আন্দোলনের মাঠে সারাদেশের শিক্ষক-কর্মচারী
শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রামী ঐক্য জোটের জাতীয় নির্বাহী কমিটির জরুরি সভায় এ দাবি তোলা হয়। সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সংগ্রামী জোটের প্রধান সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম রনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শিক্ষক নেতারা বলেন, বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিবরা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণের সরকারি উদ্যোগকে নসাৎ করতে ১০ শতাংশ চাঁদা কর্তনের গেজেট করতে সরকারকে আত্মঘাতী পরামর্শ দিয়েছে।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম-মহাসচিব সফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহসিন উদ্দিন, কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মঞ্জুরুল আমিন শেখর, মহাসচিব বদরুজ্জামান প্রমুখ।
চল চল ঢাকায় চল : ‘চল চল চল ঢাকায় চল’ সেস্নাগান দিয়ে গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা। কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নিবন্ধন সনদধারীরা।
তারা অভিযোগ করেছেন, এনটিআরসিএ টাকার বিনিময়ে এ যাবৎ ৬০ হাজার জাল সনদধারীদের নিয়োগ দিয়েছে।
জানা গেছে, প্রথম থেকে দ্বাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাকরির জন্য আবেদন করার যোগ্যতা অর্জন বিষয়ক। চূড়ান্ত নিয়োগ লাভের জন্য সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব উদ্যোগে নেয়া নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকরি হতো এবং সরকার নির্ধারিত অন্য যোগ্যতা থাকলে এমপিওভুক্ত হতে পারতেন। তবে ১৩তম পরীক্ষা থেকে নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রার্থী বাছাইয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষার দায়িত্ব পায় নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ বা এনটিআরসিএ। পরীক্ষা পদ্ধতিতেও আনা হয় পরিবর্তন।
যারা ১৩তম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা আর কোন পরীক্ষা ছাড়াই সরাসরি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শূন্যপদে নিয়োগ পাবেন। যদিও নতুন পদ্ধতি শুরু করার আগে সরকার একবারই বিশেষ বিবেচনায় প্রথম থেকে দ্বাদশ নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে কয়েক হাজার আবেদনকারীকে সরাসরি চাকরির জন্য মনোনয়ন দিয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকেই নিয়োগ পেয়ে এমপিওভুক্তও হয়েছেন।
এ জটিলতা সম্পর্কে এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান এএমএম আজহার বলেছেন, প্রথম থেকে দ্বাদশ নিবন্ধনধারীদের সরাসরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ দাবি করা অযৌক্তিক। বিশেষ বিবেচনায় তাদের একবার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। যারা মেধা তালিকায় প্রথম দিকে ছিলেন তাদের মনোনয়ন দেয়ার পর তারা নিয়োগ পেয়েছেন।
কিন্তু প্রথম থেকে দ্বাদশ নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অনশন কর্মসূচিতে অভিযোগ করেন, এনটিআরসিএ আমাদের পূর্বের এক থেকে ১২তম শিক্ষক নিবন্ধিত নিয়োগবঞ্চিতদের নিয়োগ না দিয়ে আবারও ১৪তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জালিয়াতি করে প্রকাশ করেছে। এনটিআরসিএ টাকার বিনিময়ে এ যাবৎ ৬০ হাজার জাল সনদধারীদের নিয়োগ দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বৈধ সনদ থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ দিচ্ছে না। এছাড়া বিভিন্ন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও নিবন্ধনবিহীন খ-কালীন শিক্ষক দ্বারা তা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ আমাদের সার্টিফিকেট আছে।
২০০৫ সালের ২০ মার্চ থেকে নিবন্ধন পরীক্ষা চালু হয়। প্রথম থেকে দ্বাদশ নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের আবেদন করার যোগ্যতা লাভ করেছেন। চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য তাদের প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নেয়া পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হতো। ২০১৫ সালে নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়। মৌখিক পরীক্ষা যুক্ত করা হয়, যেটা আগে ছিল না। ১৩তম নিবন্ধন পরীক্ষাই নেয়া হয় নতুন পদ্ধতিতে। গত মাসে যার ফল প্রকাশ হয়েছে। শীঘ্রই উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেয়া হবে বলে বলা হচ্ছে।