কেনা হচ্ছে ৩৫০ কোটি টাকায় এক লাখ টন চাল
দীন ইসলাম –
তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে চাল ও গমের মজুত। ২৫শে মে’র খাদ্যশস্য পরিস্থিতি প্রতিবেদন অনুযায়ী চালের মজুত দুই লাখ ২৪ হাজার টন ও গমের মজুত দুই লাখ ৭৫ হাজার টন। সব মিলিয়ে চার লাখ ৯৯ হাজার টন খাদ্যশস্য সরকারি গুদামে মজুত রয়েছে। এমন অবস্থার মধ্যেই ৫০ হাজার টন নন- বাসমতি আতপ ও ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি ৩৫.৫১ টাকায় সিদ্ধ চাল ও ৩৩.৭৩ টাকায় আতপ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল কিনতে লাগছে ১৭৭ কোটি ৫৫ লাখ ৭৭ হাজার পাঁচশ’ টাকা এবং ৫০ হাজার টন আতপ চাল কিনতে লাগছে ১৬৮ কোটি ৬৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এক লাখ টন চাল কিনতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা লাগছে। এ ব্যাপারে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুল হাসান মানবজমিনকে বলেন, আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে এক লাখ টন চাল কেনা হচ্ছে। চাল কেনার দরপত্র প্রস্তাব সুপারিশ আকারে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তরের কাছ থেকে এক লাখ টন চাল কেনার প্রস্তাব পেয়েছে তারা। গত ৩০শে মে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য দুইটি আলাদা সার সংক্ষেপ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সারসংক্ষেপে ৫০ হাজার টন আতপ ও ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল কেনায় অনুমোদন চেয়ে বলা হয়েছে, খাদ্যমন্ত্রী সারসংক্ষেপটি দেখেছেন, অনুমোদন করেছেন এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনে সম্মতি দিয়েছেন। খাদ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ই মে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল কিনতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কোটেশন বিজ্ঞপ্তি দুইটি বাংলা ও দুইটি ইংরেজি পত্রিকায় প্রকাশ ছাড়াও সিপিটিইউ, খাদ্য অধিদপ্তর ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন চাল রপ্তানিকারক দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে ই- মেইল ও ফ্যাক্সের মাধ্যমে কোটেশন বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ১৭টি সিডিউল বিক্রি হয়। এর বিপরীতে মেসার্স শুকভির এগ্রো এনার্জি লিমিটেড, মেসার্স ওলাম ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মেসার্স বাগাডিয়া, ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড, মেসার্স আমির চাঁদ জগদীশ কুমার (এক্সপোর্টার্স) লিমিটেড ও মেসার্স এগ্রো ক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড তাদের সিডিউল জমা দেয়। ২১শে মে অনুষ্ঠিত দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির বৈঠকে পাঁচটি কোম্পানির প্রস্তাবই গ্রহণযোগ্য ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে মেসার্স শুকভির এগ্রো এনার্জি লিমিটেড প্রতি টন সিদ্ধ চাল ৪২৭ দশমিক ৮৫ ডলার প্রস্তাব করে। মূল্যায়ন কমিটি বাজার দর যাচাই কমিটির দাখিল করা ভারত, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ডের উৎস দর থেকে প্রতি টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চালের দাম নিচে থাকায় তা গ্রহণ করার সুপারিশ করে। খাদ্য অধিদপ্তর তাদের প্রস্তাবে বলেছে, মেসার্স শুকভির এগ্রো এনার্জি লিমিটেড-এর কাছ থেকে প্রতি টন ৪২৭ দশমিক ৮৫ ডলার দরে ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল কেনার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে। তাই খাদ্য অধিদপ্তরের সুপারিশ আমলে নিলে প্রতি কেজি সিদ্ধ চালের দাম পড়বে ৩৫ দশমিক ৫১ টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫০ হাজার টন সিদ্ধ চাল কেনার প্রস্তাব ছাড়াও গত ১৪ই মে আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন আতপ চাল কিনতে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কোটেশন বিজ্ঞপ্তি দুইটি বাংলা ও দুইটি ইংরেজি পত্রিকায় প্রকাশ ছাড়াও সিপিটিইউ, খাদ্য অধিদপ্তর ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন চাল রপ্তানিকারক দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে ই- মেইল ও ফ্যাক্সের মাধ্যমে কোটেশন বিজ্ঞপ্তি পাঠানো ও প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ১৩টি সিডিউল বিক্রি হয়। এর বিপরীতে মেসার্স এগ্রো ক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড, মেসার্স লুইস ড্রাইফিউস কোম্পানি এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, মেসার্স ওলাম ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মেসার্স ফিনিক্স গ্লোবাল ডিএমসিসি এবং মেসার্স দেশ ট্রেডিং করপোরেশন তাদের সিডিউল জমা দেয়। ২৩শে মে অনুষ্ঠিত দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির বৈঠকে পাঁচটি কোম্পানির প্রস্তাবই গ্রহণযোগ্য ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে মেসার্স এগ্রো ক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি টন আতপ চাল ৪০৬ দশমিক ৪৮ ডলার প্রস্তাব করে। মূল্যায়ন কমিটি বাজার দর যাচাই কমিটির দাখিল করা ভারত, পাকিস্তান ও থাইল্যান্ডের উৎস দর থেকে প্রতি টন নন-বাসমতি আতপ চালের দাম নিচে থাকায় তা গ্রহণ করার সুপারিশ করে। খাদ্য অধিদপ্তর তাদের প্রস্তাবে বলেছে, মেসার্স এগ্রো ক্রপ ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট লিমিটেড এর কাছ থেকে প্রতি টন ৪০৬ দশমিক ৪৮ ডলার দরে ৫০ হাজার টন আতপ চাল কেনার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারে। তাই খাদ্য অধিদপ্তরের সুপারিশ আমলে নিলে প্রতি কেজি আতপ চালের দাম পড়বে ৩৩ দশমিক ৭১ টাকা। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রস্তাব দুটির অনুমোদন মিললে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটির সঙ্গে চুক্তি করবে খাদ্য অধিদপ্তর। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শেষ করার আশা করছে তারা।