সড়ক দুর্ঘটনা চার মাসে নিহত ১৫৫২ জন
সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় চলতি বছর বেড়েছে। গত চার মাসে সারা দেশে এক হাজার ৩৭২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২১ নারী-শিশুসহ এক হাজার ৫৫২ জন নিহত ও তিন হাজার ৮৩২ জন আহত হয়েছেন। ১লা জানুয়ারি থেকে ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে এসব প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে, ২০১৬ সালের এই চার মাসে মোট এক হাজার ২৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৩৮৩ নারী-শিশুসহ এক হাজার ৩১৪ জন নিহত ও তিন হাজার ৩৯৩ জন আহত হন। এই হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনার হার গত বছরের তুলনায় এ বছর ১১ শতাংশ বেড়েছে। আর নিহত ও আহতের হার বেড়েছে যথাক্রমে ১৫ দশমিক ৮২ শতাংশ ও ১২ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির (এনসিপিএসআরআর) নিয়মিত মাসিক জরিপ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। মঙ্গলবার সংগঠনটি তাদের এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩৫০টি দুর্ঘটনায় ৫৪ নারী ও ৫৫ শিশুসহ ৪১৬ জন নিহত এবং এক হাজার ১২ জন আহত হয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৭২টি; এতে ৫৬ নারী ও ৫৮ শিশুসহ নিহত ও আহত হয়েছেন যথাক্রমে ৪২৭ জন ও এক হাজার ৯৪ জন। মার্চে ৩৩০টি দুর্ঘটনায় ৩৬২ জন নিহত ও ৮৬৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৪৯ জন নারী ও ৫৪টি শিশু রয়েছে। এপ্রিলে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩২০টি। এতে ৪৭ নারী ও ৪৮ শিশুসহ মোট ৩৪৯ জন নিহত হয়েছেন; এ সময়ে আহত হন ৮৬১ জন।
জাতীয় কমিটির পরিসংখ্যানে বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা চলতি বছরের চেয়ে ২০১৬ সালে তুলনামূলক কম ছিল। গত বছরের জানুয়ারিতে দুর্ঘটনা ঘটে ২৯৫টি; এতে ৪২ নারী ও ৫৭ শিশুসহ ৩৪০ জন নিহত এবং ৯৪২ জন আহত হন। ফেব্রুয়ারিতে ৩৪৯টি দুর্ঘটনায় ৪৯ নারী ও ৫৩ শিশুসহ ৩৫৬ জনের প্রাণহানি ঘটে; আহত হন এক হাজার ১২০ জন। মার্চে দুর্ঘটনা ঘটে ২৯৬টি; এতে ৩০৯ জন নিহত ও ৬২৬ জন আহত হন। নিহতের মধ্যে ৪১ নারী ও ৫১ শিশু রয়েছে। এপ্রিলে ২৯৬টি দুর্ঘটনায় ৫২ নারী ও ৩৮ শিশুসহ ৩০৯ জনের প্রাণহানি ঘটে; আর আহত হন ৭০৫ জন।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে কমেছিলো। তবে ২০১৭-এর শুরু থেকেই তা আবার বেড়ে যায়। গণপরিবহন খাতের অস্থিতিশীলতাই এর প্রধান কারণ বলে মনে করেন তিনি। আশীষ কুমার দে বলেন, দুর্ঘটনা হ্রাসসহ পরিবহন খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। সেগুলো হলো- চাঁদাবাজি বন্ধ, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগপত্র ও সাপ্তাহিক ছুটি প্রদান, বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও দৈনিক কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল ও জাল লাইসেন্সধারী চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, চালক ও সহকারীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক চিহ্নিতকরণ ও বেহাল সড়ক সংস্কার এবং বিদ্যমান মোটর যান চলাচল আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ।