ব্যাংকে এক লাখ টাকার মালিকদের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সম্পদশালী বললেও মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মনে করেন, এই সিদ্ধান্তে আসা সঠিক নয়। তিনি বলেছেন, ‘এক লাখ টাকাকেই তিনি (অর্থমন্ত্রী) বল265ছেন বিত্তবানের মাপকাঠি। কিন্তু আজকের দিনে এক লক্ষ টাকা কোনো টাকা নয়।’ বুধবার জাতীয় সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে এই কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী। তিনি ব্যাংক বা সঞ্চয়পত্রে যারা ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় করে রেখেছেন, তাদের ওপর করারোপ না করার দাবি জানান।
গত ১ জুন সংসদে উপস্থাপিত বাজেট প্রস্তাবে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে এক লাখ টাকার বেশি ব্যাংক হিসাবে আবগারি শুল্ক বাড়ানো নিয়ে। অর্থমন্ত্রী এক লাখ টাকার ঊর্ধ্ব থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত এই শুল্ক ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা করেছেন। একইভাবে বাড়ানো হয়েছে এর ঊর্ধ্বসীমার শুল্ক। কিন্তু আবার ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত আগে যে ১৫০ টাকা করে নেয়া হত সেটি অব্যাহতির প্রস্তাব করেছেন তিনি। বাজেট প্রস্তাবের পর করা সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকে যারা এক লাখ টাকা রাখেন তারা যথেষ্ট সম্পদশালী বলেই তিনি মনে করেন এবং এই বিবেচনায় এদের শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন তিনি।

তবে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী এর বিরোধিতা করছেন। তিনি বলেন, ‘যেখানে চার লক্ষ কোটি টাকার ওপর বাজেট, সেখানে এক লক্ষ টাকার ওপর করারোপ করা কখনই সমীচীন বলে মনে করি না।’ মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা যে বাজেট প্রস্তাব করেছি তার বিরোধিতা করা নৈতিকতাবিরোধী। আবার একজন সংসদ সদস্য হিসেবে এ দেশের মানুষের পক্ষে কথা বলার জন্য আমরা নির্বাচিত হয়েছি বা দায়িত্ব পালন করছি, সেজন্য যেসব বিষয় সাধারণ মানুষের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে বা তারা কষ্টভোগ করবে সেগুলো লাঘব করার জন্য কথা বলতেই হয়।’ মোজাম্মেল হক বলেন, বিশেষ করে যারা অল্প আয়ের লোক, তারা কিছু টাকা পয়সা পায়, শেষ জীবনের জন্য তারা কিছু টাকা সঞ্চয় করে রাখে। এর ওপর যদি ট্যাক্স আরোপ করা হয়, তাহলে তা সঠিক হবে না।’

মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, একটা সিলিং দেয়া হোক, এত টাকার ওপর হলে করারোপ করা যাবে। আমার দাবি ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যারা সঞ্চয়পত্র কিনবে, তাদের ওপর কোনো করারোপ করা হবে না। এর ওপরে যাদের টাকা আছে, তাদের ওপর আরও করারোপ করা হোক।’ ‘দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে বিত্তবানদের অনেক বেশি কর দিতে হয়। আমাদের দেশে তারা দেয় অল্প। আমাদের গরিবদের অব্যাহতি দিয়ে বা নিম্নআয়ের মানুষদের অব্যাহতি দিয়ে যারা ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ওপর আরও করারোপ করা হোক, কোনো সমস্যা নেই’-বলেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী।

f

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn