অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা ছেড়ে মাফ চেয়ে জনতার কাতারে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সরকার ফ্যাসিবাদের যত উপকরণ আছে সব জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। এ অবস্থায় ১০ দফা দাবি আদায় করে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। শেয়ার মার্কেট, স্বাস্থ্যখাত, বিদ্যুৎখাত সকল দেশের সকল খাতে ব্যাপক হাতে চুরি হয়েছে। পদ্মাসেতু সহ উন্নয়ন প্রকল্পের নামে জনগনের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। দেশ আজ বির্পস্ত। আওয়ামীলীগ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্য ও গণতন্ত্র চায়না। তারা শুধু ক্ষমতা চায়। বিএনপি জনহনকে নিয়ে মাঠে থাকবে, আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। এই সরকারের অধিনে কোন নির্বাচন হতে পারে না। নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া আওয়ামীলীগের অধিনে বিএনপি নির্বাচনে যাবেনা।
বুধবার দুপুরে ফ্যাসিস্ট, দুর্ণীতিবাজ, গণতন্ত্র হরণকারী সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সহ ১০ দফা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সহ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট বিভাগীয় গণঅবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। সকাল ১১টায় সিলেট রেজিষ্ট্রারী মাঠে শুরু হওয়া এই গণ অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও যুগ্ন মহাসচিব এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। এসময় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রস্তাবের প্রতিবাদে ও বিএনপির ১০ দফা দাবি আদায়ে আগামী ১৬ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ-সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা দেন তিনি।
ভারতের কাছে আওয়ামীলীগকে টিকিয়ে রাখার অনুরোধ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, এজন দ্বায়িত্বশীল মন্ত্রীর পক্ষে এসব কথা মানানসই নয়। কতবড় বেকুব হলে একজন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এরকম বক্তব্য দেন। তারা ভারতের সাথে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই সম্পর্ক রাখে। সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অবস্থান কর্মসূচির শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সিলেট মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি।
বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব ও সিলেট বিভাগীয় দলনেতা এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আদাল বলেন, ছাগল চুরি, গরু চুরি, কয়লা চুরি, বিদ্যুৎ চুরি সহ রিজার্ভ চুরি, ব্যাংক চুরি সহ সব চুরির সাথে আওয়ামী লীগ জড়িত। আওয়ামী লীগ এখন সব চুরের নিরাপদ আশ্রয়স্থল। আমরা নিত্যপণ্য, বিদ্যুৎ, তেল গ্যাস কমানোর জন্য বার বার বলছি। সারের দাম কি পরিমান বাড়ছে, এখান আবার বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে না সরালে দেশের মানুষ বাঁচতে পারবে না। এই সরকারকে ক্ষমতায় থাকার সকল অধিকার হারিয়েছে। তাই এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।
স্বাগত বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, দেশের মানুষ এখন বিদ্যুৎ পাচ্ছেনা এর মধ্যেই আবার তারা বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করছে। বিএনপি জনগনের দল, তাই জনগনের ন্যায্য দাবী আদায় করার জন্য রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করছে। অতিতের মত দেশের সাধারণ মানুষ বিএনপির সাথে আছে। ধন্যবাদ জ্ঞাপন কালে সিলেট মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে দলের সর্বস্থরের নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার আহবান জানান।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকীর যৌথ সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি এম. নাসের রহমান, কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জিকে গৌছ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সহ ক্ষুদ্রঋণ ও কুটির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম ও মিজানুর রহমান চৌধুরী, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক মিজানুর রহমান প্রমূখ। এসময় সিলেট বিভাগে চার জেলা বিএনপি, সিলেট মহানগর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
১০৭ বার