নীতি পুলিশের হাতে এক ইরানি নারীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ চলছে ইরানজুড়ে। প্রতিবাদী নারীরা হিজাব পুড়িয়ে বিক্ষোভ করছেন। ইরানে এনিয়ে টানা ছয়দিন ধরে বিক্ষোভ চলছে। বিবিসি জানায়, গত মঙ্গলবার ওই নারীরা যখন হিজাবে আগুন দিচ্ছিলেন তখন উপস্থিত জনতা চিৎকার করে ও হাততালি দিয়ে তাদের উৎসাহ দেয়। পুলিশ বিক্ষোভ দমনে গুলি করছে। বুধবার পর্যন্ত অন্তত আট বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে নারীরাও রয়েছেন।
গত সপ্তাহে ইরানের কুর্দিস্তান থেকে রাজধানী তেহরানে আসা ২২ বছর বয়সী নারী মাশা আমিনিকে হিজাব আইন লংঘনের দায়ে গ্রেপ্তার করেছিল নগরীর নীতি পুলিশ। গত শুক্রবার তাদের হেফাজতে মাশার মৃত্যু হয়। মারা যাওয়ার আগে ওই তরুণী তিনদিন কোমায় ছিলেন। আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে প্রথমে ইরানের কুর্দি অধ্যুষিত উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে বিক্ষোভ শুরু হয়। যা ক্রমে দেশটির ৫০টির বেশি শহর ও নগরে ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৯ এ পেট্রলের দাম নিয়ে হওয়া বিক্ষোভের পর দেশটির শুরু হওয়া সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ বিক্ষোভ এটি। বুধবার ইরানি কতৃপক্ষ ও একটি কুর্দি অধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠী চলমান বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নতুন বিধিনিষেধও আরোপ করা হয়েছে।
সরকারি সূত্রগুলোর ভাষ্য অনুযায়ী, বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা আট জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন পুলিশ সদস্য ও সরকারপন্থি মিলিশিয়া বাহিনীর একজন সদস্য রয়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। তবে কুর্দি অধিকার আন্দোলন গোষ্ঠী হেনগাও বলেছে, এ পর্যন্ত ১০ প্রতিবাদকারী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বুধবার তিন জন নিহত হয়েছে বলেও দাবি করে তারা। তারা সবাই নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। আমিনি তার ভাইয়ের সঙ্গে তেহরান গিয়েছিলেন। বিবিসি জানায়, হিজাব আইন ঠিকমত না মানার অভিযোগে নীতি পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর ডিটেনশন সেন্টারে তিনি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান এবং কোমায় চলে যান।
মানবাধিকার বিষয়ে ইরানে জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার নাদা আল-নাশিফ বলেন, তারা জানতে পেরেছেন নীতি পুলিশ আমিনির মাথায় লাঠি দিয়ে মেরেছে এবং তাদের একটি গাড়ির সঙ্গে আমিনির মাথা জোরে ঢুকে দিয়েছে। নীতি পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য এইসব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। তাদের দাবি, আমিনি ‘হঠাৎই হৃদরোগে আক্রান্ত হন’।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১৫৫ বার