উন্নয়নে’র কথা জনগন না জানলে কিসের উন্নয়ন, : দিলোয়ার বখত
সুনামগঞ্জঃঃ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব দিলোয়ার বখত বলেছেন, সরকার গতবছর থেকে উন্নয়ন মেলা আয়োজন করছে। সরকার যে সমস্ত উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করছে, যে সমস্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা করছে সেগুলো জনগণকে জানানোর জন্য এই উদ্যোগ। যাদের জন্য উন্নয়ন তারাই যদি সেটা না জানে তাহলে কিসের উন্নয়ন, কাদের জন্য উন্নয়ন। এই মেলার একটি ভালো দিক হলো জনগণ যদি জানতে পারে কি উন্নয়ন হচ্ছে, তাদের উন্নয়নটি বুঝে নিতে পারবে। তাদের উন্নয়নের যেটি কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে তা জানতে পারবে। কোনো এলাকার উন্নয়নের জন্য আরো কি কি করা প্রয়োজন সে ব্যাপারে তারা পরামর্শ দিতে পারবেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন মেলা’র দ্বিতীয় দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সহকারি কমিশনার মো. আমিমুল এহসান খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম সচিব মনীন্দ্র কিশোর মজুমদার, সিলেট বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী চন্দন কুমার বসাক, সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাশ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান, পরিবার ও পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজাম্মেল হক প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত সচিব দিলোয়ার বখত আরো বলেন, সুনামগঞ্জে যে সমস্ত রাস্তাঘাট আছে সেইগুলোর উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের ভূমিকা রাখতে হবে। আমি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যোগদান করেছি আমার তরফ থেকে যা করা প্রয়োজন আমি করব। সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সাথে আমি যোগাযোগ রাখব। আমি জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করব যতগুলো রাস্তা আছে যে সমস্ত আঞ্চলিক সড়কগুলো আছে সেগুলোর প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয় সেই জন্য তারা পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। আমাদের বৃহত্তর সিলেট বিভাগের মধ্যে প্রথম মুখ্য সচিব হয়েছেন আমাদের ছাতকের সন্তান। আমরা তাকেও কাজে লাগাতে পারি। আমরা আশা করি এই সুযোগে সুনামগঞ্জ জেলার উন্নয়ন এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব দিলোয়ার বখত বলেন, ভিশন ২০২১-এ আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমাদেরকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তারপরে আমরা আর কোনো স্বপ্ন দেখিনি। বর্তমানে আমরা ভিশন ২০২১ সালে বা রূপকল্প ২০২১ সালের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি এবং তার মাধ্যমে আমাদের যে সমস্ত টার্গেট ছিল অনেকগুলো আমরা পূরণ করতে পেরেছি। আমরা এখন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। যেখানে থাকবে না কোনো দরিদ্র্য, যেখানে থাকবে না কোনো ক্ষুধা, যেখানে আমরা তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে সকল সেবা পাব। যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা এমন হবে যেকোনো প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলে আমরা সহজে যেতে পারব। আমরা ইতিমধ্যে এর কিছু নমুনা দেখতে পারছি। বিভিন্ন অঞ্চলে চার লেনের সড়ক বাস্তবায়ন হচ্ছে। আমাদের ঢাকা-সিলেট রোডও শীঘ্রই চার লেনে বাস্তবায়িত হবে এবং তা হয়তো সুনামগঞ্জ পর্যন্ত আসবে।
তিনি আরো বলেন, প্রথমে ডিজিটাল বাংলাদেশ কি সে ব্যপারে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না। আমরা না বুঝেই অনেক মন্তব্য করতাম। কিন্তু সেটি আমরা এখন বাস্তবে দেখতে পারছি। আপনারা সবাই জানেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ওয়েব পোর্টাল ন্যাশনাল ওয়েব পোর্টাল সেটি বাংলাদেশে। যেখানে ২৪ হাজার ওয়েব পোর্টাল আছে। যেটার নাম দিয়েছেন জাতীয় তথ্য বাতায়ন। এই বাতায়নটি ইউনিয়ন পর্যন্ত চলে গেছে। আমরা এই তথ্য বাতায়নের মাধ্যমে যেকোনো বিভাগের তথ্য পেতে পারি। একসময় যেখানে সরকারের মোটো ছিল ‘আমরা তথ্য গোপন করব’। বর্তমানে সেই তথ্যগুলো তথ্য বাতায়নে দেওয়া হচ্ছে। আমরা জানি দেশে তথ্য অধিকার আইন হয়েছে। সেই আইনে বলা হয়েছে প্রত্যেক বিভাগে যে উন্নয়ন কর্মকা- হচ্ছে তার বিবরণ ও তার প্রতিবেদন তথ্য বাতায়নে প্রদান করতে হবে। সুতরাং আমরা সেই সুযোগটি গ্রহণ করতে পারি। অতিরিক্ত সচিব দিলোয়ার বখত বলেন, আমরা বিভিন্ন সেবা ইলেক্ট্রনিকভাবে প্রদান করছি। আপনারা হয়তো জানেন ইতিমধ্যে সরকারি দপ্তর সমূহে ই-সার্ভিস চালু হয়েছে। আগে ছিল লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে নথিপত্র। সেই নথিপত্রগুলো ইলেক্ট্রনিকভাবে চালু হয়েছে। সরকারি সেবা সহজে করে নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে পরীক্ষার ফলাফল থেকে শুরু করে অন্যান্য তথ্য আমরা সহজেই পাচ্ছি। আলোচনা সভা শেষে স্থানীয় শিল্পীদের আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উন্নয়ন মেলার দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকালে ছিল বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও রিয়েলিটি শো। তাছাড়া দুপুরে ছিল বিভিন্ন বিভাগের উন্নয়ন সংক্রান্ত উপস্থাপনা।