ইতালির প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ : এখন কী ঘটতে পারে?
বার্তা ডেস্ক :: ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক মতবিরোধের জেরে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী গুইসেপে কন্তে। ক্ষমতাসীন জোট সরকারের শরীক লীগ পার্টির ডানপন্থী নেতা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভেনির সঙ্গে বিরোধের জেরে পদত্যাগের আগে দেয়া বক্তব্যে সালভিনিকে ‘সুবিধাবাদী’ ও ‘দেশের জন্য ক্ষতিকর’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের জেরে সৃষ্ট রাজনৈতিক সঙ্কটের সমাধানে এখন জোটের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেল্লা। প্রধানমন্ত্রী গুইসেপে পদত্যাগ করায় এখন দেশটিতে কী ঘটতে পারে; সে সম্পর্কে সম্ভাব্য কিছু বিষয় তুলে ধরেছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
সরকার কি ভেঙে পড়েছে?
আসলে এখনো দেশটির সরকার ভেঙে পড়েনি। সমাধানে না পৌঁছানো পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক ক্ষমতাবলে রুটিন দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখতে গুইসেপে কন্তেকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মাত্তারেল্লা। এই সময়ে ইউরোপীয় কমিশনে নতুন প্রার্থী হিসেবে কন্তের নাম থাকতে পারে। রাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি এখনো তার মন্ত্রীত্ব প্রত্যাহার করে নেননি। মঙ্গলকার তিনি বলেন, দেশটির ট্যাক্স কর্তনকারী ২০২০ সালের বাজেটের অনুমোদন পাওয়ার জন্য তিনি ক্ষমতাসীন সরকার টিকিয়ে রাখতে প্রস্তুত। কিন্তু দেশটির সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজেট পাস করার ক্ষমতা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেই। সুতরাং এই বাজেট পাস হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মঙ্গলবার পার্লামেন্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সালভিনির তীব্র সমালোচনা করেছেন কন্তে। এর পরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন। কিন্তু লীগ পার্টির সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সমাধানে পৌঁছানোর জন্য কন্তেকে পার্লামেন্টে পাঠাতে পারেন প্রেসিডেন্ট মাত্তারেল্লা।
আগাম নির্বাচনের দিকে এগুচ্ছে ইতালি?
দেশটির সংসদ ভেঙে দেয়ার একমাত্র ক্ষমতা রয়েছে প্রেসিডেন্ট মাত্তারেল্লার হাতে। নির্বাচনের নির্ধারিত সময়ের ৩ থেকে ১/২ বছর আগে তিনি আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিতে পারেন। তবে তিনি এটা তখনই করতে পারবেন, যখন দেখবেন যে সরকার পরিচালনার জন্য নতুন একটি জোট গঠন অসম্ভব।
কেমন হতে পারে নতুন জোট?
দেশটির মধ্য-বামপন্থী বিরোধীদল ডেমোক্রেটি পার্টি (পিডি) ও ফাইভ স্টার মুভমেন্টের সঙ্গে নতুন করে জোট বাধতে পারে। এই দুই দল জোট গঠন করতে ইতোমধ্যে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। নতুন সরকার গঠনের জন্য সংসদে বিরোধীদল ডেমোক্রেটি পার্টি তাদের নেতা হিসেবে নিকোলা জিনগারেত্তির নাম প্রস্তাব করতে পারে।
কন্তে কি নতুন সরকারের নেতৃত্ব দিতে পারবেন?
হ্যাঁ। একজন আইনজীবী। তার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক নেই। তবে লগি পার্টি এবং ফাইভ স্টার দলের একজন কণ্ঠস্বর হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাত্তারেল্লার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে কন্তের। পার্লামেন্টে আস্থা ভোট না হওয়ায় ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে তার।
নির্ধারিত নির্বাচনের সময় কখন?
আগামী শরতের আগে এবারের বাজেট পাস করাতে চান পদত্যাগকৃত প্রধানমন্ত্রী কন্তে। প্রেসিডেন্ট চলমান সঙ্কট নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন; যা শেষ হবে বৃহস্পতিবার। যে কারণে আগামী অক্টোবরের শেষে অথবা আগামী বছর দেশটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এছাড়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে শরতের সময় কোনো সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সৌজন্যে : জাগোনিউজ২৪