বগুড়ায় ঋণের বোঝা বইতে না পেরে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে এক লেদমিস্ত্রি ও তার স্ত্রী সহমরণের চেষ্টা করেছেন। একমাত্র শিশুকন্যাকেও বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) রাতে সদরের নওদাপাড়ার বাড়িতে এ ঘটনার পর হাসপাতালে স্ত্রী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বুলবুলি খাতুন (২০) মারা গেছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন স্বামী মহিদুল হাসান কিনু (৩০) ও তাদের মেয়ে মেঘলা আকতার নিপু (৬)। এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যরা কিছুই বলতে পারছেন না। প্রতিবেশীদের উদ্ধৃতি দিয়ে ছিলিমপুর মেডিকেল ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, বগুড়া সদরের নওদাপাড়ার পেশায় লেদমিস্ত্রি মহিদুল হাসান কিনু লাহিড়িপাড়ার বুলবুলি খাতুনকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে মেঘলা আকতার নিপু নামে ছয় বছর বয়সী শিশুকন্যা রয়েছে। কিনু বিভিন্ন এনজিও এবং সমিতি থেকে চার লাখ টাকা ঋণ নেন। অভাবের কারণে তিনি ঋণের কিস্তি টানতে পারছিলেন না।

কিস্তি আদায়কারীদের চাপে কিনু ও পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বুলবুলি হতাশ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তারা সহমরণের সিদ্ধান্ত নেন। মঙ্গলবার রাতে একটি গ্যাস ট্যাবলেট ভেঙে মহিদুল ও বুলবুলি খান। কিছু অংশ তাদের শিশুকন্যা নিপুকে খেতে দেন। বিষক্রিয়ায় তারা তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার রাত ৪টার দিকে তাদের তিনজনকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরের দিকে বুলবুলি মারা যান। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ওই হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সিলিমপুর মেডিকেল ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর রফিকুল ইসলাম জানান, চার লাখ টাকা ঋণ পরিশোধ করতে না পেরেই ওই দম্পতি আত্মহত্যার জন্য বিষপান করেন। তারা তাদের শিশুকন্যাকেও বিষ খাওয়ান। স্ত্রী মারা গেছেন; স্বামী ও শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের অবস্থা সংকটাপন্ন। সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, এ ঘটনায় স্বজনরা কিছুই বলতে পারছেন না। তবে এলাকাবাসী বলছেন, ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে ওই দম্পতি হতাশ ছিলেন। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। শিগগিরই তাদের বিষপানের সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। সদর থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn