কামরানের সেঞ্চুরিতে তামিম-সাকিবদের রাতজাগা সফল
তাদের একটা দল খেলছে দুবাইয়ে। নামে পাকিস্তান সুপার লিগের তৃতীয় কোয়ালিফায়ার কিন্তু আসলে একবারে সেমিফাইনালই। জিতলে ফাইনালে, হারলে টুর্নামেন্ট শেষ। শ্রীলঙ্কা থেকে তাই রাত জেগে দুবাইয়ে চোখ রাখতে হয় সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে। তাদের দল পেশোয়ার জালমিই যে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নেমেছিল করাচি কিংসের বিপক্ষে। ওপেনার কামরান আকমল ৬৫ বলে বিস্ফোরেক ১০৪ রানের ইনিংস খেলেছেন। ৬টি চার। ৭টি ছক্কা। দলের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৮১। সতীর্থের কাছ থেকে ম্যাচ জেতানো এমন অসাধারণ ইনিংস দেখে সাকিব-তামিমদের রাতজাগা সফল। করাচিকে ২৪ রানে হারিয়ে পিএসএলের দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে উঠেছে পেশোয়ার জালমি। ১৮২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫৭ রানে থামতে হয় তারাভরা করাচিকে। কামরানই ম্যাচের হিরো। এবারের পিএসএলের প্রথম সেঞ্চুরির কীর্তিটা তার। আর তা এমন বাঁচা-মরার লড়াই ম্যাচে।
প্রথম কোয়ালিফায়ারে জালমিকেই হারিয়ে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্স প্রথম সুযোগে ফাইনালে উঠে বসে আছে। মাহমুদউল্লাহদের কোয়েটার সাথে ৫ মার্চ জালমির ফাইনাল, দ্বিতীয় পিএসএলের শিরোপা জয়ের লড়াই। অনেক বিতর্কের পরও পাকিস্তানের লাহোরে। তামিম-সাকিব-মাহমুদউল্লাহ জাতীয় ডিউটিতে লঙ্কায়। তাদের তাই পাকিস্তানে গিয়ে পিএসএলের ফাইনালে খেলার প্রশ্নই আসে না। যদিও সেদিন শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইটা সাকিব-তামিম বনাম মাহমুদউল্লাহর দলের মধ্যে।
গ্রুপ পর্বে দুবার দেখায় দুই দলে সমতা ছিল। একটি করে জয়-পরাজয়। কিন্তু এই ম্যাচ তো অস্তিত্বের। তামিম-সাকিব নেই। ওদিকে ক্রিস গেইল করাচিকে কোয়ালিফায়ার থেকে এই পর্যায়ে তুলে এনেছেন একা হাতে। তাদের দলে আরো অনেক তারকা। কিন্তু গেইল পরে ৩১ বলে ৪০ করে ফিরেছেন। কিন্তু তার আগে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে মরুঝড় বইয়ে দিয়েছেন কামরান। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি সেঞ্চুরি করেছেন। যেটি আবার পিএসএলের ইতিহাসের দ্বিতীয়। এই আসরের শুরুতেই স্পট ফিক্সিংয়ে নিষিদ্ধ হওয়া শারজিল খান গত আসরে একমাত্র সেঞ্চুরিটি করেছিলেন।
তো গেইলের মতো মূর্তিতে এদিন আর্বিভাব অভিজ্ঞ কামরানের। মারমার ব্যাটিং। ডেভিড মালানেরও এই কাজে সুনাম আছে। ১১.২ ওভারে ৯৭। কোনো উইকেট না হারিয়েই। মালান ৩৬ রান করে গেলেন। মারলন স্যামুয়েলসের সাথে এবার আরো ত্রাস জাগানো ব্যাটিং কামরানের। স্যামুয়েলস ২২ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৩৭ রানে অপরাজিত। কিন্তু ৭.৪ ওভারে তাদের ৭৭ রানের জুটি ম্যাচটাকে করাচির নাগালের বাইরে নিয়ে গেছে বলে পরে প্রমাণিত। শহীদ আফ্রিদি এদিন ০। কিন্তু ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হওয়া কামরান ছিলেন মাস্টারক্লাস।
তো যে কোনো ম্যাচ জেতানোর মতো মাস্টার ব্যাটসম্যানের কোনো কমতি ছিল না করাচি দলে। সেনসেশনাল বাবর আযম ও সবার আকর্ষণ গেইল ওপেনার। ৩ উইকেট শিকারী মাইকেল জর্ডান শুরুতেই ফেরান বাবরকে (১)। ওয়াহাব রিয়াজ ও জর্ডান মিলে এরপর দ্রুত ফেরান কুমার সাঙ্গাকারা (১৫) ও শোয়েব মালিককে (০)। ১৯ রানে ৩ উইকেট নেই করাচির। টার্গেট আরো দূরে চলে যায়।
একটু বুঝে নিয়ে গেইল মারতে শুরু করলেন। ৪টা ছক্কা মারলেন। ২টি চার। ওয়াহাব এই তাণ্ডব থামান ৮০ রানের সময়। ষষ্ঠ উইকেটে শেষ চেষ্টা করে দেখতে চেয়েছেন কাইরন পোলার্ড ও ইমাদ ওয়াসিম। ঝড়ের মুখে ৩৬ বলে ৬২ রানের জুটি। কিন্তু ১৪২ রানের সময় পোলার্ডকে ওয়াহাব শিকার করে জুটি ভাঙেন। আর আশা থাকেনি করাচির। পোলার্ড ২৬ বলে ৪৭, ইমাদ ১৮ বলে ২৪ রান করেছেন। জর্ডান আর ওয়াহাব তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন। মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কামরানের চেয়ে তাদের কৃতিত্বটাও কম নয় মোটে।