১৭ শিশুকে অপহরণের পর পাচারকারী চক্রের মূল হোতা গ্রেফতার
বিভিন্ন সময় ১৭ শিশুকে অপহরণ ও পাচাকারি চক্রের মূল হোতা সাহাবুদ্দিন ওরফে সেলিম ওরফে সাহেদকে (৪৫)গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১। বুধবার রাতে রাজধানীর গুলিস্তান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে একটি পাসপোর্ট ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের আদমজীনগর এলাকায় অবস্থিত র্যাবের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব-১১ এর সিও লে.কর্নেল কামরুল হাসান এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকা থেকে শিশু বায়েজীদকে (৮) অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা বয়েজীদের মায়ের কাছে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপন না দিলে বায়েজীদকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়। পরে র্যাব চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি শিশুটিকে রুপগঞ্জ থেকে উদ্ধার করে এবং অপহরণের সঙ্গে জড়িত ছয় জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, জাকির হোসেন, তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম, বানেছা, টিটু, মোহাম্মদ হোসেন সাগর, জেসমিন বেগম ও আসলাম।
তিনি আরও জানান, ‘আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে তাদের দল নেতার নাম সাহাবুদ্দিন ওরফে সাহেদ। তারা এ পর্যন্ত ১৭ জন শিশুকে অপহরণ করেছে। যার মধ্যে ৯ জনকে মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে। কয়েকজনকে বিদেশে পাচার করেছে। এছাড়া মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ বা অচেতন করার ওষুধ খাওয়ানোর কারণে দুই শিশু মারা গেছে। যাদের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। র্যাবের সিও কামরুল হাসান আরও জানান, র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আসামি সাহাবুদ্দিন স্বীকার করেছে সে একজন পেশাদার শিশু অপহরনকারী। সে এক সময় টেম্পু ও ট্রাক চালাতো। ১৯৯৯ সালে বন্দরে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়। মুক্তি পেয়ে ২০০৬ সালে নিজের নাম পরিবর্তন করে সেলিম নামে পাসপোর্ট করে সৌদি আবর চলে যায়। সেখানে মাত্র ২৭ দিন থাকার পর দেশে ফেরত এসে ফতুল্লায় একটি সিমেন্ট কোম্পনিতে ড্রাইভার হিসেবে চাকরি নেয়। সেখানে ৪শ’ ব্যাগ সিমেন্ট আত্মসাতের অভিযোগে তার নামে ফতুল্লা থানায় মামলা হলে আত্মগোপন করে চাঁদপুরে চলে যায়। সেখানে গিয়ে নিজের শালিকে বিয়ে করে পালিয়ে ঢাকায় চলে আসে। ঢাকায় এসে ট্যাক্সি চালানোর পাশপাশি শিশু অপহরণ ও পাচারকারি চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।