অভিযোগ নিয়ে বিসিবিতে ক্রিকেটার শহীদের স্ত্রী
তার অভিযোগ, সে (শহীদ) সবসময় চেয়েছে দ্বিতীয় সন্তান নষ্ট করে ফেলতে। এজন্য ও আমার পেটে লাথিও মেরেছে। কিন্তু আমি নষ্ট করিনি। আমাদের মেয়ের জন্ম হয় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে। হাসপাতালে মোট এক লাখ দশ হাজার টাকা লেগেছিল। কিন্তু ও এক টাকাও দেয়নি। কোনও খোঁজখবরও নেইনি। আমি আমার নিজের স্বর্ণ বন্ধক রেখে টাকা পরিশোধ করেছিলাম। তার দাবি, শহীদ মূলত টাকা পয়সা দিয়ে আমাকে ডিভোর্স দিতে চাচ্ছে। কিন্তু আমি তো এটা চাই না। আমি বাচ্চাদের মুখের দিকে তাকিয়ে সংসার করতে চাই। আমি হয়তো বাচ্চাদের অন্যান্য সবকিছু দিতে পারব। কিন্তু বাবার ভালোবাসা তো আর দিতে পারব না। ডানহাতি মিডিয়াম ফাস্ট বোলার শহীদ ২০১৫ সালের এপ্রিলে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন। এখন পর্যন্ত তিনি পাঁচটি টেস্ট ও একটি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। টেস্টে পাঁচটি ও টি-টোয়েন্টিতে একটি উইকেট পেয়েছেন। তবে ওয়ানডে ক্রিকেটে এখনও দলে জায়গা হয়নি তার।
সর্বশেষ গত নভেম্বরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে খেলেন শহীদ। ইনজুরিতে পড়ায় এরপর আর তার মাঠে ফেরা হয়নি। ছয় বছরের দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে এবং এক মেয়ের জনক শহীদ। এর মধ্যে ছেলের বয়স তিন এবং মেয়ের বয়স এক বছরের কিছু কম। ২০১১ সালের ২৪ জুন মুন্সীগঞ্জের মেয়ে ফারজানা আক্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় নারায়ণগঞ্জের ছেলে ক্রিকেটার মোহাম্মদ শহীদের।
‘আমি শুধু তার যৌন বস্তু হয়ে রইলাম’
তিনি বলেন, ‘এমনও হয়েছে, গত বছরের পবিত্র রমজান মাসে একদিন ইফতারের ঠিক ১০ মিনিট আগে আমার রোজা নষ্ট করে ইচ্ছের বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করে।’ ফারজানা আক্তারের বর্ণনায় উঠে এসেছে তাদের গর্ভের সন্তান নষ্টে শহীদের চাপ দেওয়ার প্রসঙ্গও, ‘দ্বিতীয় সন্তান গর্ভে এলে তা নষ্ট করার জন্য চাপ দিতেন শহীদ এবং সেই কথা না মানায় আরো বেশি নির্যাতন চলতে থাকে আমার ওপর।’ অভিযোগনামায় ফারজানা আক্তার বলেন, ‘২০১১ সালের ২৪ জুন ক্রিকেটার মোহাম্মদ শহীদের সঙ্গে আমার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। সে সময় শহীদের পারিবারিক অবস্থা ভালো ছিল না। কিন্তু আমাদের সুখের সংসার ছিল। বিয়ের প্রথম তিনটি বছর আমাদের ভালো যায়। শহীদ তখন নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় ক্লাবে খেলাধুলা করত। ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজে অভিষেক হয় আমার স্বামী মোহাম্মদ শহীদের। ধীরে ধীরে সে তারকাখ্যাতি পেতে শুরু করে।’
স্ত্রীর দাবি, এরপর থেকেই শহীদ বললে যান। বদলাতে থাকে তার আচরণও। দিনকে দিন স্ত্রীর প্রতি শহীদের আগ্রহ কমতে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অসংখ্য তরুণীর সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে শহীদ। একাধিক তরুণীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতে শুরু করে। বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় সে। এসব নিয়ে বলার পরই তার ওপর নির্যাতন বেড়ে যায় শহীদের। বাধ্য হয়ে চলতি বছরের ২৩ জুন ফারজানা বাবার বাড়ি যেতে বাধ্য হন বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
বিসিবি সভাপতির কাছে ন্যায়বিচার চেয়ে তিনি বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘আমি আমার দুই সন্তান নিয়ে স্বামীর সংসারে ফিরে যেতে চাই এবং স্ত্রীর পূর্ণ অধিকার নিয়ে স্বামীর সংসার করতে চাই। বাবা ছাড়া আমার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। অন্তত আমার দুই সন্তানের বিষয়টি বিবেচনা করে আপনি দয়া করুণ, ন্যায়বিচার করুন।’ বিসিবি কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিয়ে সাংবাদিকদের সামনে শহীদকে ফোন দেন তার স্ত্রী ফারজানা। এ সময় শহীদ ফরজানাকে বলেন, ‘সংসার করার ইচ্ছে থাকলে মিরপুরে যেও না।’ পরে ফারজানা আক্তারের অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ শহীদ বলেন, ‘এসব মিথ্যা। আমাকে হয়রানি করতে এসব করা হচ্ছে।’