আওয়ামী লীগে ‘প্যারাসাইট’ ঢুকেছে: কাদের
নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ক্ষমতাসীন দলে প্যারাসাইটস ঢুকে গেছে। এরা নিজেদের ক্ষতি করার পাশাপাশি সুযোগ বুঝে মাইনরিটির ওপরও হামলা করছে’- বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটউটে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের এসব কথা বলেন। কাদের বলেন, ‘গোবিন্দগঞ্জের ঘটনা, নাসিরনগরের ঘটনা, আরও কিছু ঘটনা আছে। এগুলো মিথ্যা নয়। কীভাবে ঘটেছে তা ক্ষতিয়ে দেখলে ভয়াবহ কিছু চিত্র আছে। যারা এসব ঘটিয়েছে তারা খারাপ লোক। খারাপ লোককে খারাপভাবে চিহ্নিত করবেন। এটা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোনো নীতি নয় এটি আমি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই।’ এই পরজীবীরা কেবল সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করছে না মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শুধু হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিষ্টানদের ওপর নয় তারা মুসলমানদের উপরও অত্যাচার করে। এটা শুধু মাইনরিটি ব্যাপার হিসেবে দেখবেন না। এই সব ঘটনা আজকে একটা সুবিধাভোগী লোক রাজনীতির নামে এদেশে কিছু নেতা আছে যাদের নীতি নৈতিকতার বালাই নেই। ক্ষমতার জন্য তারা যেকোন অপকর্ম করতে দ্বিধা করে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনাদেরকে আমি সংখ্যালঘু বলতে রাজি নয়। এই শব্দটি আমি পছন্দ করি না। আপনি কেন মাইনরিটি। এই দেশের সংবিধানে আপনার অধিকার আছে। আপনার ভোটাধিকার আছে। মুসলমানের যে অধিকার সমান অধিকার আপনারও। আপনারা এটা বলে নিজেদের দুর্বল করে দেন। লড়াইয়ের আগেই হেরে যান।’ সম্মেলনে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্যপরিষদের নেতারা। এসব দাবির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমি আপনাদের দাবির বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবো। তবে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাটা আমি জানি। উনি নারী এবং মাইনরিটি নেতৃত্ব বেশি পছন্দ করেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে বিএনপির সমালোচনারও জবাব দেন কাদের। তিনি বলেন, ‘চুক্তি না হওয়ার আগেই আপনি (মির্জা ফখরুল) বলছেন এটা দেশবিরোধী চুক্তি। চুক্তিই হল না আর আপনি বলছেন দেশবেরোধী। অন্ধকারে কেন ঢিল ছুড়ছেন। এমওইউ হবে। সেটা দেখুন। এরপর যুক্তিতর্ক দিয়ে কথা বলুন।’ ভারতের কাছ থেকে তিস্তাসহ অভিন্ন সব নদীর হিস্যা বুঝে নেওয়া সময়ের ব্যাপার বলেও মন্তব্য করেন কাদের। তিনি বলেন, ‘রাজ্য সরকারকে সঙ্গে নিয়েই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার করতে চায়। কারণ নদীটা রাজ্যের। এটা সংবিধানে লেখা আছে। আবার আন্তর্জাতিক চুক্তির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার চাইলে এককভাবে করতে পারে। কিন্তু এটা গণতান্ত্রিক নয়। ভারত গণতান্ত্রিকভাবেই কাজ করতে চায়। এটা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সব কিছুই হবে।’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত। নবম জাতীয় সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন তুলে ধরেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্ত।