ঐক্য’র বিপরীতে মেয়র জগলুল এখন রাজপথে
সুনামগঞ্জ:: সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ‘কথিত ঐক্য’র বিপরীতে দলের কেন্দ্রীয় নেতা আওয়ামীলীগ জাতীয় পরিষদ সদস্য পৌরসভার মেয়র আয়ুব বখত জগলুল-এর অবস্থান এখন রাজপথে। তিনি একাই এখন দৃশ্যপটে। সুনামগঞ্জ-৪ আসনে নির্বাচন করার লক্ষ্যে যাচ্ছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ- ৩ আসনের সংসদ সদস্য, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জীতেন্দ্র তালুকদার পিন্টু, অ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান সেলিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নবনীকান্ত দাশ। মন্ত্রী মান্নান সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগকে গতিশীল করতে মেয়র জগলুলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। এর আগে গত ২৭ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জে বিশাল শোডাউন দেন মেয়র আয়ুব বখত জগলুল। ওইদিন জগলুল বলেন, ‘সুনামগঞ্জে স্থানীয়দের থেকে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী দিতে হবে, বহিরাগত কাউকে সুনামগঞ্জবাসী মেনে নেবে না।’
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবসে শোডাউন করেন আয়ুব ববখত জগলুল। আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সম্পাদক , সাবেক পররাষ্টমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ আজাদ ডন এ শোডাউনে উপস্থিত ছিলেন। সুনামগঞ্জ আওয়ামী লীগে কোন্দল শুরু ’৯৬ সাল থেকে। কখনো স্নায়ুযুদ্ধ আবার কখনো দ্ব›দ্ব সংঘাতে রূপ নিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের এই মেয়াদে দ্ব›দ্ব শুরু হয় জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে। ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সম্মেলনে মতিউর রহমানকে সভাপতি ও এনামুল কবীর ইমনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। এ নিয়ে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করে। পরবর্তীতে জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আবারো বিভক্ত হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। দলীয় মনোনয়ন নিয়ে এনামুল কবীর ইমন নির্বাচনে অংশ নিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হন দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা মুকুট। জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এমএ মান্নানসহ সংসদ সদস্যরা ইমনের পক্ষে কাজ করলেও জেলা সভাপতি মতিউর রহমানসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ মুকুটের পক্ষে কাজ করেন। নির্বাচনে মুকুট বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। নির্বাচিত হওয়ার এক বছরের মধ্যে আয়ুব বখত জগলুলের সাথে নুরুল হুদা মুকুটের দূরত্ব কৈরি হয়।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থীতা নিয়ে মতিউর রহমানের সাথে দ্ব›েদ্বর জের ধরে এ দ্বন্ধ তৈরি হয়। এক সময় মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়। গত ২৫ নভেম্বর মতিউর-ইমন-মুকুট এক মঞ্চে উঠে ঈমানী ঐক্যের ঘোষণা দিলে বিভক্তি আরো বাড়তে থাকে। তবে, এ ঐক্য নিয়ে সন্দিহান একাধিক নেতা বলেন, ‘এ ঐক্য বেশিদিন ঠিকবে না। স্বার্থের ঐক্য লোক দেখানো ছাড়া কিছু নয়।’ এ ব্যাপারে আয়ুব বখত জগলুল বলেন, ‘তথাকথিত ঐক্যের সাথে আমার সম্পৃক্ততা নেই। দল করতে হলে মাঠে থাকতে হবে। জনগণের সাথে থাকতে হবে। ঢাকায় বসে রাজনীতি হয় না।’ তিনি বলেন, ‘রাজনীতির মাঠে ছিলাম, মাঠেই আছি। জনপ্রতিনিধি হয়েছি জনসেবার জন্য। ভাগভাটোয়ার রাজনীতি যারা করছে জনগণকে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আমার আন্দোলন চলবে।’