এমপি রতনের বিরোদ্ধে ঐক্যজোট
সুনামগঞ্জ -১ (ধর্মপাশা-জামালগঞ্জ-তাহিরপুর ও মধ্যনগর) আসনের আওয়ামী লীগের ৬ মনোনয়ন প্রত্যাশী জোট বেঁধে গণসংযোগ শুরু করেছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে স্থানে স্থানে সমাবেশ করে বর্তমান এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের নানা কার্যক্রমের সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছেন। এই ৬ মনোনয়ন প্রত্যাশী আগামী জাতীয় নির্বাচনে ওই আসনে এমপি রতন ছাড়া অন্য যে কাউকে মনোনয়ন প্রদানের দাবি তুলেছেন। ৬ মনোনয়ন প্রত্যাশীর জোট বাঁধা নিয়ে এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের মন্তব্য,‘নৌকার জন্য জোট বেঁধে প্রচারণা চালালে ভালই হয়।’ শুক্রবার ধর্মপাশার জনতা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও কৃষক লীগের আয়োজনে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহ্ফিলের আয়োজন করা হয়।’ এই ইফতার মাহ্ফিলের অন্যতম উদ্যোক্তা ধর্মপাশা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলমগীর কবির। ইফতার মাহ্ফিলের আগে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ রফিকুল হক সোহেল, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম শামীম, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ নেত্রী অ্যাডভোকেট শামীমা শাহ্রিয়ার, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট হায়দার চৌধুরী লিটন, সাবেক যুগ্ম সচিব বিনয় ভূষণ তালুকদার ও ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল হাসান চৌধুরী। এরা সকলেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচনী এলাকার তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনয়ন দেবার দাবি জানান। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল একই স্কুলের মিলনায়তনে ‘মুজিব নগর দিবস’এর আলোচনা সভায় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জোট বেঁধে সভা করেন এবং এমপি রতনের কঠোর সমালোচনা করেন। ১১ মে এই নেতারাই ফেনারবাঁকে অ্যাডভোকেট শামীমা শাহ্রিয়ারের শ্বশুর আওয়ামী লীগ নেতা আলী আমজদ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ মাহ্ফিলে অংশ নেন এবং ওখানে তারা ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হন।
ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলমগীর কবির বলেন,‘আমরা পরিবর্তনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এমপি রতনের বিএনপি-জামায়াত প্রীতি এবং আওয়ামী লীগে ওই সব দলের নেতা-কর্মীদের অনুপ্রবেশ করিয়ে আওয়ামী লীগারদের কোনঠাসা করে রাখার বিরুদ্ধে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।’ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন,‘আগামী ১২ জুন মধ্যনগর এবং ১৩ জুন জামালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহ্ফিল হবে।’ ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ বিলকিস বলেন,‘আলাদা আলাদাভাবে ৬ জনেই তৃণমূলে দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে গিয়ে পাত্তা পাননি। এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। আলমগীর কবিরের অবস্থাও তাই।’ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম শামীম বলেন,‘ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন নির্বাচনী এলাকার প্রত্যেক ইউনিটে দলকে বিভক্ত করে দুর্বল করে দিয়েছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আমরা পরিবর্তন চাই। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করা হচ্ছে। দলীয় সভানেত্রীর কাছে ঐক্যবদ্ধভাবে দেখা করে রতন ছাড়া অন্য যে কাউকে মনোনয়ন দেবার অনুরোধ জানাব আমরা।’ সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন,‘নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হলে ভাল। এই ঐক্যে বিশৃঙ্খলা যেন সৃষ্টি না হয়। সকল ক্ষেত্রে শিষ্টাচারও বজায় থাকা উচিৎ। প্রতিযোগিতা যেন প্রতিহিংসার পর্যায়ে না যায়। সুনামগঞ্জ-১ আসনের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কী চায় সেটি সকলেই জানেন।’