আল-হেলাল-

সুনামগঞ্জে হাওরে হাজার কোটি টাকার ফসলহানি ও ঠিকাদারের অবহেলার গাফিলাতি নিয়ে জেলা প্রশাসন জরুরী সভার আয়োজন করে। সভায় মন্ত্রী-সাংসদের উপস্থিতিতে সম্মেলন কক্ষে বাকবিতন্ডা শুরু হয়।রবিবার দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এই জরুরী সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ-৩ আসেনর সাংসদ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। সভায় অর্থ পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমি সরকারে পক্ষ থেকে এসেছি। এই সভায় যা আলোচনা হবে সব সরকারকে অবহিত করবো। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য যা যা করার দরকার সরকারের পক্ষ থেকে করা হবে। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্তা,সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য এডভোকেট শামসুন্নাহার বেগম শাহানা, পানি উন্নয়ন বোডের্র প্রধান প্রকৌশলী মে. আবদুল হাই, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আয়ূব বখত জগলুল,পুলিশ সুপার মোঃ বরকতুল্লাহ খান,জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবীর ইমন,কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শামীমা শাহারিয়ার,দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম,জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আব্দুল মনাফ,ছাতক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওলিউর রহমান বকুল ও সুনামগঞ্জ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক কামরুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ। সভায় বক্তারা তদন্তের আগে ঠিকাদার-পিআইসিদের কোনো বিল না দিতে সাংসদদের দাবি জানান। এসময় মন্ত্রী ও সাংসদদের উপস্থিতিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে উপস্থিত জনপ্রতিনিধি, কৃষক প্রতিনিধিদের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। সম্মেলন কক্ষে উচ্চস্বরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কয়েক দফা বাকবিতান্ডার ঘটনা ঘটে। পরে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সভায় বক্তারা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে সুনামগঞ্জে হাওরে হাজার কোটি টাকার ফসলহানির পেছনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তা, বাঁধের কাজের ঠিকাদার,ভাগীদার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) গাফিলতি দায়ী বলে উল্লেখ করেন জেলার সব সাংসদ, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার লোকজন। এদিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জরুরী সভা চলাকালীন সময়ে জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ের বাহিরে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড। পরে প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান এসে দোষীদের বিচারের আশ্বাস দিলে মুক্তিযোদ্ধরা বিক্ষোভ কর্মসূচী প্রত্যাহার করেন।একই দাবীতে জেলা ও উপজেলার শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরা শহরের আলফাত উদ্দিন স্কয়ারে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন। উল্লেখ্য, গত ৩ সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাত, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে সুনামগঞ্জের ৯০ ভাগ ফসল তলিয়ে যায়। এই ঘটনায় জেলাজুড়ে কৃষকদের আন্দোলন কর্মসূচী অব্যাহত আছে।

 

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn