পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের সম্পদ। তবে তিনি ক্রিমিনালি কাজ করেছেন। তিনি তার শ্রমিকদের পয়সা দেন নাই তাদের ঠকাইছেন। এজন্য আদালতের মাধ্যমে তার বিচার হয়েছে। এটা কোর্টের ব্যাপার। আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সব ধরণের সুযোগ তিনি পেয়েছেন। ড. ইউনুসের কারাদন্ডের রায় বিদেশের সাথে বাংলেদেশে সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে কী না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরের হাফিজ কমপ্লেক্সে প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময় করেন সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় সোমবার গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার ড. মোমেন আরও বলেন, ড. ইউনুস একজন নোবেল লরিয়েট। আমরা তাকে অত্যন্ত সম্মান করি। পৃথিবীতে অনেক নোবেল লরিয়েটই অন্যায় করেছেন, ক্রিমিনালি করেছেন। এজন্য তাদের শাস্তি হয়েছে। এতে কারো সাথে কারো সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। কারণ প্রত্যেক দেশই আইনকে সম্মান করে। ফলে ড. ইউনুসের সাজায় আমাদের কোন সমস্যা হবে না।
এবারের ‘নির্বাচনের ফলাফল পূর্বনির্ধারিত’ সম্প্রতি বিবিসিতে প্রকাশিত এরকম একটি সংবাদের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিবিসি একটি মিডিয়া। মিডিয়া অনেক সময় ঝাকমারি কিছু করে পাঠক টানতে চায়। তারা প্রায়ই এরকম করে। কিন্তু মিডিয়ার রিপোর্ট দেখে কোন দেশই তাদের পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করে না। সব সরকারই বিচার বিশ্লেষণ করে, ভববিষ্যত সম্পর্ক, নিজেদের স্বার্থ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নেয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো অবাদ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। এটা করতে পারলেই আমরা সফল। আমাদের দেশবাসী কী বললো সেটাই বড় কথা। দেশবাসী যদি নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য মনে করে তবেই আমরা সফল। অন্য কে কি মনে করলো সেটা সেকেন্ডারি বিষয়। এরআগে প্রবাসীদের সাথে মতবিনিময় কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রবাসী বান্ধব সরকার। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে শুরু করে স্বাধীনতা যুদ্ধ ও একাত্তর পরবর্তী দেশ গঠনে প্রবাসীরা সবসময় বঙ্গবন্ধুর সাথে ছিল। শেখ হাসিনাকেও আশ্রয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রবাসীরাই। প্রবাসীরা দেশপ্রেমিক- তাদের স্বদেশপ্রেম প্রগাঢ়। ”
ড. মোমেন ইন্টারন্যাশনাল ফ্যান ক্লাব আয়োজিত এই সভায় তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ৩০ ডিসেম্বরকে প্রবাসী দিবস হিসেবে ঘোষনা করেছেন। দেশের উন্নয়নের মহাসড়কে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ জরুরি। আমরা চাই দেশের কোথায় কী সুযোগ রয়েছে তা প্রবাসীরা জানুক – যাতে তারা সম্পৃক্ত হতে পারে। সরকার প্রবাসীদেরকে ৩৪ টি সেবা ডিজিটাল অ্যাপসের মাধ্যমে প্রদান করছে। দেশে প্রবাসীদের হয়রানি বিশেষ করে জমি-সম্পত্তি বেদখল রুখতে র্যাপিড ট্রাইবুনাল গঠন ও ভুমিপ্রশাসন শক্তিশালী করার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সভায় প্রবাসীরা তাদের বিভিন্ন অনুযোগ, অভিযোগগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের কথা জানান। তারা বলেন, ড. মোমেন প্রবাসীদের পরম বন্ধু। তিনি প্রবাসীদের সুখে, দুখে পাশে ছিলেন। নির্বাচনে ভোট দেবার জন্য আমরা দেশে এসেছি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য, উন্নয়নের জন্য ভোটাধিকার প্রয়োগ করব।
প্রবাসী ব্যক্তিত্ব সেলিম মুবদার সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন আহমদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দৈনিক একাত্তরের কথার প্রকাশক নজরুল ইসলাম বাবুল, মাহা’র স্বত্তাধিকারী মাহি উদ্দিন সেলিম, ফারুক আহমদ চৌধুরী, ফকরুল চৌধুরী, কল্লোল আহমদ, কাজী কায়েস, সাজেদুর রহমান, ইফজাল চৌধুরী, আহমেদুল কবীর প্রমুখ।
সংবাদ টি পড়া হয়েছে :
৩৩৫ বার