কানাডার সাংসদ হলেন মৌলভীবাজারের ডলি
মৌলভীবাজারের মেয়ে ডলি বেগম কানাডার প্রথম বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ৭ জুন অনুষ্ঠিত অন্টারিও প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্ট নির্বাচনে স্কারবোরো সাউথ ওয়েস্ট আসন থেকে নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) এর মনোনয়নে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়নের বাজরাকোনা গ্রামের সন্তান ডলি বেগম। তিনি মনুরমুখ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সুজন মিয়ার নাতনী। ডলি প্রগ্রেসিভ কনজারভেটিভ পার্টির গ্রে এলিয়েসকে প্রায় ৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারান। ডলির প্রাপ্ত ভোট ১৯৭৫১টি। নির্বাচনে তার এই জয়কে স্থানীয় অনেকে বাংলাদেশী মেয়ের টরন্টো বিজয় হিসেবে দেখছেন। টরেন্টোতে বসবাসকারী সদর উপজেলার কনকপুর ইউনিয়নের শাহিন আহমদ মুঠোফোনে জানান, আমাদের কমিউনিটির মুখ উজ্জ্বল করেছেন ডলি। আগামীতে কানাডার রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশীদের অবস্থান আরো শক্ত হবে। এরআগে কোনো বাঙালী কানাডার নির্বাচনে জিততে পারেননি। ডলি বেগম প্রথমবারের মতো ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। ডলির পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ডলি ২০০০ সালে এগার বছর বয়সে বাবা-মায়ের সাথে কানাডায় আসেন। ২০১২ সালে তিনি টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করেন। আর ২০১৫ সালে উন্নয়ন প্রশাসনে মাস্টার্স করেন টরন্টো ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে।
ডলি নির্বাচনে দাঁড়ানোর পর কানাডায় বসবাসরত বাঙালীদের অকুণ্ঠ সমর্থন পান। ভোটের আগে ভোটারদের উদ্দেশ্য করে ডলি বলেছেন, “আমি আপনাদেরই একজন, আপনাদেরই মতো জীবনযুদ্ধের প্রতি পদে হাজারো বাধাবিপত্তি আর অসাম্যের হয়ে লড়াই করা একজন। তাই আমি নির্বাচিত হওয়া হবে আমাদের মতো হাজারো মানুষের নিজেদের বিজয়।”ডলির বিজয়ে আনন্দিত কানাডা প্রবাসী বাঙালীরা, তার দল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থকরা এবং সাথে সারা বিশ্বের বাঙালীরাও। প্রথমবারের মতো কোনো বাঙালী কানাডার একটি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মেম্বার অব প্রভিন্সিয়াল পার্লামেন্ট নির্বাচিত হওয়া রূপক অর্থে টরন্টো বিজয়ই বলা যায়। ডলি বেগমের মামা মো. সয়ফুল আলম সিলেটটুডে’কে জানান, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি বাবা রাজা মিয়া রোড এক্সিডেন্ট করে দীর্ঘদিন বিছানায় থাকার কারণে পারিবারিক ভাবে অনেক কঠিন সময় অতিক্রম করতে হয়েছে ডলি বেগমের। সে সময় একমাত্র ছোট ভাই মহসিন ও পরিবার সামলেছেন ডলি বেগম। ডলি বেগম নির্বাচিত হওয়ায় তিনি গর্বিত। মনুরমুখ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক শেফুল সিলেটটুডে’কে জানান, আমার ইউনিয়নের একটি মেয়ে কানাডা জয় করেছে তা আমাদের জন্য গর্বের। আমরা ইউনিয়নবাসী আনন্দিত।