সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন নিয়ে সন্দেহ কাটছেনা
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের সময় মাত্র ৬দিন বাকি। কিন্তু এ নিয়ে তেমন তৎপরতা নেই। বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সম্মেলন রেখে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করছেন দায়িত্বশীল নেতারা। কেন্দ্র নির্ধারিত ১১ মার্চে সম্মেলন হবে কিনা এ নিয়ে নানা অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জল্পনা-কল্পনা শেষে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস.এম. জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত পত্রে জেলার সভাপতি, স¤পাদককে ১১ মার্চ সম্মেলন করার নির্দেশ দেয়া হয়। জেলা ছাত্রলীগের নিকট প্রেরিত চিঠিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক সুনামগঞ্জ জেলা শাখাকে আরো গতিশীল ও বেগবান করার লক্ষ্যে এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংগঠন সূত্র জানায়, সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার প্রায় ১৩দিন পেরিয়ে গেলেও জেলা ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা আনুষ্ঠানিক কোন কার্যক্রম গ্রহণ করেন নি। এখন পর্যন্ত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক ও কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়নি।
এদিকে আর মাত্র ৬দিন বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত সম্মেলনের স্থান ও অতিথি ঠিক করতে পারেননি জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ। জেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে তাদের আনুষ্ঠানিক সভা হয়নি। ফলে অনেকটাই ঝুলে গেছে সম্মেলন হওয়ার বিষয়টি।
জেলা ছাত্রলীগের দুর্যোগ ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আলম পিয়াল বলেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্দেশ দিয়েছেন সম্মেলন আয়োজন করার। আশা করছি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশনা মতে নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
ছাত্রলীগ নেতা দেওয়ান সিজান এনায়েত রেজা বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন হচ্ছে না, অনেক উপজেলায় কমিটি হচ্ছে না। ছাত্রলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণ ফিরে আসবে। একটি সুন্দর সম্মেলনের মাধ্যমে এস এম জাকির হোসাইন ভাই নতুন নেতৃত্বের হাতে জেলা ছাত্রলীগের দায়িত্ব তোলে দেবেন এমনটাই আশা করছি আমরা।
ছাত্রলীগ নেতা দীপঙ্কর কান্তি দে বলেন, আমরা চাই নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন হোক। এই সম্মেলনের মাধ্যমেই প্রকৃত ছাত্র নেতৃত্ব বেরিয়ে আসুক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
জেলা ছাত্রলীগের সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক হাবিব আল হাসান তপু বলেন, ১১ মার্চ সম্মেলনের জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সম্মেলন হলে ত্যাগীদের স্থান হওয়ার পাশাপাশি ঝিমিয়ে পড়া সংগঠনে প্রাণ ফিরে আসবে।
জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আরিফ-উল-আলম বলেন, কেন্দ্র থেকে আগামী ১১মার্চ জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন নির্ধারিত হওয়ায় তৃণমূলে আনন্দের জোয়ার বইছে। এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সুযোগ্য সাধারণ স¤পাদক এসএম জাকির হোসাইন ভাইয়ের প্রতি। এর আগে দু’বার কেন্দ্র থেকে সম্মেলনের নির্দেশ দেয়া হলেও জেলা ছাত্রলীগ সম্মেলনের আয়োজন না করায় সাধারণ নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আশাকরি এবার নির্দিষ্ট তারিখেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফজলে রাব্বী স্মরণ বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, সুনামগঞ্জ-২ আসনে উপনির্বাচন নিয়ে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি। তবে শত ব্যস্ততার মধ্যেও কেন্দ্র নির্ধারিত তারিখে সম্মেলন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করছি।
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক দারুস সালাম শাকিলের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি এর আগে জানিয়েছিলেন, সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলনের আগেই প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হবে। নেতৃত্বে আসতে ইচ্ছুক নেতাদের কাছ থেকে সিভি গ্রহণ করা হবে। যোগ্যদের খুঁজে আনা হবে নতুন কমিটিতে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে ফজলে রাব্বী স্মরণকে সভাপতি ও রফিক আহমেদ চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্র। পরবর্তীতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ঠিক রেখে ২০১৪ সালে ১২১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া এই কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন পদপ্রত্যাশী ডজনখানেক নেতা।