জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিশেষ সহকারী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু আবার বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন। এখন তার বয়স ষাটের কাছাকাছি। আর কনে হলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের ভাগ্নি। সে হিসেবে বাবুলের শ্বশুর হতে যাচ্ছেন এরশাদ। ২০০৫ সালে ক্যান্সারে স্ত্রী মারা যায় জিয়াউদ্দিন বাবলুর। এরপর একমাত্র ছেলে আশিকের মুখ চেয়ে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করতে রাজি হননি। কিন্তু এখন তার ছেলে ও ছেলের বউই চাচ্ছেন, তাদের বাবা আবার বিয়ে করুক। দলীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এরশাদের উদ্যোগেই জিয়াউদ্দিন বাবলু আবার বিয়ে করছেন। ঘরোয়াভাবে এ বিয়ে অনুষ্ঠান হবে। ২১ এপ্রিল সকালে বারিধারায় এরশাদের প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় আক্দ এবং সন্ধ্যায় গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বাবুল। তবে মাসখানেক আগে  তিনি জানিয়েছিলেন, বিয়ের বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তা চলছে। তবে সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তার স্ত্রী ফরিদা যখন মারা যায়, ছেলে আশিক তখন অনেক ছোট। ছেলের কথা ভেবে তিনি আর দ্বিতীয় বিয়ের চিন্তা করেননি। মা-বাবা দুজনে আদর দিয়েই তিনি ছেলেকে বড় করে তুলেছেন। ছেলে বড় হয়ে বিদেশে পড়াশুনা শেষ করেছে। তারপর তিনি ছেলেকে বিয়ে করিয়েছেন। এখন তার ছেলেও বৌমা চায়, তাদের শ্বশুড় আবার বিয়ে করুক।

জিয়াউদ্দিন তখন বাবলু আরো বলেছিলেন, আমার জীবনে ফরিদার স্মৃতি এখনো সেই আগের মতোই বেঁচে আছে। ফরিদাকে কেনদিনও ভোলা সম্ভব না। সে শুধু আমার স্ত্রীই ছিলো না, ছিলো আার বড় বন্ধু। আমার রাজনীতি জীবনের প্রধান সহযোদ্ধা। যে আমাকে সাহস জুগিয়েছে। দু:সময়ে পাশে থেকেছে। তবে এও ভাবি, ছেলের তো নিজের একটা জীবন আছে। বৃদ্ধ বয়সে আমাকে কে দেখবে? তাই ছেলে ও বৌমার অনুরোধ চিন্তা করে দেখছি। তবে সিদ্ধান্ত এখনো স্থির হয়নি বলেও জানান জিয়াউদ্দিন বাবলু। ঢাকার গুলশানে তিনি থাকলেও প্রতি শুক্র ও শনিবার তিনি চট্টগ্রামে আসেন। নিজের বাসা চান্দগাঁওতে দলের কর্মীদের সঙ্গে সময় কাটান।

প্রসঙ্গত, আগে জাপার মহাসচিব ছিলেন জিয়াউদ্দিন বাবলু। গত বছরের ১৯ জানুয়ারি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে তাকে মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সে সময় এ.বি.এম. রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দেন এরশাদ। সম্প্রতি দলের কাউন্সিলেও মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন এ.বি.এম. রুহুল আমিন হাওলাদার। বাবলু দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যের দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে চেয়ারম্যানের সহকারীর দায়িত্ব পালন করছেন।

জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস থেকে জানা যায়, সত্তরের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ও প্রতাপশালী ছাত্রনেতা ছিলেন তিনি। ছিলেন ডাকসুর জিএস। এরশাদ সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা ছাড়াও পরবর্তী সময়ে এই দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং পর্যটনমন্ত্রীও ছিলেন। চট্টগ্রামের রাউজানের কদলপুরে তার গ্রামের বাড়ি হলেও জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে তিনি ছিলেন বেশি সম্পৃক্ত। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জাপা নেতা জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু চট্টগ্রাম-৯ আসন থেকে লাঙ্গল প্রতীকে ৭৯ হাজার ৭৭৯ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বদ্বী ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট আবু হানিফ হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে ৩ হাজার ৫৯৯ ভোট পান।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn