আশিন আমরিয়া এর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে–

-সত্য বলা অপরাধ ! শুধু অপরাধ নয়, গুরুতর অন্যায় ও বটে। কোন সাহসে, কোন যুক্তিতে এমন গুরুতর অন্যায় করতে গেলাম, তা ও সরকারী অফিসে। গতকাল, জীবনের প্রথম নিজ্ থানা অফিস দক্ষিন সুনামগঞ্জ একটি জিডি করতে গিয়ে ছিলাম। ফিরে এলাম জিডি না করেই। সত্য বলার গ্লানি কাঁধে বয়ে ফিরে আসতে হল। খুব ভারি লাগছিল, চলতে ও কষ্ট পাচ্ছিলাম। এত জটিল ! কঠিন বিষয় ! এ গ্রহে আর ঘটেনি। যা, জিডির সিষ্টেমেই পড়ে না। দীর্ঘদিন ইসলামী ব্যাংকের সাথে লেনদেন করেছি, পচিশটি চেক বই থেকে বিভিন্ন মেয়াদে আটারটি ইনভেলিড পাতা ছিড়ে ফেলেছি। একান্টটি সচল রাখতে চেক বই চাইলে, ব্যাংক আমাকে আটারটি অব্যবহৃত পাতা থাকতে অন্য কোন চেক বই ইসু করবে না। ব্যাংককে ও বললাম, আমি তা ডেস্ট্রয় করে দিয়েছি, তারা ফরামরশ দিলেন জিডি করে তার স্লিপ দিলেই চেক বই দিয়ে দিবেন, আসলে আমাকে তারা তাড়ালেন।

ব্যাংক কর্মকর্তাদের আচরনে মনে হচ্ছিল, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড সম্ভবত এখন রাষ্ট্রয়াত্ব ব্যাংক হয়ে গেছে তাই, এখন সব কিছুতেই শুধু প্রবলেম আর প্রবলেম। আগে যে কোন সমস্যায় তাদের কাছে গেলে সব কিছুতেই বুঝা যেত নো প্রবলেম। ব্যাংক, থানার কথা বার্তার একই সুর। চেক বই দেওয়া যাবে না, এ দিকে জিডি ও করা যাবে না। ব্যাংক, থানা, তারা আমার সমস্যার কোন সমাধান না দিয়ে, দু পক্ষই আমাকে লটকিয়ে হাইকোর্ট দেখালেন। এক অফিসার বলেই বসলেন, ব্লাইন্ড চেক দিয়ে ডিজ্অনার মামলা থেকে বাঁচার জন্য জিডি করতে এসেছেন। কি বিস্ময়কর ! আমি এত হাংকিপাংকি করতে পারি নিজে ও জানতাম না !
অবশেষে আমার করণিয় আমি বুঝে গেলাম। যে ব্যাংকের একাউন্ট হোল্ডারকে ইসলামিক চরমপন্থি বলে সন্দেহ করা হয়, যে ব্যাংক একাউন্টের লেনদেনের কোন মর্য়াদা নেই, তা মাথা থেকে ডিলিট করে দেওয়াই উত্তম। আর জিডি, সে হত ? তবে তা, বাগান জ্বালিয়ে আলুপুড়া খাওয়ার মত। জিডির সম্ভাব্য সকল পথই যখন রুদ্ধ, থানার ডিউটি অফিসারের কাছে এ জিডির কোন সুরাহা না থাকায় অফিসার ইনচার্জের কাছে বিষয়টি নিয়ে যাওয়া হল। তিনি আমার সাথে আঙ্গুলের ভাষায় দুটি কথাই বলেছেন, বসার জন্য, বেরিয়ে যাওয়ার জন্য। হুমড়া চুমড়াদের কেউ নয়, তাই অফিসার ইনচার্জের আঙ্গুলের ভাষা আমাকে বাধ্যতামূলোক বুঝতে হয়েছে।
কোন শালা যে বলেছিল সরকারী কর্মকর্তারা রাষ্ট্রের কর্মচারী। আর রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। আসলে সরকারী কর্মকর্তারা হচ্ছে দেশের মালিক, আমরা জনগণ হচ্ছি তাদের গোলাম। রাষ্ট্রের মালিক সরকারী কর্মকর্তাদের গোলামির বাস্তবতাকে জনগণ মেনে নিলেই হয়। অহেতুক রাষ্ট্রের মালিকানার দম্ভ ভেথরে লালন করে দিদি,ভাই, এমন কিছু বলতে গেলে ঘাড়ে লাথি পড়বে। অবশ্য মালিকরা গোলামদের লাথি গুতু মারতেই পারে, তারা রাষ্ট্রসহ জনগণের মালিক। কিন্তু, বড় সমস্যা হল, লাথি গুতু মারার পর কলমের গুতুতে বলবে, সরকারী কর্মকর্তাকে ভাই দিদি বলে অবজ্ঞা করায় তা দন্ডনীয় অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হইল। অত:পর পিটাই সহ জেল জরিমানা করে রাষ্ট্রের গোলামদের শাস্তি প্রধান নিশ্চিত করা হউক।

২০/০৫/২০১৯

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn