কোম্পানীগঞ্জে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের ওপর হামলা
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল নয়টার দিকে মিজানুর রহমান তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বসুরহাট বাজার হয়ে ফেনীর দাগনভূঞার দিকে যাচ্ছিলেন। ইসলামী ব্যাংকের সামনে পৌঁছামাত্র একদল সন্ত্রাসী তাঁর গাড়ির গতি রোধ করে। এ সময় মিজানুর রহমান পাশের একটি দোকানে ঢুকে যান। সেখানে গিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। হামলাকারীরা এ সময় মিজানুরের ব্যবহৃত গাড়ি এবং তাঁর সঙ্গে থাকা উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা হাসিবুল হোসেনকেও কুপিয়ে আহত করেছে।
বাদলের সমর্থকদের অভিযোগ, সকালে মেয়র কাদের মির্জা তার ৩০-৩৫ জন অনুসারী নিয়ে বসুরহাট বাজারে মহড়া দিচ্ছিলেন। নিজের ব্যক্তিগত গাড়ি বাদল ও সাবেক ছাত্রনেতা হাসিব আহসান আলাল ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। তাদের গাড়িটি বসুরহাট ইসলামী ব্যাংকের সামনে দাঁড়ালে কাদের মির্জার নির্দেশে তার অনুসারীরা বাদল ও আলালের ওপর হামলা চালায়। এ সময় বাদলের শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম ও কানের একটি অংশ ছিড়ে যায়। পরে একজন অটোরিকশাচালক তাকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় ও পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাদলকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার পেশকারহাট রাস্তার মাথা, চরএলাহী ও চরফকিরা এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন বাদলের সমর্থকরা।
সেতুমন্ত্রীর ভাগিনা ও কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহাবুবুর রশিদ মঞ্জু দাবি করেছেন, ‘বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্ব এই হামলার ঘটনা ঘটে। তার অনুসারীরা প্রথমে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়ি ভাঙচুর করে এরপর হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালায়। আলালকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এই হামলার দায় সেতুমন্ত্রী এড়াতে পাড়েন না। তিনি তার ভাইকে লেলিয়ে দিয়েছেন।’
হামলার পর থেকেই মিজানুর রহমান বাদলের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। হামলার অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে কাদের মির্জা ও তার ব্যক্তিগত সহকারীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। পরে তাঁর ঘনিষ্ঠ অনুসারী স্বপন মাহমুদ বলেন, দুদিন আগে বসুরহাটে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাদের মির্জার অনুসারী পৌর যুবলীগের দুই নেতা মিজানুর রহমানের অনুসারীদের হামলায় আহত হন। ওই ঘটনার জের ধরে তাঁদের পরিবারের লোকজন আজ সকালে মিজানুর রহমানের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে তাঁরা শুনেছেন। ঘটনার সময় মেয়র আবদুল কাদের মির্জা পৌরসভা ভবনে ছিলেন। পরে লোকমুখে ঘটনাটি তিনি জেনেছেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কোম্পানিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় মিজানুর রহমান বাদল ও সরকারি মুজিব কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আমির আহসান আলাল আহত হয়েছেন। হামলার তথ্য পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ বাদল ও আলালকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘মিজানুর রহমান বাদল আজ সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। কোম্পানিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে একদল যুবক তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা আরও দুই জন আহত হয়েছেন। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবরোধ করার চেষ্টা করেছিলেন, পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।’