বার্তা ডেস্ক :: ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় উপনির্বাচনের সময় ইউএনও সঙ্গে মোবাইল ফোনে যে কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তা পুরোপুরি এডিট করা বলে দাবি করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরীর (নিক্সন)। তিনি দাবি করেন, গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কথোকথন ছড়িয়ে পড়েছে, তা এডিট করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান নিক্সন চৌধুরী। তার নির্বাচনী এলাকার ইউএনওদের সঙ্গে ‘ভাই-বোনের’ মতো সম্পর্ক দাবি করে নিক্সন চৌধুরী বলেন, গত ১০ তারিখে যে উপনির্বাচন হলো, সেই উপনির্বাচনে যে প্রার্থী ছিলেন, তার পক্ষে আমাদের নেতাকর্মীরা কাজ করেছেন। সেই উপনির্বাচনে সকালে ১১টার দিকে আমি ফোন করেছিলাম। কিন্তু আমি তাকে একথা বলার জন্য ফোন করেছিলাম যে, আমার একজন কর্মী মাঠে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিলো, এজন্য ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিজিবি সদস্যদের দিয়ে তাকে ধরে নিয়ে যায়। এ বিষয়টা অবগত করার জন্য তাকে ফোন করেছিলাম। কিন্তু বাকী অংশটুকু সুপার এডিট করা হয়েছে।
আলোচিত এই আইন প্রণেতা বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনারা দেখতে পারবেন। ইউএনওর সঙ্গে আমার কথোকথনটা দেয়া হয়েছে। ইউএনও একজন বিসিএস ক্যাডার। যদি ইউএনওর সঙ্গে আমার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় আসে বা রেকর্ড হয়; তিনি (ইউএনও) নিশ্চয়ই জানেন যে, এ বিষয়ে হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে যে, কারো বক্তব্য রেকর্ড করা যাবে না এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়া যাবে না। আমার মনে হয়, আমার ইউএনও এত বোকা না যে, আইনের লোক হয়ে তিনি আইন ভঙ্গ করবেন। আর এখন পর্যন্ত তার কোন বক্তব্য আসেনি। আপনারা তাকে জিজ্ঞাসা করবেন, এরকম কোন কথা আমার সঙ্গে হয়েছে কি না।’
নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়েছে কি না- এমন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমি তাকে আমার একজন কর্মীর বিষয়ে কথা বলেছি, এতে কোন ধরনের আচরণবিধি ভঙ্গ হয়নি। আমার দ্বারা নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়নি। কর্মীদের আটক নিয়ে নালিশ করেছি, গালিগালাজ করিনি। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন চলাকালীন ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ডিসি সাহেব আমার বাড়িতে ইউএনও সাহেবকে পাঠিয়েছেন, এটা তিনি করতে পারেন না। আমি যদি আচরণবিধি লঙ্ঘন করি তাহলে ডিসি সাহেবও আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। আমার নামে মামলা হলে ডিসির নামেও মামলা হবে। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে দেয়া চিঠিতে চারজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়ার কথা। কিন্তু নির্বাচনের আগের দিন জানতে পারি ১৩ জন ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন এই ম্যাজিস্ট্রেটরা মারমুখী আচরণ করেন বলেও অভিযোগ তার।
প্রসঙ্গত, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করার অভিযোগ এনে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দিয়েছেন ফরিদপুরের ডিসি অতুল সরকার। নির্বাচনকালীন ঘটনা হওয়ায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপষিদ বিভাগ থেকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠিয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসককে (ডিসি) হুমকি ও নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।-পূর্বপশ্চিমবিডি
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn