চমকেই গিয়েছিলাম। কিন্তু ভাবলাম, যাই হোক ও তো এই প্রথম ওই স্পা-এ গেল, ওর তো কোনো দোষ নেই, ছেড়ে তো দেবেই। আমি তো জানতামই না সৌগতর সঙ্গে কী কী ঘটে গেছে। আমার কাছে তো বাড়ির চাবিও ছিল না। আমি বাড়ির সামনে অপেক্ষা করতে লাগলাম। ১ ঘণ্টা, ২ ঘণ্টা, ৩ ঘণ্টা। চিন্তা বাড়তে লাগল। কিন্তু ও কোথায় কিছুই বুঝছি না।’

‘সাড়ে দশটা নাগাদ টালিগঞ্জ থানা থেকে ফোন করল সৌগত। ও জানাল কোথায় কী অবস্থায় আছে। তখন ওর গলায় একটু আশার সুর। বলে, ওকে ওরা ছেড়ে দিতে পারে। তাহলে একসঙ্গেই ফিরে যাব। আমি থানায় যখন পৌঁছাই তখন দেখি থানার গেট লকড। দাঁড়িয়েই আছি, রাত ১১ টা নাগাদ এক পুলিশকর্মী বাড়ির চাবি দিয়ে চলে গেলেন। বলে গেলেন, বাড়ি চলে যান। রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ আবার সৌগত মেসেজ করে ওকে গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে ও লিখল। ওর কাছে ফোন রাখতে দেওয়া হচ্ছে না। উকিলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলল।’ ‘ভাবলাম, আরও একটু দাঁড়াই, যদি ওকে ছাড়া হয়। রাত ২ টো অবধি অপেক্ষা করি রাস্তাতেই। একা। আশেপাশে আরও কয়েকটি পরিবারের লোকজন। তারপর আড়াইটা নাগাদ বাড়ি ফিরে গেলাম। কী করব কিছুই বুঝতে পারলাম না।’

‘বাড়ি ফিরলাম। ভোর রাতে একবার এক মিনিটের জন্য ফোন। বলল, আলিপুর সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওকে। ১২টা নাগাদ আলিপুর কোর্টে তোলা হবে। উকিলের নম্বর মেসেজ করে। সকালে উকিলের সঙ্গে কথা হয়। তারপর পরের দিন জামিন হয়।’ স্বামীর বর্তমান অবস্থা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জানেন, একটা মানুষ যিনি একটা অফারের খবর পেয়ে গিয়েছিলেন স্পা-এ সার্ভিস নিতে, তাকে কি না বন্দির পোশাকও পরতে হল। আজ ওর সততা, ইমেজ সব প্রশ্নের মুখে। একদিনের খবরে এতজনের মন থেকে সব বিশ্বাস ভেঙে গেল! কী করে সুস্থ করব ওকে বলতে পারেন? সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্ত হোক, তাহলেই সব তথ্য সামনে আসবে।’-পূর্বপশ্চিমবিডি

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn