বার্তা ডেক্সঃঃআজ শুভ বড়দিন। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের দিন। এই দিনে খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। খ্রিস্টানদের বিশ্বাস অনুসারে, ডিসেম্বরের ২৫ তারিখের ঠিক নয় মাস আগে মেরির গর্ভে প্রবেশ করেন যিশু। সম্ভবত, এই হিসাব অনুসারেই ২৫ ডিসেম্বর তারিখটিকে যিশুর জন্ম তারিখ ধরা হয়। বড়দিন খ্রিষ্টীয় ধর্মানুষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও, বিশ্বময় একাধিক অ-খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও বড়দিন উৎসব পালন করে। বড়দিন উদযাপনে উপহার দেওয়া, সংগীত, বড়দিনের কার্ড বিনিময়, গির্জায় ধর্মোপাসনা, ভোজ, এবং বড়দিনের বৃক্ষ, আলোকসজ্জা, যিশুর জন্মদৃশ্য এবং হলি সমন্বিত এক বিশেষ ধরনের সাজসজ্জার আয়োজন করা হয়। যুগ যুগ ধরে বড়দিন উপলক্ষে ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয়ের একটি বিশেষ মৌসুম চলে আসছে। যদিও মহামারি কোভিডের কারণে এবারের বড়দিনের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারত ও বাংলাদেশেও বড়দিন রাষ্ট্রীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়।

যিশু খ্রিষ্টের জন্মোৎসবকে বাংলায় বড়দিন নামকরণ প্রসঙ্গে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, মর্যাদার দিক থেকে এটি একটি বড়দিন। যিশু যেহেতু বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য ধর্ম ও দর্শন দিয়ে গেছেন, বিশ্বব্যাপী বিশাল অংশের মানুষ তার দেওয়া ধর্ম ও দর্শনের অনুসারী। যিনি এত বড় ধর্ম ও দর্শন দিলেন ২৫ ডিসেম্বর তার জন্মদিন। সে কারণেই এটিকে বড়দিন হিসেবে বিবেচনা করে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রেই বড়দিন একটি প্রধান উৎসব এবং সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। তবে চীন (হংকং ও ম্যাকাও বাদে), জাপান, সৌদি আরব, আলজেরিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, ইরান, তুরস্ক ও উত্তর কোরিয়ার মতো কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দেশে বড়দিন সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয় না। ২৫ ডিসেম্বর অধিকাংশ দেশে, প্রতি বছর বড়দিন পালিত হলেও রাশিয়া, জর্জিয়া, মিশর, আর্মেনিয়া, ইউক্রেন ও সার্বিয়ার মতো কয়েকটি ইস্টার্ন ন্যাশানাল চার্চ ৭ জানুয়ারি তারিখে বড়দিন পালন করে থাকে।

সাংস্কৃতিক ও জাতীয় ঐতিহ্যগত পার্থক্যের কারণে, দেশ ভেদে বড়দিন উৎসব উদযাপনের রূপটিও ভিন্ন হয়ে থাকে। জাপান ও কোরিয়ার মতো দেশে খ্রিষ্টানদের সংখ্যা আনুপাতিকভাবে কম হলেও বড়দিন এদের একটি জনপ্রিয় উৎসব। বড়দিন উপলক্ষে এসব দেশে উপহার প্রদান, সাজসজ্জা, ও বড়দিনের বৃক্ষের মতো বড়দিনের ধর্মনিরপেক্ষ দিকগুলো গৃহীত হয়। খ্রিষ্টানরা নানাভাবে বড়দিন উদযাপন করে থাকে। গির্জার উপাসনায় যোগ দেওয়া সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় প্রথা বলে মনে করেন তারা। বড়দিন উৎসব পর্বের অন্যতম অঙ্গ হল গৃহসজ্জা ও উপহার আদান-প্রদান। কোনো কোনো খ্রিষ্টীয় সম্প্রদায়ে ছোটো ছেলে-মেয়েদের দ্বারা খ্রিষ্টের জন্মসংক্রান্ত নাটক অভিনয় করানো হয়। আবার খ্রিষ্টানদের কেউ কেউ তাদের গৃহে পুতুল সাজিয়ে খ্রিষ্টের জন্মদৃশ্যের ছোটো প্রদর্শনীও করে থাকেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn