ফাতেমা চৌধুরী স্বপ্না-
মুহাম্মদ আব্দুল হাই। শুধু একটি নাম নয়,একটা ইতিহাস। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সুনামগন্জের এক অনন্য সাধারন ব্যক্তিত্ব। আমার শ্রদ্ধেয় চাচা শ্বশুর। একজন স্নেহশীল পিতা। চাচা,মামা এবং আরও অনেক বন্ধনে আবদ্ধ একজন পারিবারিক এবং সামাজিক মানুষ। এই যে এতো এতো বন্ধন,এসবের বাইরেও কিন্তু বাবা মায়ের আদরের সন্তান আব্দুল হাই চাচার সম্পর্কের পরিধি ছিলো অনেক বিস্তৃত। ছিলো এক বিস্তীর্ণ জগত। উনি মূলত: উনার ঐ জগতটিতেই বাস করে গেছেন। কাজ করে গেছেন মানুষের জন্য,দেশের জন্য,মানবতার জন্য।
রাজনীতি,সাহিত্যসংস্কৃতি,শিক্ষা বিস্তার, সাংবাদিকতা,প্রকাশনা সহ আরও অনেক ক্ষেত্রেই ছিলো উনার সাহসী,সুকৌশলী এবং বুদ্ধিদীপ্ত বিচরণ। মহান মুক্তি যুদ্ধের একজন সংগঠক এবং ভাষা সৈনিক আব্দুল হাই চাচা বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল গণমুখি আন্দোলনে ছিলেন সক্রিয়। বিয়ের পরে তিনি আমার চাচা শ্বশুর হলেও ছোট বেলা থেকেই কখনও আমার দাদীর মুখে কখনও বাবা চাচা কিংবা অন্যদের মুখে উনার কথা অনেক শুনেছি। সত্যিকার অর্থে শুনে শুনেই উনাকে আমার চেনা হয়েছে।
শত বর্ষ পূর্বে যে কবি শত বর্ষ পরের প্রজন্মের জন্য অগনিত গান, কবিতা,গল্প উপন্যাস সহ অমর কাব্য লিখে গেছেন, তাঁকে কি এই প্রজন্ম দেখেছিলো ? দেখে নি। কিন্তু সেই কবিগুরুকে নিয়ে যুগে যুগে মানুষ অনেক আবেগ এবং শ্রদ্ধা মিশিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করে যাচ্ছে, লিখে যাচ্ছে।আমিও আমার না দেখা শ্রদ্ধেয় চাচা শ্বশুরকে নিয়ে কিছু আটপৌরে পারিবারিক কথা,উনার প্রতি আমার শ্রদ্ধা মিশ্রিত দু’চারটি লাইন লিখার চেষ্টা করেছি। উনার নানা বাড়ী আর আমার দাদা বাড়ী ছিলো একই গ্রামে।পাশাপাশি বাড়ী, লাগোয়া ঘর, সম্পর্কটাও ঘনিষ্ট।
সুনামগন্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এক গ্রাম বিন্নাকুলী। এই গ্রাম থেকে মাইল তিনেকের দূরত্বেই মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড়ে অবস্থিত হযরত শাহ আরেফিনের(রহ:)আস্থানা ও পবিত্র মাঝার শরিফ। বিজ্ঞ জনদের সিলেটের প্রাচীন ইতিহাস নিয়ে পর্যালোচনা থেকে জানা যায়, হযরত শাহ আরেফিন(রহ:) ছিলেন হযরত শাহ্ জালালের (রহ:) একজন অন্যতম সফর সংগী। তিনি তরফ বিজেতা বারো আওলীয়ার অন্যতম একজন। তিনি প্রথমে দিনারপুরের সদরঘাপটে কিছুদিন অবস্থান নিয়েছিলেন। তাঁর স্মরণার্থে সেখানে প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের শেষের বৃহস্পতিবার মেলা বসে ও ওরস হয়। অবশেষে তিনি কিছুদিন সুনামগঞ্জ শহরে অবস্থান করেন। হযরত শাহ্ আরেফিনের(রহ:) এই অবস্থানের কারনেই তাঁর নামানুসারে শহরের আরপিন নগর গ্রামের নাম করণ করা হয়েছে বলে ধারনা করা হয়। পরবতীতে তিনি লাউড় রাজ্যের লাউরেরগড় প্রামের সীমান্তবর্তী অঞ্চল মেঘালয়ের পাহাড়ের উপরে আস্তানা স্থাপন করেন এবং ইসলাম প্রচারের কাজ চালিয়ে যান।
১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর এই পাহাড়টি ভারতের ভাগে চলে যায়। বিন্নাকুলীর মাইল খানেক দূরত্বে অদ্বৈত্য মহাপ্রভুর আখড়া। গ্রামটির পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে এক খরস্রোতা নদী। মেঘালয় পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে পাহাড় বেয়ে নেমে আসা এই সীমান্তবর্তী নদী যাদুকাটা তীরেই যুগ যুগ ধরে প্রতি বছর চৈত্র মাসে পনাতীর্থে ‘বারুনী মেলা’ হয়ে আসছে। তখন পূন্যস্নান করতে আসা লক্ষ লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আগমনে যাদুকাটা তীর হয়ে উঠে মূখরিত। হযরত শাহ্ আরেফিনের (রহ:)ওরস মোবারক এবং পনাতীর্থের মেলা প্রতি বছর একই সময়ে সম্পন্ন হয়, এভাবেই হয়ে আসছে। ছোট এই গ্রামটিতে কালে কালে জন্ম নিয়েছেন অনেক জ্ঞানী গুণী এবং সুনামধন্য মানুষ। তাঁদের স্মৃতির প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা।
প্রান্তিক এলাকা বলেই নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর খরস্রোতা যাদুকাটা তীরবর্তী এই জনপদের যাতায়াত ব্যবস্থা কিন্তু তখন মোটেই সহজতর ছিলো না। শুকনো মৌসুমে পায়ে হেঁটে অথবা ঘোড়ায় চড়ে, বাড়ীর মেয়ে-বৌ রা পাল্কিতে চড়ে এবং বর্ষায় নৌকায় চড়েই দূর দূরান্তে যাতায়াত করতেন। সেই বিন্নাকুলী গ্রামেরই ইয়াছিন চৌধুরীর কন্যা মোর্শেদা খাতুন চৌধুরীর সংগে সুনামগঞ্জ শহরের আরপিন নগর তালুকদার বাড়ীর আব্দুল তালুকদারের পুত্র আমার দাদা শ্বশুর আব্দুস সামাদ তালুকদার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।
আমার দাদীর মুখে শুনেছিলাম, আরপিন নগর তালুকদার বাড়ী থেকে আমার দাদী শ্বাশুড়ী মোর্শেদা খাতুন চৌধুরী বিরাট পানশি নৌকায় করে খুব জাঁক জমকের সাথে বিন্নাকুলীতে নাইওর আসতেন। আমার দাদা শ্বশুর আব্দুস সামাদ তালুকদার জমিদারী কাজ কর্মে দূর দূরান্তে চলাচলের জন্য বাড়ীতে হাতি পোষতেন। মাহুত সহ হাতি চড়ে তালুক দেখতে বের হতেন। পরবর্তিতে হাতী চড়ে হয়তো শ্বশুর বাড়ী বিন্নাকুলীতেও বেড়াতে গিয়ে থাকবেন।
আমার সংগে আত্মীয়তার অপর সুত্র হলো আমার বড় চাচা এবং চাচা শ্বশুর আব্দুল হাই চাচা দু’জনেই সুনামগন্জ সদর উপজেলার কামার গাঁওয়ের একই পরিবারের মেয়েজামাই। ১৯৫৮ সালে আব্দুল হাই চাচার সংগে আমার চাচী শ্বাশুড়ী নুরুন নাহার বেগমের বিয়ে সম্পন্ন হয়।
আমার বড় ভাসুর জামসেদ চৌধুরী ভাই পুরানো দিনের গল্প করতে গিয়ে বলেছিলেন, আমার দাদী শ্বাশুড়ী আমার আব্বা আব্দুজ জহুর কে খুবই স্নেহ করতেন। আত্মীয়তা এবং আব্দুল হাই চাচার সংগে আদর্শিক বন্ধনের কারনে ছাত্রজীবনেও ঐ বাড়ীতে আমার বাবার আসা যাওয়া ছিলো। আমার দূর্ভোগ্য চাচার সংগে আমার নিজস্ব কোন স্মৃতি নাই। আমি যখন আরপিন নগর তালুকদার বাড়ীতে উনার ভাতিজা আনোয়ার চৌধুরী আনুলের বউ হয়ে গেলাম তার কয়েক বছর পূর্বেই আব্দুল হাই চাচা পরপারে পারি জমিয়েছেন। আমার আফসোস্, আমার মহিয়ষী দাদী শ্বাশুড়ীর সংগেও আমার কখনও দেখা হয়নি। উনি ও তখন না ফেরার দেশে।
আমার শ্বশুর আব্দুল আহাদ চৌধুরী (তারা মিয়া) সাহেব এবং আব্দুল হাই চাচার বসত ঘর সামনে পিছনে পাশাপাশি। মনে পড়ে বিয়ের কয়েকদিন পরই খুবই আগ্রহ নিয়ে আমি চাচার লাইব্রেরীটা দেখতে গিয়েছিলাম। খুবই ভালো লাগার একটা মুহুর্ত। স্মৃতিটা এখনও মনকে আন্দোলিত করে। আমার আব্বার মুখে আগেই শুনেছিলাম চাচার বইয়ের সংগ্রহ বিশাল। তখনকার সময়ে সুনামগঞ্জে নাকি কারও ব্যক্তিগত সংগ্রহে এমন কি পাবলিক লাইব্রেরীতেও উনার সংগ্রহের মতো এতো ভালো ভালো বই ছিলো না।
‘সুনামগন্জ পাবলিক লাইব্রেরী’ টি প্রতিষ্টাতেও চাচার ছিলো অসামান্য অবদান। পাবলিক লাইব্রেরী স্থাপনের লক্ষ্যে গঠিত পরিচালনা কমিটিতে তিনি সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। আব্বার গল্প শুনেই চাচার লাইব্রেরী নিয়ে মনে প্রচুর আগ্রহ জন্মেছিলো। দেখার সুযোগ হলেও বইগুলো আর ছোঁয়ার সময় পাইনি। আমেরিকা চলে এলাম। উনার লাইব্রেরির প্রতি প্রচুর ভালো লাগা থেকেই আমার ছেলে তানজিল চৌধুরী শুভ কে নিয়ে যখন প্রথম বার দেশে গেলাম, তখন ওকেও তার দাদার লাইব্রেরীটা দেখালাম। বুক শেলফ এর পাশে দাঁড় করিয়ে ছবি তোলে নিয়ে এলাম।
বিয়ের পর আমার চাচী শ্বাশুড়ীকে অবশ্য আমি কিছুদিন পেয়েছি। বাবার বাড়ী এবং শ্বশুর বাড়ী দুই দিক থেকেই আত্মীয় হওয়ায় উনার কাছ থেকে স্নেহ মায়াটাও পেয়েছি ডাবোল। আমার দাদা শ্বশুর আব্দুল সামাদ তালুকদার এবং মোর্শেদা খাতুন চৌধুরীর ছিলেন তিন ছেলে এবং তিন মেয়ে। বিবাহিত জীবনের প্রথম দিকে উনাদের পর পর পাঁচ সন্তান জন্মের পর পরেই মারা যান। একের পর এক সন্তান হারানোর বেদনায় তাঁদের মন অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। অবশেষে একসময় আল্লাহ্ উনাদের সন্তান হারানোর বেদনার ইতি টানলেন। এই দম্পতির ঘর আলোকিত করে একে একে তিন ছেলে এবং তিন মেয়ে জন্ম নিলেন। সন্তানদের আসল নামের পাশাপাশি আদর করে প্রত্যেকেরই ডাক নামও রাখলেন।
আব্দুল হাই চাচার ডাক নাম ছিলো গোলাপ মিয়া। ভাইদের মধ্যে সবার বড় ছিলেন আমার শ্বশুর আব্দুল আহাদ চৌধুরী (তারা মিয়া)। সবার ছোট ছিলেন আব্দুল ওয়াহিদ চৌধুরী (লাট মিয়া), যিনি সুনামগঞ্জ কলেজে এইচ এস সি পড়াকালীন সময়েই মারা যান। জ্বরে ভোগে মেধাবী এবং সুদর্শন লাট চাচার অল্প বয়সে এই মৃত্যূ বরণ উনাদের পরিবারের খুবই দূ:খজনক এবং স্পর্শকাতর এক স্মৃতি, যা প্রায়ই পারিবারিক গল্পে উঠে আসে। উনি ঐ বয়সেই উনার বড় ভাইদের মতো পরোপকারী এবং সংস্কৃতি মনা ছিলেন। শুনেছি, বাড়ীর সন্নিকটেই লাট চাচাকে কবর দেয়া হয়। ছোট ছেলেটির কবরের পাশে পরিবারেরই কেউ একজন ভালোবেসে একটি কৃষ্নচুড়ার গাছ লাগিয়েছিলেন।গাছটিতে যখন ফুল ফুটতো, রক্তলাল কৃষ্ণচুড়ায় ছেয়ে থাকতো লাট চাচার কবর। এখন আর সেই গাছটির কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না। হয়তো কোন বিশেষ স্থাপনা তৈরী করতে গিয়ে গাছটি কাটা পড়ে গেছে।
উনাদের তিন বোনের মধ্যে এক বোন সহিফা খাতুন (চাঁদ বিবি) ছিলেন ভাইজী ভাইপোদের প্রিয় ফুফু আম্মা। আমার তিন ফুফু শ্বাশুড়ীর মাঝে সুনামগঞ্জ সদরের ষোলঘরের বাসিন্দা এই ফুফু শ্বাশুড়ীকেই দেখার সৌভাগ্য হয়েছিলো। উনার অবয়বের এবং ব্যবহারের স্নেহময়ী এবং অভিজাত ভাবটা আমাকে খুব টানতো। জানিনা কেনো উনাকে দেখলে আমার কল্পনায় দাদী শ্বাশুড়ীর ছবি ভেসে উঠতো। ফুফু আম্মার ছেলে মেয়েদের মধ্যে অনেকেই আমার পূর্ব পরিচিত। উনারই ছেলে সাংবাদিকতা এবং সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ইমানুজ্জামান মহী ভাই যখন আব্দুল হাই চাচাকে নিয়ে একটা স্মারক গ্রন্থ করার উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করলেন, তখন আমি এবং আমার হাজবেন্ড দুজনেই খুব আগ্রহী, আনন্দিত হয়ে উঠলাম। মনে হলো এই প্রচেষ্টা সফল হলে চাচার প্রতি এই প্রজন্মের কিছুটা হলেও দায়িত্ব পালন করা হবে। নতুন প্রজন্ম উনার জীবনের আলোকে সমৃদ্ধ হবে।
আব্দুল হাই চাচার অপর দুই বোন ছিলেন যথাক্রমে কনা বিবি এবং সৈয়দ বিবি। তিন বোনের প্রতিই ভাইদের স্নেহ ভালোবাসা ছিলো অপরিসীম। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়ীতে অনেক বার অনেক পারিবারিক গল্পের সাক্ষী হয়েছি। এখনও আমার হাজবেন্ড ,ভাসুরেরা, দেবর মুবিন চৌধুরী মাজেদ এবং ননদ রাবেয়া চৌধুরী যীশু, ফারহানা চৌধুরী এবং অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের মুখে শ্বশুর বাড়ীর গল্প অনেক আগ্রহ নিয়েই শুনি। বিস্ময় আর মুগ্ধতা নিয়ে পরিবারের প্রথিতযষা মেধাবী মানুষটির কথা শুনে গর্বিত হই। আব্দুল হাই চাচা ছিলেন ভাই বোনদের মধ্যে পঞ্চম। পৃথিবীতে কিছু কিছু মানুষ হয়তো জন্মগত ভাবেই বহুমাত্রিক প্রতিভা নিয়ে জন্মায়। আব্দুল হাই চাচাও হয়তো তেমন ভাগ্যবান দেরই একজন।
১৯২৭ সালের ২৩ শে মে তিনি আরপিন নগর তালুকদার বাড়ীতে জন্ম গ্রহন করেন। নিজ বাড়ীর সম্মুখে অবস্থিত কে বি মিয়া মক্তবেই উনার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। মেধাবী আব্দুল হাই চাচা,কে বি মিয়া মক্তব থেকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সমগ্র আসামকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় সমগ্র আসাম প্রদেশে প্রথম স্থান অধিকার করে তিনি সুনামগঞ্জকে সেই ছোটবেলাতেই গৌরবান্বিত করেছিলেন। ছোট ভাইয়ের লেখাপড়া এবং সকল সুযোগ সুবিধার দিকে আমার শ্বশুর তীক্ষ্ণ নজর রাখতেন। বলেছিলেন ছোট বেলা থেকেই মেধাবী এই ভাইকে নিয়ে তিনি অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখতেন। আব্দুল আহাদ চৌধুরী (তারা মিয়া) এবং আব্দুল হাই দুই ভাই ই মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। আমার শ্বশুর এবং চাচা শ্বশুর দুইজনই আওয়ামী রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন।
১৯৫৬ সালে সুনামগঞ্জে গঠিত হয় প্রথম মহকুমা আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটি। সে কমটিতে আব্দুল হাই চাচা সাধারন সম্পাদক (সূত্র-সাপ্তাহিক জনশক্তি, সিলেট ও সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ও তৎকালীন রাজনীতি পৃষ্টা ১৬২) এবং ১৯৬৪ সালে দ্বিতীয় কার্যকরী কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হন (ইত্তেফাক ৩১শে আগষ্ট)। ৩০শে আগষ্ট বঙ্গবন্ধু কর্তৃক এই কমিটি গঠিত হয়। আমার শ্বশুর আব্দুল আহাদ চৌধুরী (তারা মিয়া) ও আওয়ামীলীগের মহকুমা কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন। আব্দুল হাই চাচার দুই ভাতিজা, আমার বড় ভাসুর জামশেদ চৌধুরী খুসনুদ এবং মেজ ভাসুর আজিজ চৌধুরী মসনুদ দু’জনেই সক্রিয় ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আমার শ্বশুর বাড়ীর এই দুই পরিবারই বালাটে চলে যান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরিবারের সবাই সুনামগঞ্জ নিজ বাড়ীতে ফিরে আসেন।
আব্দুল হাই চাচা ১৯৪৮ সালে জুবিলী স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হয়ে সুনামগঞ্জ কলেজে ভর্তি হন। ছাত্র জীবন থেকেই পাঠ্যবই ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে প্রচুর পড়াশুনা করতেন। সারা ঘর জুড়ে বই খাতা এখানে ওখানে ছড়িয়ে রাখতেন।ওখানেই পড়তেন, লিখতেন, ঘুমাতেন।
আমার শ্বাশুড়ী জোৎস্না আরা চৌধুরী তালুকদার বাড়ীতে বউ হয়ে এলেন। বাড়ীর বড় বউ, আস্তে আস্তে শ্বাশুড়ীর ঘর গেরস্থালিতে হাত লাগাতে চেষ্টা করেন। অবাক হয়ে দেখলেন উনার দেবর গোলাপ মিয়ার ঘরের বই খাতা, বিছানা পত্র সবই ভীষন এলোমেলো, অগোছালো। দেবরের অগোছালো ঘর গুছিয়ে দিতে চাইলে আমার দাদী শ্বাশুড়ী নাকি বলেছিলেন, মা গো কখনও ঐ রুম গোছাতে যেও না। ওর রুমে হাত দিলে চিল্লাচিল্লি করে সারা বাড়ী মাথায় তুলবে। চাচা নাকি বলতেন, তোমরা যা অগোছালো দেখো, তা সবই গোছানো। আমি কখন কি পড়বো, কোন বইয়ের কত নম্বর পৃষ্টা, কোন খাতায় কি লিখবো সবই আমি গুছিয়ে রাখি, তোমরা হাত লাগালেই সব এলোমেলো করে ফেলবে।
মনে পড়ে আমার ছেলে শুভর ছাত্রাবস্থায় ওর এলোমেলো রুম গোছাতে গেলে ,সে সব সময়েই বাঁধা দিতো। বলতো সে গুছিয়েই রেখেছে। আমি নাকি উল্টা পাল্টা করে ফেলবো। আমরা মা ছেলের এই খুঁনসুটি শুনে আমার শ্বাশুড়ী হাসতে হাসতে বলতেন, ‘ওর সংগে পারতায় না গো। তার দাদা গোলাপ মিয়ার টা পাইলিছে মনে হয়। তার রুম তার মতোই থাকুক।” এভাবেই প্রসঙ্গ ক্রমে আমার শ্বাশুড়ীর মুখে এসব পুরানো দিনের গল্প উঠে আসতো।
আব্দুল হাই চাচা ১৯৫১ সালে সুনামগনঞ্জ কলেজ থেকে আই এ পাশ করে সিলেট এম সি কলেজে ভর্তি হন কিন্তু পরবর্তীতে ছাত্র রাজনীতির কারনে উনাকে এম সি কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়। উনার বহিষ্কারের ঘটনায় আমার দাদী শ্বাশুড়ী, আমার শ্বশুর সহ সকল আত্মীয় স্বজনের মন খারাপ হয়ে যায়। আমার দাদী শ্বাশুড়ী খুবই আপসেট হয়ে পড়েছিলেন। এমনিতেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়া এই ছেলেকে নিয়ে দাদী সারাক্ষন উদ্ভিগ্ন থাকতেন। বহিষ্কার হলেও চাচা কিন্তু হাল ছাড়েন নি। ১৯৫৪ সালে সিলেট মদন মোহন কলেজ থেকে বি এ পরীক্ষা দেয়ার প্রস্তুতি নেন। আমার শ্বশুর কিছুটা আস্বস্ত হয়ে তাঁদের মাকেও আস্বস্ত করেন কিন্তু আবারও পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়ে যায়।
আব্দুল হাই চাচা বরাবরই রাজনীতিতে সম্মুখ সারিতে ছিলেন। ১৯৫৪ সালে যুক্ত ফ্রন্টের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। পরবর্তীতে ১৯২ (ক) ধারা জারি হলে এরেষ্ট হয়ে কারাবরণ করেন। উনার গ্রেফতারের খবরে স্বাভাবিক ভাবেই বাড়ীর লোকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। কান্নাকাটি পরে যায়। আমার দাদী শ্বাশুড়ী খুবই মোচরে পড়েন। সারাক্ষন ছেলের জন্য দোয়া দূরুদ পড়তেন আর কান্নাকাটি করতেন। এদিকে আব্দুল হাই চাচা কিন্তু তখনও মোটেই ভেংগে পড়েন নি। অদম্য মনোবল আর মেধার অধিকারী এই মানুষটি ১৯৫৫ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকেই বি এ পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন এবং ডিস্টিংশন সহ বি এ পাশ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হলেও পড়া চালিয়ে যান নি।
১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করলে রাজনীতি নিষিদ্ধ হয়ে যায়। আব্দুল হাই চাচা হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলেন না। শুরু করলেন শিক্ষকতার মাধ্যমে মানুষ গড়ার সংগ্রাম। প্রথমে জয়কলসের রশিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং পরবর্তীতে সুনামগঞ্জ সদরের এইচ এম পি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহন করেন। শুনেছি সুনামগঞ্জ কলেজেও বাংলা ভাষা ও সাহিত্যর প্রভাষক হিসাবে তিনি কিছুদিন কাজ করেন।
আমার হাজবেন্ড আনোয়ার চৌধুরী আনুল মক্তব থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করলে আব্দুল হাই চাচা ভাতিজাকে উনার তত্বাবধানে এইচ পি হাই স্কুলে ভর্তি করে নেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ সারির যোদ্ধা আব্দুল হাই চাচা স্বাভাবিক ভাবেই সামন্তবাদেরও ঘোর বিরোধী ছিলেন। উনি ১৯৪৭ সালেই নিজ নাম থেকে পারিবারিক টাইটেল ‘চৌধুরী’কেটে বাদ দেন। উনার তিন মেয়ের নামের শেষেই পারিবারিক টাইটেল ‘চৌধুরী’র পরিবর্তে উনার মায়ের নাম বসিয়েছেন। স্কুলে ভর্তি করার সময় চাচা উনার ভাতিজার নাম আনোয়ার হোসেন চৌধুরী থেকেও ‘চৌধুরী’ কেটে দিয়ে শুধু আনোয়ার হোসেন নামে ভর্তি করে নেন। চাচা নাকি উনার এই ভাতিজাকে নিকুঞ্জ নামে ডাকতেন। প্রধান শিক্ষক চাচার তত্বাবধানেই আমার হাজবেন্ড স্কুল জীবন শেষ করেন এবং মাধ্যমিক পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হয়ে সুনামগঞ্জ কলেজে ভর্তি হন। আনোয়ার চৌধুরী আনুল কলেজে পড়াশুনার পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতিতেও জড়িয়ে পড়েন। ৭৫ পরবর্তী সময়ে সুনামগঞ্জ কলেজের প্রথম ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে এ জি এস এবং পরবর্তীতে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মনোনিত হন। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায়ই ইমিগ্র্যান্ট ভিসায় আমেরিকায় চলে আসতে হয়েছিলো উনাকে। আবুল হাই চাচার ভাগ্না নূরুজ্জামান চৌধুরী শাহী ছিলেন স্বাধীনতা উত্তর সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। মাজেদ,হাসান সহ উনার অন্যান্য ভাতিজা এবং ভাগ্নারাও সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন।
অনেক সৃষ্টি শীল কর্মে যুক্ত চাচা এক সময়ে সাংবাদিকতার পেশায় যুক্ত হন। ১৯৫৬ সালেই নিজ সম্পাদনায় সুনামগঞ্জ হতে ‘দেশের দাবী’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা বের করেছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুর দিকে ২৪মার্চ ১৯৭১ উনার সম্পাদনায় সুনামগঞ্জ থেকে ‘জনমত’ নামে একটি বুলেটিন প্রকাশিত হয়। এই বুলেটিনটির সাথে তিনি সহ আরো জড়িত ছিলেন গোলাম রব্বানী, আবু আলী সাজ্জাদ হোসাইন, মুতাসীম আলী ও নুরুজ্জামান চৌধুরী শাহী ভাই।
চাচা সুনামগঞ্জের বেশ ক’টি পত্রিকারই সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সুনামগন্জ প্রেস ক্লাবের গোঁড়া পত্তন উনার হাতেই হয়েছিলো। সুনামগন্জ পাবলিক লাইব্রেরী গঠনে শুরু থেকেই তিনি সর্বাঙ্গীন ভাবে যুক্ত ছিলেন এবং গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তিনি ছিলেন সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক। শিল্পকলা একাডেমী প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। উনার অবদানকে সম্মান জানাতে পুরাতন শিল্প কলা ভবনটিকে উনার নামে নাম করণ করে ‘আব্দুল হাই মিলনায়তন’ করা হয়েছে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে উনার অপরিসীম অবদান গুলোর মূল্যায়ান হলে,তোলে ধরা হলে নি:সন্দেহে এই প্রজন্ম উপকৃত হবে,উৎসাহিত হবে। শিল্প সাহিত্য এবং সাংবাদিকতায় যুক্ত আব্দুল হাই চাচা নিজস্ব প্রেসও চালু করেছিলেন। উনার মায়ের নামে প্রেসের নামকরন করেছিলেন ‘মোর্শেদী প্রেস’। চাচার জীবিতাবস্থায়ই আমার দাদী শ্বাশুড়ী পরলোক গমন করেন। পারিবারিক গল্পে শুনেছি, তিনি নিজে যেমন প্রচুর গান লিখেছেন তেমনি অন্যের গানে সুরও করেছেন। ‘উতলা বাতাসে’ এবং ‘উত্থাল তরঙ্গ’ নামে উনার স্বরচিত দুইটি বইয়ের কথা শুনেছি। উনার অন্যান্য রচনাগুলোর নাম না জানাটা আমার অজ্ঞতা।
প্রাইমারী বিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময় থেকেই পড়াশুনার পাশাপাশি নাটকে অভিনয়ের প্রতিও উনার ঝোঁক ছিলো। দেখতে সুদর্শন, সুপুরুষ এবং প্রতিভাবান আব্দুল হাই চাচা পরবর্তীতে অনেক উল্লেখযোগ্য নাটকের ভালো ভালো চরিত্রে অভিনয় ও নাট্য পরিচালনা করে প্রতিভার সাক্ষর রেখে গেছেন। এখনও উনার সম্পর্কে অনেক কিছুই আমার অজানা রয়ে গেছে। চাচার আকষ্মিক অকালে চলে যাওয়াটা আমরা সুনামগঞ্জ বাসীদের জন্য অত্যন্ত দূঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যকজনক। ১৯৮৩ সালের ২৫শে এপ্রিল তিনি মাত্র ৫৬ বছর বয়সে এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে পরপারে পাড়ি জমান। উনার মৃত্যূতে পরিবার ছাড়াও সারা এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। উনার অকাল মৃ্ত্যূ ছিলো সুনামগন্জ এর জন্য এক অপূরনীয় ক্ষতি।
আমার এই ক্ষণ জন্মা চাচা শ্বশুরের প্রতি বিনম্র চিত্তে শ্রদ্ধা জানাই। উনার রুহের মাগফেরাত কামনা করি। একজন সুনামগঞ্জবাসী হিসাবে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরন করি উনার সকল সৃষ্টিশীল অবদান।
চাচার মৃত্যূর পর চাচীও খুব বেশী দিন জীবিত ছিলেন না। সুখী বিবাহিত জীবনে চাচা চাচী ছিলেন এক পুত্র এবং তিন কন্যা সন্তানের জনক জননী। চাচার জীবিতাবস্থায়ই উনাদের এক মাত্র পুত্র ‘গালিব’ মারা যায়। গালিবের মৃত্যূতে চাচা ভেংগে পড়েন। মনমরা হয়ে যান। চাচার মৃত্যূকালে উনাদের বড় মেয়ে দীপা নাহার মোর্শেদা সুনামগঞ্জ কলেজে বি এ পড়ছিলো। দীপার ছোট দুই বোন নিপা নাহার মোর্শেদা এবং সবার ছোট অনুপা নাহার মোর্শেদা তখনও স্কুলের গন্ডি পেরোয়নি। অনুপা তখন বেশ ছোট ছিলো। চাচী সংসারের হাল ধরলেন। বড় দুই মেয়ের পড়াশুনা এবং বিয়ের কয়েক বছর পর ১৯৯৮ সালের মার্চ মাসের ১৯ তারিখে চাচীও না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
উনাদের ছোট মেয়ে অনুপার তখনও পাড়াশুনার পাঠ শেষ হয়নি। বোনেদের তত্বাবধানেই অনুপা পড়াশুনা শেষ করে। বর্তমানে সে সিলেট উইমেন্স কলেজের বাংলার অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছে। অধ্যাপক স্বামী আব্দুল জলিল এবং দুই সন্তান ঋষিতা এবং অহম কে নিয়ে মেধাবী অনুপা গড়ে নিয়েছে নিজের এক সুখী পৃথিবী। নীপাও এক ছেলে এবং দুই মেয়ের মা। স্বামী সন্তান নিয়েও সে ও সুখে আছে।
অত্যন্ত দূ:খ জনক হলো চাচার বড় মেয়ে দীপার অকালে চলে যাওয়াটা। দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন অসুস্থতায় অল্প বয়সেই ছোট ছোট দুই ছেলে মেয়ে রেখে ২০০৮ সালের মার্চ মাসের ২৯ তারিখে সে পরপারে পাড়ি জমায়। দীপার স্বামী সাহিত্যিক সাংবাদিক আল আজাদ ভাই এর আদর স্নেহ আর সঠিক তত্বাবধানে তাদের দুই সন্তান বেড়ে উঠছে। আল আজাদ ভাইও সাংবাদিকতায় বেশ পাকাপোক্ত অবস্থান তৈরী করে ফেলেছেন।
আব্দুল হাই চাচার জন্মস্থান আরপিন নগরের ঐতিহ্যবাহী তালুকদার বাড়ী এখন এক প্রকার জনশূন্যই বলা যায়। চাচার সন্তানরা সিলেটে এবং আমার শ্বশুরের সন্তানরা সবাই লন্ডন আমেরিকায় বসবাসের কারনে এই দুই বাড়ী একদম খালিই পরে আছে। উনাদের চাচাত ভাইয়েরাও অনেকেই প্রবাসী। কেউকেউ সুনামগঞ্জ শহরেই অন্যত্র বাড়ী করে বসবাস করছেন। এক সময়ের জমজমাট বাড়ীতে প্রবেশ করলে এখন কেবল শূন্যতা ছাড়া আর কিছুই অনুভব করা যায় না। শুন্য বাড়ী ঘরের আনাচে কানাচে, পরতে পরতে জমে আছে স্মৃতিরধুলো।
আরপিন নগর তালুকদার বাড়ীর প্রথিতযষা ব্যাক্তিত্ব আব্দুল হাই চাচা সহ পরপারে পাড়ি জমানো এই ঐতিহ্যবাহী বাড়ীর সকলের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। যারা বেঁচে আছেন, তাঁদের সবার সুস্থ সফল এবং দীর্ঘ জীবন কামনা করছি। পূর্ব সুরীদের জীবনের আলোকে উত্তরসুরীরাও যেনো সৎ, প্রতিভাবান, মানবিক এবং আদর্শিক হয়ে গড়ে উঠে। এতেই তাঁদের ত্যাগ এবং পরিশ্রম স্বার্থক হবে।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১,২২০ বার