কুলাঙ্গার’ শিক্ষকদের শাস্তি দিতে হচ্ছে আলাদা আইন: শিক্ষামন্ত্রী
যেসব শিক্ষক ক্লাসে মনোযোগ না দিয়ে টাকার বিনিময়ে পড়াতে শিক্ষার্থীদের বাসায় ডাকেন, যারা প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে মেধা ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন, সেইসব শিক্ষকদের ‘কুলাঙ্গার’ বলে আখ্যা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি জানান, এসব শিক্ষকদের ধরে ধরে শাস্তি দিতে আলাদা আইন করা হচ্ছে। শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নিকুঞ্জে হোটেল লা মেরিডিয়ানে জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষা ব্যবস্থা যুগোপযোগী করতে ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের শাস্তি দিতে আইন আছে, তবুও বিবেকহীন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন করা হচ্ছে।’ শিক্ষার মান বাড়াতে শিক্ষকদের বেতন দ্বিগুণ করার পাশাপাশি শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের নতুন নতুন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা এবং পাঠদানে নতুনত্ব আনা হয়েছে বলে জানালেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, ‘গতানুগতিক শিক্ষা দিয়ে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি সম্ভব নয়। ফলে আমরা উন্নত কিছু মাধ্যম সৃষ্টি করেছি।’
শিক্ষাব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে বিভিন্ন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দেশে শিক্ষানীতি করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আমরা একটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছি। তবে এই শিক্ষানীতি কোনও দলীয় শিক্ষানীতি নয়, এটি জাতীয় শিক্ষানীতি।’ এতকিছুর পরও কিছু ‘কুলাঙ্গার’ শিক্ষক প্রশ্নফাঁস করছে মন্তব্য করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘দেশে সব শিক্ষক ভালো নয়। ভালো, মানবিক ও বিবেকবানদের মাঝেও কিছু কুলাঙ্গার রয়েছে যারা প্রশ্নফাঁস করছে। সারাবছর অনেক কষ্টে প্রশ্ন পাহারা দিচ্ছি। বিজি প্রেসে কঠোরভাবে প্রশ্ন পাহারা দেওয়া হয়, প্রেসে যারা কাজ করে তাদের ভেতরে ঢুকতে হয় জন্মদিনের ড্রেস পরে, বেরও হতে হয় জন্মদিনের ড্রেস পরে। কিন্তু পরীক্ষার দিন সকালে প্রশ্ন হাতে পেয়েই তা ফাঁস করে দিচ্ছে ওইসব শিক্ষক। তাহলে কীভাবে এই প্রশ্নফাঁস ঠেকাবো?’ অভিভাবকদেরও সমালোচনা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শিক্ষকদের সঙ্গে অভিভাবকরাও প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত। তারা অতি উৎসাহী হয়ে সন্তানের জন্য পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্ন খুঁজে বেড়ান। এমন অনেকে আছেন যারা সন্তানকে বলেন, ‘বাবা আর একটু কষ্ট করো, শুনেছি তোমার স্যার প্রশ্ন পেয়েছি, আমি আনতে যাচ্ছি।’ এমন অভিভাবক যদি দেশে থাকে তাহলে কীভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হবে? একসময় ওই সন্তানই তার অভিভাবক ও শিক্ষককে ঘৃণা করে বলবে, ‘ওরাই আমার জীবনটা নষ্ট করেছে।”