জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎযন্ত্র ও তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, শিক্ষার্থীরা যে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন  করছে তা অত্যন্ত যৌক্তিক। চাকুরী ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ কোটা কোনক্ষেত্রেই যৌক্তিক নয়। সরকারের উচিত তাদের দাবি মেনে নিয়ে কোটা কাঠামোর সংস্কার করা।সোমবার (৯ এপ্রিল) শাবি ক্যাম্পাসে একটি সংগঠনের অনুষ্ঠানে এসে তিনি সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে এ কথাগুলো বলেন। এ সময় তিনি আন্দোলনকার ীদের উপর পুলিশের হামলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ড. জাফর ইকবাল বলেন, আমি কোটার বিরোধী নই। কিন্তু আমি যা শুনেছি তা হলো বর্তমানে মেধাবীদের থেকে বিভিন্ন জায়গায় কোটাপ্রাপ্তদের সংখ্যা বেশী। চাকুরী ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ থেকে শুরু করে এর অধিক কোটা কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। এই অনুপাতটাকে কমিয়ে আনা প্রয়োজন। তা না হলে মেধাবীদের মূল্যায়ন হবে না। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানের কথা বারবার উল্লেখ করে বলেন, আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবনের কথা না ভেবে আমাদেরকে একটি দেশ উপহার দিয়েছেন। অথচ তারাই একটা বিরাট সময় ধরে অবহেলিত ছিলেন। তাদের জীবনযাত্রার মান সবার থেকে ভালো হোক আমরা সবাই চাই। তবে তাদেরকে সুবিধা দিতে গিয়ে আমরা যেন তাদেরকে অসম্মানিত না করি। আজকে কোটায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, যার ফলে মনে হচ্ছে আমরা তাদেরকে অপমানিত করছি। অথচ তাদেরকে অসম্মানিত করার এ সুযোগটা আমরা নিজেরাই তৈরি করে দিয়েছি।
কোটা পদ্ধতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও আগে কোটা ছিল না। এখন বিভিন্ন রকম কোটা চলে আসছে। কোটা যতো কম থাকা যায় ততোই ভালো। আর একটি কোটা শুধু জীবনে একবারই ব্যবহার করার সুযোগ থাকা উচিত বলে মনে করেন দেশবরেণ্য এই অধ্যাপক।এছাড়া আন্দলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের নির্যাতনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পুলিশের কোনোভাবেই উচিত হয়নি শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলা। তিনি বলেন, আমার সাথেও পুলিশ থাকে, তাই এর সমালোচনাটা করাটা একটু কঠিন। তবে আগে আমরা দেখতাম ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকতে গেলে প্রক্টরের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হত। প্রক্টরে র অনুমতি পেলে পুলিশ ঢুকতে পারতো। এখন বিভিন্ন ক্যাম্পাসে পুলিশের স্থায়ীভাবে ক্যাম্প করে দেয়া হচ্ছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক ক্ষতিকর একটি বিষয়। শিক্ষার্থীদের উপর হামলা না করে পুলিশ বিষয়টাকে অন্যভাবে সমাধান করতে পারতো বলে মনে করেন এই অধ্যাপক। ড. জাফর ইকবাল বলেন, যারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত তাদেরকে সুযোগ করে দিতে গিয়ে যদি উল্টো তাদেরকে অসম্মান করি তাহলে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের বিষয়টা মনে রাখা উচিত শিক্ষার্থীরা কোটার বিরুদ্ধে নয় বরং কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন করছেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn