কুয়েতে অগ্নিকাণ্ডে ৫ জনের মৃত্যু: কমলগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম
মধ্যপ্রাচ্যের কুয়েত শহরে একটি আবাসিক ভবনের এসির কমপ্রেসর বিষ্ফোরণে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে কমলগঞ্জের জুনেদ মিয়ার স্ত্রী, দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বাসার বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে গেছেন জুনেদ মিয়া। সোমবার বাংলাদেশ সময় বিকাল পাঁচটায় কুয়েত শহরের সালমিয়াত এলাকায় এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। তাদের বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামে। সংবাদ শুনার পর এলাকায় চলছে শোকের মাতম।
কমলগঞ্জের কান্দিগাঁও গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন জানান, জুনেদ মিয়া স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও ৪ সন্তান নিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কুয়েতে বসবাস করছেন। সোমবার বিকালে জুনেদ মিয়া বাসার বাইরে থাকাকালীন সময়ে আকস্মিকভাবে বাসার এসির কমপ্রেসর বিষ্ফোরণ ঘটে। এতে ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে জুনেদ মিয়ার স্ত্রী রোকেয়া বেগম, ছেলে ফাহাদ ও ইমাদ মেয়ে জামিলা ও নামিলা মৃত্যুবরণ করে। খবর পেয়ে জুনেদ মিয়া বাসায় ফিরে একসাথে স্ত্রী সন্তানদের মৃতদেহ দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পরে তিনি আবার বাসায় ফিরে আসেন। মা রোকেয়া বেগম ও ৪ সন্তানের মৃতদেহ কুয়েতের মোবারক আল কবির হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে নিহতের গ্রামের বাড়ি কমলগঞ্জের কান্দিগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র বৃদ্ধা মা ছাড়া আর কেউ নেই। এ দুর্ঘটনার খবর শুনে সোমবার রাতে কমলগঞ্জে শোকের ছায়া নেমে আসে। গ্রামের লোকজন বাড়িতে এসে সমবেদনা জানাচ্ছেন। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন। মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন আরও জানান, জুনেদ মিয়ার অপর দুই ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই জুবের মিয়া সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য ভাই সপরিবারে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসবাস করছেন। কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান এ দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রামের বাড়িতে জুনেদের বৃদ্ধা মা ছাড়াও আত্মীয় স্বজন রয়েছেন। এখন তার মা ছাড়াও স্বজনদের মাঝে শোকের মাতম চলছে। তাদের কান্নায় সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার সংবাদ শুনে সোমবার সকালে কান্দিগাঁও গ্রামে শোকার্ত জুনেদ মিয়া বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানান।