কম্পিউটার স্ক্রিন কি আসলেই চোখের ক্ষতি করছে?
অফিসের কাজ অথবা পড়াশোনা এমনকি কোনো কাজ ছাড়াই অনেকে সারাদিন কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে কাটান। এই কাজটি কি আপনার চোখের ক্ষতি করছে? অনেকের মনে হয় তাদের চোখ ক্লান্ত হয় গেছে, মাথা ধরে আছে। আসলে কী হচ্ছ আপনার এই সমস্যাটি হতে পারে “কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম”। এটাকে ডিজিটাল আই স্ট্রেইনও বলা হয়। লম্বা সময় ধরে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট এবং স্মার্টফোন ব্যবহার করেন যারা তাদের এ সমস্যা হতে পারে, জানা যায় অ্যামেরিকান অপটোমেট্রিক অ্যাসোসিয়েশন থেকে। অফিসে অপর্যাপ্ত আলো, স্ক্রিনের আলো এবং বেঠিকভাবে বসার কারণে এই সমস্যা বাড়তে পারে। এর থেকে শুষ্ক চোখের সমস্যাও হতে পারে। সাধারণ সময়ে আমরা যতবার চোখের পাতা ফেলি, স্ক্রিনের সামনে তার ৬৬ শতাংশ কম ফেলি। এ কারণে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়, জানা যায় ইউনিভার্সিটি অফ আইওয়া হেলথ কেয়ারের রিপোর্ট থেকে।
সুতরাং স্ক্রিনের কারণে চোখ ক্লান্ত হয় ঠিকই। কিন্তু তারা কি দৃষ্টিশক্তি খারাপ হবের পেছনে দায়ী? না, বলেন মেলানি এ. শ্মিট। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিনের অপথ্যালমলজির একজন সহকারী অধ্যাপক। ইদানিং মায়োপিয়ার সমস্যাটা বেশী দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সেটা স্ক্রিনের জন্য কিনা তা গবেষকেরা এখনো নিশ্চিত নন। এর পেছনে বংশগত কারণ, বাইরে যথেষ্ট সময় না কাটানো এমনকি ঘুমের সমস্যাও জড়িত। কোনো ওয়েবসাইটে লেখা পড়া বা ইনস্টাগ্রাম দেখার সময়ে চোখের আশেপাশের ছোট ছোট পেশীগুলো এসব জিনিস ফোকাসে আনার জন্য কাজ করে। এই কাজ খুব বেশী সময় ধরে করলে তাতে চোখের ওপর চাপ পড়ে, এই ক্লান্তিই আপনি অনুভব করেন। মায়ো ক্লিনিকের মতে এর কোনো দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবনেই। মাদ্রিদের এক সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা যায়, এলইডি লাইট ইঁদুরের রেটিনা ড্যামেজ করতে পারে। স্ক্রিনে ব্যবহার করা হয় এই লাইট। কিন্তু এই একই রকমের ক্ষতি মানুষেও হয় কিনা তা গবেষণা করে দেখা প্রয়োজন।
মোট কথা এটাই, আপনি যদি স্ক্রিন থেকে নিয়মিত ব্রেক না নেন তাহলে ক্ষতি হতে পারে, যদিও সেই ক্ষতি অস্থায়ী হয়। ২০-২০-২০ রুল মেনে আপনি চোখের ওপর চাপ কমাতে পারেন। প্রতি ২০ মিনিট স্ক্রিনে কাজ করার পর ২০ ফুট দুরত্বের কোনো কিছুর দিকে তাকিয়ে থাকিন ২০ সেকেন্ড। এছাড়াও কম্পিউটারের স্ক্রিনের আলো কমাতে পারেন এবং আই ড্রপ ব্যবহার করে শুষ্ক চোখ থেকে মুক্ত হতে পারেন। তবে কিছুটা সময় বাইরে কাটানো এবং প্রকৃতির দিকে দৃষ্টি দেওয়াটা হতে পারে সবচাইতে ভালো উপায়।