নতুন জাতীয়করনকৃত কলেজ শিক্ষকদের ক্যাডার বহির্ভূত রেখে ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে স্বতন্ত্র নীতিমালা তৈরির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন সিলেটের সকল সরকারি কলেজের শিক্ষকেরা। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোববার (২৬ নভেম্বর) সকাল থেকে সিলেটের সকল সরকারি কলেজে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে কর্মবিরতি পালন করছেন বিসিএস শিক্ষা সমিতির শিক্ষকরা। সম্প্রতি সরকারিকরণ করা উপজেলা পর্যায়ের ২৮৫টি কলেজের শিক্ষকেরা যাতে ক্যাডার মর্যাদা না পান সেই দাবিতে তারা কর্মবিরতি পালন করছেন। এ কর্মবিরতি সোমবার (২৭ নভেম্বর) পর্যন্ত পালন করবেন তারা। আন্দোলনরত এসব শিক্ষকের দাবিসমুহ হলো- শিক্ষা ক্যাডার আত্তীকরণ বন্ধে নতুন কোনো কলেজ জাতীয়করণ আদেশের আগেই ২০০০ বিধিসহ ক্যাডারে আত্তীকরণ সংক্রান্ত সব বিধি বাতিল করে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এবং বিসিএস নিয়োগ বিধি ১৯৮১ এর কোনো ধরনের ব্যত্যয় না ঘটিয়ে জাতীয়করণের তালিকাভুক্ত কলেজ শিক্ষকদের ক্যাডার বহির্ভূত রেখে তাদের নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতি সংক্রান্ত আলাদা বিধিমালা প্রণয়ন করা, “জাতীয় শিক্ষানীতি’ ২০১০” জাতীয় সংসদে অনুমোদনের পর বিধিমালা প্রণয়ন ছাড়াই যে সব কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে সেসব কলেজের শিক্ষকদেরকেও ক্যাডার বহির্ভূত রাখা, এবং “জাতীয়করণের পর সংশ্লিষ্ট কলেজ শিক্ষকদের নিজ প্রতিষ্ঠানেই রাখা, অন্যত্র বদলী হতে পারবেন না” মর্মে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন প্রদান করার পরও সদ্য জাতীয়করণকৃত কলেজের যে সব শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে তাদের বদলি আদেশ বাতিল করা। এদিকে সৃষ্ট এ পরিস্থিতিতে রোববার ও সোমবার সকল পরীক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান, পার্ট-৩) বিশেষ ও স্নাতক কোর্সের রোববারে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সোমবার স্নাতক পরীক্ষা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ পাননি এই রকম শিক্ষকদের ক্যাডার মর্যাদা দেওয়া হলে, তা যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে ২৪ নভেম্বর এই কর্মবিরতি পালনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকদের সংগঠন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। নিয়োগ বিধিমালা না করে নতুন করে কলেজ জাতীয়করণ করা হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশনে যাবারও হুমকি দিয়েছেন তারা। এ ছাড়া অবিলম্বে তাদের দাবি মানা না হলে আগামী ৬, ৭ ও ৮ জানুয়ারি একইভাবে কর্মবিরতি পালন করবেন ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকেরা। ওই সময়ও পরীক্ষা স্থগিত করা হতে পারে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়। উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ের ২৮৫টি বেসরকারি কলেজকে সরকারিকরণের ঘোষণা দিয়েছেন। অধিকাংশের ‘ডিড অফ গিফট’ শেষ হয়েছে। বর্তমানে দেশে সরকারি কলেজ রয়েছে ৩৩৫টি। এর মধ্যে পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষা ক্যাডার সদস্য আছেন প্রায় ১৫ হাজার। ২৮৫টি কলেজের প্রায় ১২ হাজার শিক্ষক আত্তীকৃত হওয়ার কথা রয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn