ওয়েছ খছরু:-কটাই মিয়া। সিলেটি নাটক পাড়ার পরিচিত নাম। সিলেটি ভাষার ‘ব্যঙ্গাত্মক’ এ নামটি ব্যবহার করে সিলেটে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। তবে- মূল নাম তার সাহেদ মোশারফ। কটাই নামটি শুধু সিলেটে নয়, লন্ডনেও ব্যাপক পরিচিত। এই কটাই মিয়ার বিরুদ্ধে জিডি করেছেন মিলি বেগম। মিলি সিলেট নগরীর খাসদবির আবাসিক এলাকার মৃত আব্দুল হেকিমের মেয়ে। গত শুক্রবার সিলেটের কোতোয়ালি থানায় মিলি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। আর এই জিডি নিয়ে তোলপাড় চলছে সিলেটে। বিশেষ করে নাটকপাড়ায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। আর এই জিডির মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে মিলি ও সাহেদের দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্কের ঘটনাবলী। শুধু প্রেম নয়, তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো দিনের পর দিন কাটিয়েছে। জিডিতে মিলি বেগম উল্লেখ করেছেন- প্রায় ৭ বছর আগে সাহেদ ওরফে কটাইয়ের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে ভাব জমে। সেই থেকে তারা প্রায় সময় মোবাইল ফোনে আলোচনা ও ভাব বিনিমিয় করেন। একপর্যায়ে মিলির সঙ্গে গভীর প্রেমে জড়িয়ে পড়েন সাহেদ। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে মিলিকে বিয়ে করবেন বলেন আশ্বস্ত করেন সাহেদ। এমনকি তার পরিবারের মা বেগম বিবি, বড়ভাই আহমদ আলী, বোন সালমা বেগম, আসমা বেগম সহ আরো অনেকের সঙ্গে মিলি বেগমকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করায় এবং ভবিষ্যতে বিয়েতে যাতে কোনো দ্বিমত না আসে সে ব্যাপারে আশ্বস্ত করে। জিডিতে মিলি বেগম উল্লেখ করেন- সাহেদ ওরফে কটাই তাকে জানিয়েছিল- তার ছোটো বোন সালমাকে বিয়ে দেয়ার পরপরই তাকে বউ করে ঘরে তোলবে। এসব আশ্বস্ত করার পর সে বিভিন্ন সময় নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন কৌশলে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। স্ত্রীর মতো রাতের পর রাত তারা কাটিয়েছে। মিলি জানান- সাহেদ ওরফে কটাই ২০১৩ সালে ব্যবসার কথা বলে তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ঋণ নেয়। তার সঙ্গে গভীর সম্পর্ক থাকার কারণে ওই বছরের ১০ই জানুয়ারি তার হাতে মিলি বেগম নগরীর তালতলাস্থ লিমনের সিডি ক্যাসেটের দোকানের সামনে ওই টাকা তুলে দেন। এ সময় তার সঙ্গে সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- দরগাহ গেইটের টিপু বেগমের স্ত্রী বৃষ্টি ও নয়াসড়কের সবুজের স্ত্রী সামিনা ইসলাম মৌ। এরপর তাকে ঋণ হিসেবে আরো দুই লাখ টাকা দেন। তিনি জানান- কয়েক মাস আগে থেকে কটাই তার সঙ্গে বিয়ে নিয়ে টালবাহানা শুরু করে। এতে বিমর্ষ হয়ে পড়েন মিলি বেগম। তিনি পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য কটাইকে চাপ দিলে কৌশলে সাহেদ বার বার বিয়ে এবং টাকা পরিশোধের বিষয়টি এড়িয়ে যায়। একপর্যায়ে টাকা প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করে দেয়ার আশ্বাসও দেয়। কিন্তু টাকা না দিয়ে বার বার কালক্ষেপণ করতে থাকে। মিলি জানান- গত ২০শে এপ্রিল বিকাল ৩টার দিকে তিনি বন্দরবাজারের সুরমা পয়েন্টে কটাইকে পেয়ে টাকার জন্য চাপ দিলে সে পুরো টাকাই অস্বীকার করে। একই সময় সে হুমকিও দেয় মিলি বেগমকে। জানায়- ‘টাকা চাইলে মিলিকে খুন করে ফেলবে।’ এদিকে, কোতোয়ালি থানার ওসি গৌসুল হোসেন মিলির অভিযোগটি জিডি আকারে গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন। মিলির অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন সিলেটের সাহেদ আহমদ ওরফে কটাই। তিনি গতকাল বিকালে জানিয়েছেন- ‘মিলিকে আমি চিনি। তার সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কখনো তার সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক ছিল না। কিংবা তার সঙ্গে গভীর কোনো সম্পর্কেও জড়াইনি। সব সময় বন্ধু হিসেবে সম্পর্ক রেখেছি এবং বন্ধু-বান্ধবদের মতো আড্ডা দিয়েছি। তার কাছ থেকে কোনো টাকাও তিনি ঋণ নেননি বলে জানান।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn