সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর যে গুঞ্জন উঠেছে তা ‘গুজব’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে জাতীয় পার্টি। রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় এবং লিভারের সমস্যার উন্নত চিকিৎসা নিতে রোরবার (২০ জানুয়ারি) সিঙ্গাপুরে যান সাবেক এই রাষ্ট্রপতি।বিরোধী দলীয় এই নেতার মৃত্যুর গুঞ্জনকে গুজব বলছেন তার সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদও। মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক এক পোস্টে মাধ্যমে বিষয়টি জানান তিনি। ফেসবুক পোস্টে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বাঁচতে দিতে অনুরোধ করেছেন বিদিশা। বিদিশা ইসলাম এরশাদের পোস্টটি (ইংরেজি অক্ষরে বাংলায় লেখা) হুবহু তুলে ধরা হলো- বিদিশা লিখেছেন- উনাকে আরও কিছুদিন বাঁচতে দিন। ফেসবুকে দেখেছি উনাকে মেরে ফেলেছেন। বিশ্বাস করুন, উনি আরও কিছুদিন বাঁচতে চান আমাদের ছেলে এরিকের জন্য। উনি পৃথিবীতে এরিক ছাড়া বোধহয় আর কাউকে এতো ভালোবাসেননি। আমিও সব মাতৃত্বের লড়াই করার পরও ছেলেকে বাবা থেকে আলাদা করতে পারিনি।

সব থেকে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছি আমি আমার সন্তানকে কাছে না রেখে, চোখে না দেখে। তারপরও আমাকে পরম আনন্দ দেয় বাবা ছেলের খুনসুটি দেখে। কোনো শর্তের বন্ধন নেই। বাবা-ছেলের বয়সের পার্থক্যের পরও তাদের মধ্যে আড্ডা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক চোখে পড়ার মতো। ছেলেকে স্কুলে দিয়ে ও নিয়ে আসে একজন বৃদ্ধ পিতা। ছুটির দিনে বাবা-ছেলের একসঙ্গে ভ্রমণ। রাতে এরিক ছাড়া উনি ঘুমাতে পারেন না একদম। তাই তো গত সপ্তাহে আমি যখন সিএমএইচ গেলাম দেখতে, দেখি নাস্তা করেন নাই, অপেক্ষায় আছে এরিকের। দুপুরে এরিক স্কুল থেকে ফিরলে লাঞ্চ করবেন বললেন। আমাকে সরি বললেন, অনেক অন্যায় হয়ে গেছে আমার সঙ্গে যা সংশোধন করার উপায় নেই। তা অন্য প্রসঙ্গ। অনেক স্মৃতি চারণ করলেন তিনি। বলেই ফেললেন, রাত জেগে এরিক নাকি বক বক করে, যা নাকি আমি করতাম এক কালে। উনি চোখ বন্ধ করলে এরিক নাকি চোখ খুলে দেয়, বলে আচ্ছা ড্যাডি এইবার তাহলে একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনাই, কিন্তু তুমি তো ঘুমাবে না আমার আগে। গান করতে করতে এরিক নিজেই ঘুমিয়ে পড়ে। আমিও নাকি একি কাজ করতাম অনেক বছর আগে। সেদিন উনার চোখে জল ছিল। জীবন মৃত্যুর এই শেষ সময়ে উনার উপলব্ধিগুলো নিশ্চয়ই মিথ্যা না। চল্লিশ মিনিট আমার হাত উনার দুই হাত দিয়ে ধরে বসে ছিলেন। চোখ দিয়ে ঝরছিল জল আমাদের দুজনেরই। আমাদের দুইজনের মধ্যে সময়ের গ্যাপটা অনেক বেশি হয়ে গেছে এতদিনে, তাই উনার জীবনে শেষ সময়ে আমি কোনো সেবা করতে পারলাম না।

 

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn