কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ায় এবার প্রশ্নফাঁস হয়নি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ায় এবার এইচএসসির প্রশ্নফাঁস হয়নি। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বজুড়েই তার অপব্যবহার হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার গণভবনে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, গত বেশ কয়েক বছর ধরে পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ থাকলেও এবার এ পরীক্ষা অভিযোগ ছাড়াই শেষ হয়। এবারে যে পদ্ধতিটা নেয়া হয়েছে, সেটা খুবই চমৎকার। আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীরা চলে যাবে পরীক্ষার হলে। ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে, কয়েকটা সেটের প্রশ্নপত্র থাকে, কোন সেটটা দেয়া হবে। তার ফলে নকল বন্ধ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন পরীক্ষা শেষ করতে প্রায় দুই মাস সময় লেগে যায়, তা কমিয়ে আনতে পারলে শিক্ষার্থীদের যেমন আরও বেশি মনোযোগী করা যাবে, পরীক্ষা নিয়ে ‘গুজব আর অপপ্রচারের’ হাত থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে। শেখ হাসিনা বলেন, ছেলেমেয়েরা একটু পড়াশোনা করলেই যেখানে ভালো ফল করতে পারে, সেখানে নকলের প্রয়োজন হবে কেন? এবার পরীক্ষা শেষ করার পর ৫৫ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে পারায় শিক্ষক এবং শিক্ষা বোর্ড ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা যখন পরীক্ষা দিয়েছি, ১০টা সাবজেক্ট, মাঝখানে দুই দিন ছুটি ধরে আমাদের পরীক্ষা শেষ হয়ে যেত। তখন তো আমাদের দুই বেলা করে পরীক্ষা দিতে হত। সকালে এক পেপার, বিকালে এক পেপার। আমাদের তো দম ফেলার সময়ই থাকত না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার সময় আরেকটু কমিয়ে আনার ব্যবস্থা যদি করতে পারেন, তাহলে দেখবেন, ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করবে, পরীক্ষাটাও তাড়াতাড়ি হবে, আর এখানে ওই যে নানা ধরনের কথা প্রচার টচার, অপপ্রচার, তার হাত থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে। প্রধানমন্ত্রী পাস করা শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সরকার শিক্ষাখাতের উন্নয়নে সব রকম পদক্ষেপ নিয়েছে। কারণ আমরা জানি দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত করতে হলে শিক্ষিত জাতি গড়ে তোলার বিকল্প নেই। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। আর যারা অকৃতকার্য হয়েছে তাদের মনোবল না হারাতে এবং পরবর্তী পরীক্ষার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। এরআগে সকাল ১০টার পর প্রধানমন্ত্রীর হাতে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এরপর সংশ্লিষ্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানরা তাদের স্ব স্ব বোর্ডের ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার পাস করেছে ৬৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ২৯ হাজার ২৬২ জন পেয়েছে জিপিএ-৫। পাসের হার আর পূর্ণ জিপিএ পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা- দুটোই গতবারের চেয়ে কমেছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অংশ নেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।